প্রকৃতি আজ বেজায় সভ্য-শান্ত। রোদের তেজ নেই। আকাশে আবছা মেঘ তবে কোনো ঘনঘটা নেই। মাহে রমজানের পুতপবিত্র দিনে প্রকৃতির মন মেজাজ সাধারণত ভাবগম্ভীর থাকে।
সকাল দশটায় জাকাতের কাপড় বিলানোর কথা। তাই মামুন সাহেবের গেটের বাইরে গরীব দুঃখীদের ভিড় জমেছে। রোজামুখে গরীব মানুষগুলো সেই সকাল থেকে অপেক্ষা করে আছে। বেলা তিনটা বাজে। কিছুক্ষণ পরপরই লাইন থেকে উঠে একেকজন দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করে- অ ভাই, আর কতক্ষণ ? দারোয়ান বিরক্ত হয়ে বলে- আরে কইলাম না, সাহেব অহনো ফিরে নাই। সাহেব আইলে হ্যায় নিজে হাতেই তোমাগোরে কাপড় দিব। চুপ কইরা দাঁড়াও তো বাপু।
জহুরা বেগম এতক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েছিল। বৃদ্ধ অসুস্থ মানুষ আর দাঁড়িয়ে থাকতে না-পেরে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। জরিনা অসুস্থ শাশুড়িকে চোখেমুখে পানি দিয়ে কোনোরকমে ভালো করে। সে শাশুড়িকে মিনতি করে বলে- মা আর ইট্টু কষ্ট করেন। দুইজন দুইডা কাপড় পাইলেই আমরা চইলা যামু। এইহানে দুইডা কাপড় যদি পাই মাতবর বাড়ি থিকা আর দুইডা কাপড় পাইলে আমাগো বছর চইলা যাইব।
বৃদ্ধ শাশুড়ি কাঁপা কাঁপা গলায় বলে- বুইরা মানুষটা একলা রইছে। আর রমজান মাস আমাগো নামাজও কামাই অইল। ওপারে গিয়া কী জবাব দিমু। রান্দাবাড়া কিছুই তো আইজ অইল না। কোন বেলা যামু আর কোন বেলা রানবা।
বিকেল চারটায় মামুন সাহেবের গাড়ি গেটের কাছে এসে ভিড়ল। মানুষগুলো আশা করে অধীর হয়ে আরো এক ঘণ্টা বসে রইল। সন্ধ্যার পূর্বমুহূর্তে দারোয়ান এসে জানালো- আইজ আর সময় নাই। তোমরা কাইল আইসো। কাইল কাপড় পাইবা।
জরিনা চোখের জল মুছে বৃদ্ধ শাশুড়িকে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলো। যেতে যেতে জরিনা ভাবে- বাবা বুইড়া মানুষ শরীলডা কত্ত খারাপ। না খাইয়া পইরা রইছে। গোরুডা সারাডা দিন কিছু খায় নাই। মানুষটা দিনভর ক্ষেতে-খামারে কাজ করতাছে তারে অহন কী খাইবার দিমু। আইজ আমার কপালে কী আছে তা খোদাই জানে। ভাবতে ভাবতে জরিনা বাড়িতে ফেরে। তারপর ঘরে যায় শ্বশুরের খবর নিতে। বৃদ্ধ লোকটির গায়ে হাত দিতেই একটা অদ্ভুত রকমের ঠান্ডা অনুভব করল জরিনা। সে চিৎকার করে বলল- তোমরা কে কোন্হানে আছ ? একবার এইহানে আইয়া দেইখা যাও। বাবায় কথা কয় না।
রোজার মাস। মাগরিবের আজান হচ্ছে তাই সবাই যে-যার ঘরে ইফতার করছে। এমন সময়ই রহিম বাড়িতে এলো। আর এসেই জরিনার চিৎকার শুনে ছুটে এলো ঘরে। এসে দেখে তার বাবার অসাড় দেহ পড়ে আছে। জহুরা বেগম স্বামীর পায়ের কাছে অজ্ঞান হয়ে পড়ে রইল। সেও তো বৃদ্ধ, অসুস্থ। অভাবের সংসারে তাদের কপালে কষ্ট ছাড়া আর কি-ই বা জোটে। তিনবেলা পেট ভরে খাবারও জোটে না।
রহিম বাবা বলে চিৎকার করে উঠল। জরিনা বলল- ওগো বেবাগ দোষ আমার। আমারে তোমরা শাস্তি দাও। বাবারে একলা থুইয়া আমি মাইরে লইয়া জাকাতের কাপড় আনতে গেছিলাম। কাপড়ও পাই নাই। আইয়া দেখলাম বাবায় আর নাই।
রহিম জরিনার দিকে তাকিয়ে বলল- চুপ কর। তুই আমার চোখের সামনে থিকা সইরা যা। তোর মুখ দেখতে চাই না। কথাগুলো বলেই সে জরিনাকে সজোরে ধাক্কা মারল। জরিনা খানিকটা দূরে গিয়ে হাড়ি পাতিলের মধ্যে পড়ল। শরীরের কয়েকটা জায়গা কেটে গেল। কপালের কোণ বেয়ে রক্ত ঝরল। ঠোঁটের পাশে, হাতের দু-এক জায়গায়ও কেটে রক্তে জর্জরিত হলো।
রাত দশটায় জমির আলির দাফন হলো। জহুরা বেগমের জ্ঞান ফিরলেও সে এত অসুস্থ হয়ে পড়ল নড়াচড়া পর্যন্ত করতে পারছে না। কোনো কথাও বলছে না। স্বামীর মৃত্যুতে সে শব্দ করে কাঁদেনি। শুধু নীরবে চোখের পানি ফেলেছে।
জমির আলির দাফন হয়ে গেলে রহিম অনেকটা সময় বাবার কবরের কাছে বসে থাকে। তারপর ঘরে ফিরলে জরিনা বলে- আইজ রান্দাবাড়া কিছু অয় নাই। পিঁয়াজ মরিচ দিয়া মুড়ি মাইখা দেই কয়ডা খাইয়া লও। খালি পানি খাইয়া ইফতার করছ।
রহিম শান্ত কণ্ঠে বলে- অহন আমি কিছু খাইবার পারমু না। তুই বেশি কইরা খা। আর আমার চোখের সামনে থিকা সইরা যা। এই ঘরে তোর জায়গা নাই। ঘর থিকা বাইর অইয়া যা কইতাছি। আমার মন মেজাজ ভালা নাই।
জরিনা সভয়ে বলে- ঠিক আছে, আমি বাইরে যাইতাছি। তয় কৌটাডা রাইখা গেলাম। ভিতরে দুইখান মোয়া আছে খায়ো।
শাশুড়িকে কী খাওয়াবে কী করবে ভেবে পায় না জরিনা। ঘরে আছে শুধু মুড়ি। আর তো কিছুই নেই। মুড়ি ধুয়ে পানি দিয়ে ভিজিয়ে নরম করে শাশুড়ির মুখে তুলে দেয় জরিনা। জহুরা বেগম কোনো কথা না বলে মুড়িগুলো মুখ থেকে ফেলে দেয়। জরিনা মনে মনে বলে- এই মুড়ি মায় খাইবোই কেমনে। ইট্টু গুড় চিনি কিছু থাকলে তাও মুখে দিবার পারত। আমার কপালেরই বেবাক দোষ। সারাডা বছর মানুষের বাড়িতে কোনো-না-কোনো কাম আমি করিই। যা ট্যাকা-পয়সা পাই সংসারেই ভাঙি। নিজে একখান কাপড় লইবার ট্যাকাও হাতে রাখি না। এইবার মার কাপড় দুইখান বেজায় ছিঁড়ে গেছে। আর আমার দুইখানও। তাই আশা কইরা গেছিলাম। বড়ো অন্যায় অইছে।
জরিনা উঠানে বসে নানা দুঃখে বিলাপ করে কাঁদতে শুরু করল। তার কান্নার শব্দ শুনে আশেপাশের বাড়ির কয়েকজন এসে দাঁড়াল। কেউ বলল- অহন আর কাইন্দা দরদ দেখাইয়া কোনো লাভ নাই। অমন মানুষরে কেউ ঘরে একলা থুইয়া সারাডা দিন বাইরে থাকে ? এমন অমানুষ আর কয়ডা অয়।
কেউ বলল- থাক বাছা আর দরদ দেখাইয়া কী অইব তোমার তো ভালোই অইছে। আর একজন আছে হ্যয় মরলে আরো ভালো অয়।
জরিনা কেঁদে কেঁদে বলে- তোমরা আমারে যা মুনে লয় কইয়া যাও। তয় আমার একখান কথা শুন। মায়রে কিছু খাওয়াইবার পারি নাই তোমাগো ঘরে যদি এক মুঠ ভাত থাকে দিলে চেষ্টা কইরা দেখতাম মায় খায় কি না। মুড়ি ভিজাইয়া দিলাম খাইবার পারে নাই। তার অবস্থা ভালা না।
একজন বয়স্ক মহিলা একটি পাত্র হাতে জরিনার সামনে এসে দাঁড়ায়। তার হাত ধরে টেনে তুলে বলে- উঠো মা, আর কাইন্দো না। ভাগ্যে যা আছিল তাই অইছে। মরা বাড়িতে তিনদিন চুলা জ্বালাইতে অয় না। মুরুব্বিরা কইত জ্বালাইলে সংসারের অমঙ্গল অয়। তোমাগো জন্যে কয়ডা ভাত তরকারি আনছি। নেও মা, তিনজন তিন মুঠ মুখে দেও।
জরিনা ব্যকুল কণ্ঠে বলে- চাচি, আমাগো ঘরে একবার আইবা ? আমার শাওড়ি মায়েরে একবার দেইখা যাও। আমার বড়ো ডর লাগতাছে তার অবস্থা ভালা না। পাশের বাড়ির সবাই জরিনার শাশুড়িকে দেখে চলে গেল। জরিনা ভাত ডাল চটকে নরম করে শাশুড়িকে খাওয়ানোর খুব চেষ্টা করল। জহুরা বেগম দুবার মুখে দিল আর খেতে পারল না। জরিনা শাশুড়িকে পানি খাইয়ে মুখ ধুইয়ে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করে। স্বামী হারানোর কষ্টে ভারাক্রান্ত অসুস্থ জহুরা বেগম চোখ বন্ধ করে।
জরিনা ভাত মেখে স্বামীর কাছে যায়। চোখের জলে মিনতি করে সে স্বামীর কাছে ক্ষমা চায়। বলে- দয়া কইরা এক মুঠ ভাত খাও। খাওয়ার পর না অয় আমারে বেশি কইরা মাইরো। তবুও একমুঠ ভাত মুখে দেও।
রহিমের চোখেও পানি। মুখের সামনে জরিনা ভাত তুলে ধরে রাখে আর বারবার খেতে বলে। এবার রহিম জরিনাকে আর অগ্রাজ্য করতে পারে না। জরিনার হাতে রহিম একমুঠো ভাত খেয়ে নেয়। জরিনা খুশি হয়। এত কষ্টের মধ্যেও জরিনার মনে কে যেন আনন্দের ছোঁয়া দিয়ে যায়।
রহিম বলে- ভাত কি এই কয়ডাই ?
জরিনা বলে- হ্যাঁ, তয় আমি খাইছি এই কইডা তুমি খাইয়া লও।
দেখ, মিসা কতা কইবি না। তুই কিছুই খাস নাই। আমি তোরে চিনি না ? আমি তো খাইলাম। বাকিটুক তুই খা। তুই তো কস মিছা কতা কইলে পাপ অয়। পাঁচবার নামাজ পড়স। আইজ তোর কী অইছে। নামাজও কামাই করলি আবার মিছা কতাও কইতাছস।
আমার ক্ষুদা নাই। তুমি যে খাইতাছ ওতেই আমার প্যাট ভরছে।
হ বুঝছি। অত কতার কাম নাই। অহন ভাত কয়ডা মুখে দে।
আমি তোমারে একখান কতা কইবার চাই।
কী কইবার চাস, কস না-
মার অবস্থা ভালা না। তুমি মার ঘরে একবার আইয়া দেখ।
কেন কি অইছে মায়ের।
কাইল সক্কাল সক্কাল ডাক্তার ডাকতে অইবো।
আইচ্ছা ঠিক আছে, তুই মার কাছে যা।
পরের দিন জরিনা আবার স্বামীকে অনুরোধ করে শাশুড়ির জন্য ডাক্তার আনতে। কিন্তু রহিমের কাছে কোনো টাকা-পয়সা নেই। আর এই সময় কারো কাছে ধারও পাওয়া যাবে না। তাই রহিম যেতে চায় না। সে বলে- জরিনারে, মায়-বাপে একখান কুলাঙ্গার জন্ম দিছিল। তাই তো হ্যয় মায়-বাপেরে কোনো চিকিৎসাই করাইতে পারে না। আমার ফাঁসি লইয়া মরা দরকার। আমার বাঁইচা থাকার কোনো অধিকার নাই। কোনোদিন মায়-বাপেরে পরনের একখান ভালা জামা দিবার পারি নাই। বড়ো মাছ দিয়া কোনোদিন ভাত খাওয়াইতে পারি নাই। আমার এই দুঃখ থুইবার জায়গা নাইরে জরিনা।
স্বামীর কথা শুনে জরিনার মন আরো ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। সে শাড়ির আঁচল দিয়ে স্বামীর চোখ মুছে দেয়। নিজের গলা থেকে একটি রুপোর চেইন খুলে স্বামীর হাতে দিয়ে বলে- এই লও এই মালাডাই আছিল আমার বাবার শেষ চিহ্ন। বাবা তো কবেই মইরা গেছে চিহ্ন দিয়া আর কি করমু। তুমি এইডা বেইচা দেও। যা পাও তা দিয়াই মার জন্য ডাক্তার আনো। ওষুধ পথ্য আনো। এই মানুষটা মইরা গেলে আমাগো যে আর কেউ থাকবো না। আর কোনোদিন ফাঁসি দিয়া মরনের কতা কইবা না। আল্লাহ বেজার অয়। মরণ একদিন অইবই তয় আল্লার ইচ্ছায় অইব আমাগো ইচ্ছায় না।
রুপার চেইনটা নিয়ে গঞ্জে যায় রহিম। বিক্রি করে কিছু টাকা পায়। সে পল্লিচিকিৎসক জয়নাল মিয়াকে ডেকে আনে। ডাক্তার এসে জহুরা বেগমকে দেখে বলেন- চাচির অবস্থা তো ভালো না। ওষুধ লেইখা দিলাম এই গুলান আইনা খাওয়াও আর কিছু পথ্যেরও ব্যবস্থা করো। বেশি কইরা যোগাল যত্ন করো। ভালা অইয়া যাইব।
রহিম কিছু ঔষধ আর কিছু ফল কিনে আনে। জরিনা সাধ্যমতো শাশুড়ির সেবা যত্ন করে। তাকে সুস্থ করে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। জহুরা বেগমের অবস্থার একটু উন্নতি হয়। সপ্তাহখানিক পরে এক সকালে জহুরা বেগম খুব অস্থির হয়ে পড়ে এবং সাথে সাথে এই দুনিয়া থেকে চিরদিনের জন্য বিদায় নেয়।
শ্বশুর শাশুড়ির পরপর মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হলো জরিনাকেই। গ্রামের অশিক্ষিত মানুষগুলো সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিল এই বউকে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দিতে হবে। গ্রামে এই রকম অলক্ষী বউ থাকলে সারাগ্রামেরই অমঙ্গল হবে। নিজের অনিচ্ছা সত্তে¡ও রহিম জরিনাকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলে। জরিনা নিজের কথা না ভেবে গ্রামের মুরব্বিদের হাতে পায়ে ধরে অনুরোধ করে বলে- মানুষটার মা-বাবা মইরা গেল, আমিও যদি চইলা যাই তারে দেখব কে ? সে যে খুব অসহায় অইয়া গেছে। আমি তারে একলা ফালাইয়া যাইতে পারমু না। আমারে আপনারা মাপ কইরা দেন।
কেউ তার ব্যাকুল মিনতি শুনতেই চাইল না।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যার আয়োজনে প্রকৃতি ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। জমিলার মনের কোণে ঝড় বইছে। সে স্বামীকে একা রেখে যেতে চায় না। একটা ছোটো কাপড়ের পুটলি হাতে নিয়ে সে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। রহিম এগিয়ে এসে বলে- চারিদিকে সন্ধ্যা ঘনাইতাছে তুই চইলা যা।
জমিলা কেঁদে কেঁদে বলে- তোমারে একলা ফালাইয়া আমি কই যামু ?
আমার কতা তর ভাবতে অইব না। তুই চইলা যা।
আমার যে তুমি ছাড়া আর কেউ নাই। আমি কোতায় যামু ?
যেহানে ইচ্ছা যা। আর কতা কইস না। আমার মন মেজাজ ভালা না।
জরিনা আর কোনো কথা বলে না। নিঃশব্দে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। রহিম ভগ্ন মনে বারান্দায় বসে চোখের জলে ভাসে। তার যে আজ সব কিছুই হারিয়ে গেল।
হারিয়ে গেল জরিনারও। তবে তার চোখে আর জল নেই। আছে শুধু ভিতি আর দুশ্চিন্তা। কোথায়া যাবে ? কী খাবে ?
সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। চারিদিকে অন্ধকার নামছে ধীরে ধীরে। মা-বাবা কেউ নেই। সৎ মা আর সৎ ভায়ের কাছেই সে যাচ্ছে। যাবার মতো কোথাও যে আর জায়গা নেই।
রাত নয়টার সময় বাড়িতে গিয়ে উঠল জরিনা। বাহির থেকে বারবার দরজা ধাক্কা দিচ্ছে আর মা বলে ডাকছে সে। অনেক ডাকাডাকির পর কুলসুম বিরক্ত হয়ে দরজা খুলে দেয়। এবং বলে- আমার ঘুমখান ভাইঙা দিলি অলক্ষি কোথাকার ? তয় এত রাইতে একলা একলা আইছস ব্যাপারডা কী ?
জরিনা কেঁদে বলে- আমার শ্বশুর-শাশুড়ি মইরা গেছে, তাই গেরামের সক্কলে আমারেই দায়ী কইরা গেরাম থিকা তাড়াইয়া দিছে।
আর অমনেই এইহানে আইয়া পড়লি। আইজ ম্যালা রাইত অইছে। রাইতখান থাক, কাইল সক্কাল সক্কাল চইলা যাবি।
মাগো তোমাগো ভরা সংসার। কোনো অভাব নাই। একখান কামের মানুষেরও তো দরকার অয়। আমি সারাডা দিন কাম করুম। আমারে একবেলা কয়ডা ভাত দিও তাতেই অইব।
সৎ মা সৎ ভাইয়ের বাড়িতেই জরিনার জায়গা হলো। কুলসুমের ঘরের মেঝেতে জরিনা ঘুমাতো।
এদিকে বাড়িতে রহিমের আর একা একা ভালো লাগে না। তাই জরিনাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সে জরিনার বাবার বাড়ির দিকে রওনা দিল...