বাংলার সফল নারী

14 Mar 2023, 02:30 PM অভোগ শেয়ার:
বাংলার সফল নারী

কবি নজরুল ইসলাম কিন্তু সকল সৃষ্টির কৃতিত্বের অর্ধেক সফলতার দাবিদার যে নারী তা তার কবিতার মাধ্যমে নিঃশঙ্কচিত্তে বলে গিয়েছেন। যেকোনো সৃষ্টিতে নারীর অবদান অস্বীকার করার সুযোগ নেই। বিশ্বের অর্ধেকের চেয়ে বেশি জনসংখ্যা নারী। তাই কোনো দেশের সার্বিক উন্নয়ন নারীকে বাদ রেখে করা সম্ভব নয়। তবে আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নারীর অংশগ্রহণ পুরুষের তুলনায় কম। যদিও সেই দায় নারীর নয়। আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা নারীর জন্য অনুকূলে এখনো পুরোপুরি হতে পারেনি। তবে, নানা প্রতিকূলতা পেছনে ফেলে বাংলার নারীরা তাদের অদক্ষ ইচ্ছাশক্তি দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। পুরুষের পাশাপাশি নানা প্রতিযোগিতামূলক কাজে নারীরা তাদের জায়গা করে নিচ্ছে। হাজারো বাধাকে জয় করে বাংলার অনেক নারীই আজ সফল মুখ। দেশ ও জাতিকে তারা তুলে ধরছে অনন্য উচ্চতায় বিশ্বদরবারে। বাংলার সফল নারীদের নিয়ে আজ আমাদের এই বিশেষ আয়োজন। লিখেছেন ফাতেমা ইয়াসমিন...


‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর

অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’


বিবি রাসেল

বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে যে কয়েকজন নারী তুলে ধরেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম বিবি রাসেল। বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিকে তিনি পরিচিত করিয়েছেন পুরো বিশ্বের কাছে। তার ফ্যাশন হাউজ ‘বিবি প্রোডাকশন’-এর মাধ্যমে দেশীয় কাপড় ও পোশাক সংস্কৃতিকে তিনি নিয়ে গেছেন ভিন্ন এক মাত্রায়। তার জন্ম চট্টগ্রামে হলেও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। পড়াশোনা করেছেন কামরুন্নেসা গভ. গার্লস হাই স্কুলে এবং গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে। পরবর্তীসময়ে তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য লন্ডনে চলে যান এবং সেখানেই লন্ডন কলেজ অব ফ্যাশন থেকে ফ্যাশন ডিজাইনের ওপর উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর মডেল হিসেবে কাজ করেছেন অনেক খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। দেশে ফিরে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘বিবি প্রোডাকশনস’। তিনি তার কাজের মাধ্যমে দেশীয় সংস্কৃতিকে ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন। দেশে ও দেশের বাইরে তিনি অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তার কাজের সফলতার জন্য।


সেলিমা আহমেদ

নিটল নিলয় গ্রুপের ভাইস চেয়ারপার্সন এবং বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি পদে আছেন দেশের জনপ্রিয় ও সুপরিচিত নারী ব্যবসায়ী সেলিমা আহমেদ। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে ব্যবসায় অনন্য অবদানের জন্য তিনি অসলো বিজনেস ফর পিস পুরস্কার লাভ করেন। তিনি বিজনেস উইমেন নির্বাচিত হন ২০০০, ২০০২ ও ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে।

তিনি ইন্টারন্যাশনাল অ্যালায়েন্স ফর উইমেনের বৈশ্বিক দূত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স ইন বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের শিক্ষক। পিছিয়ে পড়া নারীদের সামনে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয়ে তিনি ডবিøউসিসিআই’র কার্যক্রম শুরু করেন। তিনি এর পাশাপাশি একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও বটে। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই সন্তান আবদুল মুসাব্বির আহমেদ নিটল এবং আবদুল মারিব আহমেদ নিলয়-এর জননী। তার স্বামী ব্যবসায়ী নেতা ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ।


কানিজ আলমাস খান

বাংলাদেশের যে কয়েকজন বিউটিশিয়ান নিজেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন কানিজ আলমাস খান। বাংলাদেশের জনপ্রিয় ও অন্যতম বিউটিশিয়ান কানিজ আলমাস প্রাথমিক শুরু করেছিলেন খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে। তার সেই ছোট্ট পার্লার থেকেই আজকে এক প্রতিষ্ঠিত পার্লার ব্র্যান্ড ‘পারসোনা’। কানিজ আলমাসের জন্ম চট্টগ্রাম শহরে হলেও তিনি বেড়ে উঠেছেন ঢাকায়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পার হন সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুল থেকে। পরবর্তীসময়ে তিনি বিউটিশিয়ান জেবিন আসগর খানের কাছ থেকে ট্রেনিং নেন। পরবর্তীপর্যায়ে তিনি কলকাতা, মুম্বাই, দিল্লি, চীন, ব্যাংকক থেকে বিউটিফিকেশনের ওপের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেন। ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে মাত্র ৫ জনকে নিয়ে তিনি শুরু করেন তার বিউটি পার্লার। প্রথম দিকে তিনি এর নাম দেন ‘গ্ল্যামার’। খুব তাড়াতাড়িই এটি বেশ পরিচিতি ও সুনাম অর্জন করে। পরবর্তীসময়ে তিনি এর নাম দেন ‘পারসোনা’। বর্তমানে প্রায় ২০০-এরও বেশি নারী তার পারসোনার বিভিন্ন আউটলেটে কাজ করছেন। 


আইভি হক রাসেল

আইভি হক রাসেল মূলত ‘মায়া আপা’ নামেই বেশি পরিচিত। তিনি সব সময়ই চিন্তা করতেন কীভাবে দেশের পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য কিছু করবেন। কারণ, দেশের নারীরা অনেকেই জীবনযাপন ব্যবস্থা উন্নতকরণ নিয়ে তেমন সচেতন নয়। সেই চিন্তা থেকেই তিনি মহিলাদের স্বাস্থ্য এবং নানারকম সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য অনলাইন-ভিত্তিক একটি ক্যাম্পেইন পরিচালনার কথা চিন্তা করেন আর সেথেকেই তিনি ব্যাংকারের চাকরি ছেড়ে প্রতিষ্ঠা করেন অনলাইন ভিত্তিক ওয়েবসাইট মায়া তিনি তার নানা উদ্ভাবনী ধারণা ও ব্যবসা কেন্দ্রিক চিন্তা ভাবনার জন্য বেশ সুপরিচিত। তিনি ফাইন্যান্স এবং অর্থনীতির ওপর স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কিন্তু তিনি পড়াশোনার জায়গা থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে এসে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া নারীদের কীভাবে সাহায্য করতে পারেন সেই ভাবনা থেকেই তিনি মায়া কার্যক্রম শুরু করেন।

নারীদের প্রয়োজনীয় নানা তথ্যগুলো যেন নারীরা খুব সহজে পেয়ে যান ওই চেষ্টাই করে যাচ্ছে মায়া প্রতিষ্ঠান। তার এই প্রতিষ্ঠান বর্তমানে দেশের মহিলাদের কাছে তাদের দরকারি সব তথ্য এবং সেবা পৌঁছে দিতে কার্যকরী অবদান রাখছে। তিনি তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে দেশে এক সুপরিচিত নাম।


মেজর জেনারেল সুসানে গীতি

বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নারী মেজর জেনারেল সুসানে গীতি। মেজর জেনারেল সুসানে গীতি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিসিএস পাস করেন ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নারী চিকিৎসক হিসেবে যোগ দেন ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে ক্যাপ্টেন পদবিতে। জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী মিশন ও বিভিন্ন সামরিক হাসপাতালে প্যাথলজি বিশেষজ্ঞের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কঠোর পরিশ্রম, কাজের প্রতি সততা ও ভালোবাসাই কর্মক্ষেত্রে সফলতার চাবিকাঠি এমনটিই মনে করেন তিনি।


ফারাহ কবির

দেশের জনপ্রিয় ও সুপরিচিত একজন উন্নয়নকর্মী ফারাহ কবির। তিনি প্রায় একযুগ ধরে আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি পেশাগত জীবন শুরু করেন ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে। তিনি বিআইআইএসএস ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের মতো প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। ব্রিটিশ কাউন্সিলের যুক্তরাজ্য কার্যালয়েও পাঁচ বছর কাজ করেছেন। বিচক্ষণতা ও নেতৃত্ব দেওয়া গুণাবলি সবসময় তার মাঝে উপস্থিত। প্রতিনিয়ত তিনি বাড়িয়েছেন তার দক্ষতা। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তরাজ্য থেকেই অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টরের চাকরি নিয়ে দেশে ফেরেন। বিশাল এক দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।


ড. সেঁজুতি সাহা

ড. সেঁজুতি সাহা একজন বাংলাদেশি অণুজীববিজ্ঞানী। আনবিক জিনতত্তে¡র এ গবেষক বাংলাদেশের শিশুস্বাস্থ্য গবেষণায় আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনে কাজ করছেন। সেঁজুতি সাহা ও সিএইচআরএফ প্রথম বাংলাদেশের রোগীদের মধ্যে পাওয়া নমুনা থেকে নতুন করোনা ভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জিনোম বিন্যাস উন্মোচন করেন। তিনি বাংলাদেশ থেকে ওলেভেল শেষ করে ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে কানাডার টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে ভর্তি হন। জৈবরসায়নে স্নাতক শেষ করে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে আণবিক জিনতত্তে¡ পিএইচডি শেষ করেন।

২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বিল গেটসের ‘বিল অ্যান্ড সেলিন্ডা গেটস অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার  গ্লোবাল পোলিও ইরেডিকেশন ইনিশিয়েটিভের বোর্ড মেম্বার নিযুক্ত হন। বলতে গেলে তিনি বিজ্ঞানী পরিবারেরই সদস্য। তার বাবা বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ অণুজীববিজ্ঞানী ড. সমীর সাহা এবং মা ড. সেতারুন্নাহার গণস্বান্থ্যবিষয়ক গবেষক।


অধিনায়ক নিগার সুলতানা

বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হিসেবে আছেন শেরপুরের কৃতি সন্তান উইকেট রক্ষক ও ব্যাটার নিগার সুলতানা জ্যোতি। জন্ম ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ১ আগস্ট। ২০১৬-’১৭ খ্রিষ্টাব্দে সিলেট বিভাগের হয়ে তিনি তার খেলোয়াড় জীবন শুরু করেন। মূলত তিনি উইকেট কিপার হলেও ঢাকা বিভাগের বিরুদ্ধে তখন ২৬ রান করেন। ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতার নিগার সুলতানা বেশ দায়িত্বের সঙ্গে তার অধিনায়ক পদটির মর্যাদা রেখে চলেছেন। বর্তমানে তিনি তার দল নিয়ে বিশ্বকাপ খেলছেন দক্ষিণ আফ্রিকায়।


নাট্যনির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী

চয়নিকা চৌধুরী বাংলাদেশের সুপরিচিত ও সফল চলচ্চিত্র পরিচালক, শিল্প নির্দেশক, নাট্যনির্মাতা। তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে যুক্ত আছেন নাট্যনির্মাণে। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে ‘বোধ’ নাটক নিয়ে স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসেবে প্রথম আত্মপ্রকাশ করেন চয়নিকা চৌধুরী। ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে ‘শেষ বেলায়’ নাটকের মধ্য দিয়ে নির্মাতা হিসেবে নাম লেখেন। তার নির্মিত ৪০০টির বেশি নাটক বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম নারী হিসেবে তিনি সবচেয়ে বেশি নাটক ও ধারাবাহিক নির্মাণ করেছেন।


ওয়াসফিয়া নাজরীন

ওয়াসফিয়া একজন সুপরিচিত বাংলাদেশি পর্বতারোহী। তিনি এখনো সর্বকনিষ্ঠ বাংলাদেশি ও দ্বিতীয় নারী হিসেবে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম পর্বতারোহী হিসেবে সাত মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ জয় করেছেন। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২২ জুলাই তিনি বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কে২-এর চূড়ায় আরোহণ করেন। ওয়াসফিয়ার জন্ম ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকায়। তিনি ঢাকার স্কলাসটিকা স্কুল থেকে এবং এ-লেভেল শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টায় এগনেস স্কট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। এরপর তিনি স্কটল্যান্ডেও কিছুদিন পড়াশোনা করেন। তিনি বেশ কিছুদিন উন্নয়নকর্মী হিসেবেও কাজ করেছেন। আন্তর্জাতিক মানবতাবাদী গ্রুপ কেয়ার-এর হয়ে তিনি কাজ করছেন। পর্বত অভিযান চালানোর পাশাপাশি তিনি ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে চীন সরকার কর্তৃক মানবাধিকার বিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কাজের প্রতিবাদে তিব্বতে কাজ করেন। সেভেন সামিটের পর থেকে নাজরীন নিজের ‘উসেল’ ফাউন্ডেশনের জন্য কাজ করছেন। তিনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফির বর্ষসেরা অভিনেত্রীর খেতাব পেয়েছেন। 


জয়া আহসান

এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী, মডেল। তিনি ক্যারিয়ার হিসেবে মডেলিং দিয়ে শুরু করেন। এরপর টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করেন। বাংলাদেশের পাশাপাশি বর্তমানে তিনি ভারতীয় বাংলা সিনেমায় কাজ করছেন। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গেও জয়া আহসানের অনেক ভক্ত তৈরি হয়েছে। জয়া আহসান ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবা এ এন মাসউদ একজন বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন এবং মা রেহানা মাসউদ একজন গৃহিণী ছিলেন। জয়া আহসান পড়াশোনার পাশাপাশি রবীন্দ্রসংগীতের ওপর ডিপ্লোমা কোর্স শেষে মডেলিং শুরু করেন। পড়াশোনা শেষ করে তিনি দৈনিক ভোরের কাগজে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীসময়ে তিনি আবারো মডেলিং-এ ফিরে আসেন। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কোকা কোলার টিভি বিজ্ঞাপন দিয়ে টেলিভিশনে আত্মপ্রকাশ করেন। ‘পঞ্চমী’ নাটকের মাধ্যমে তিনি টিভি নাটকে অভিনয় শুরু করেন। লাবণ্য প্রবাহ, শঙ্খবাস, হাঁটকুরা, চৈতা পাগল, তারপরও আঙ্গুরবালা, নন্দকে ভালোবাসে’র মতো জনপ্রিয় নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন।

২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে ‘ব্যাচেলর’ চলচ্চিত্রে তিনি অতিথি শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছেন। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে নুরুল আতিকের ‘ডুবসাঁতার’ চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। পরবর্তীসময়ে ২০১১-তে ‘গেরিলা’ সিনেমায় অনবদ্য অভিনয় করে বেশ প্রশংসিত হন। এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সৃজিত মুখার্জির ‘রাজকাহিনী’তে অভিনয় করেন। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে অভিনয় করেন কৌশিক গাঙ্গুলির ‘বিসর্জন’ সিনেমায়। চলচ্চিত্র ছাড়াও তিনি বিভিন্ন ওয়েব সিরিজেও নিয়মিত কাজ করছেন।