ডায়াবেটিস রোগীদের ত্বকের যত্নে ও সমস্যা -ডা. তাওহীদা রহমান ইরিন

12 Jan 2023, 01:11 PM ত্বকের যত্ন শেয়ার:
ডায়াবেটিস রোগীদের ত্বকের    যত্নে ও সমস্যা  -ডা. তাওহীদা রহমান ইরিন

 আমার রুমে একজন ষাট বছরের মহিলা প্রবেশ করলেন হাসিমুখে। সালাম জানানোর পরে বললেন যে, ‘মা আমি তোমাকে ধন্যবাদ জানাতে এসেছি। কেননাতুমি না বললে হয়ত আমি ডায়াবেটিস টেস্ট করাতাম না। তাতে এই জটিল অজানা রোগটি আমার শরীরে বাসা বেঁধে থাকত।’ এরপর তার রিপোর্ট দেখে জানলাম আসলেই তার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অনেক বেশি এবং অন্যান্য রিপোর্ট দেখে বোঝা গেল বেশ কিছুদিন ধরেই তার ডায়াবেটিস আছে। এটি শুধু একটি উদাহরণ মাত্র। আমার ডেইলি প্র্যাকটিসে এরকম বহু রোগী আছেনযারা আসেন ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা নিয়ে কিন্তু পরে তাদের হিস্ট্রি নিয়ে এবং এনালাইসিস করে দেখা যায় যে তাদের শরীরে আছে ডায়াবেটিস নামক রোগটি। 

এখন পাঠকদের ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানাবো। আমরা মোটামুটি সবাই জানি গ্লুকোজ আমাদের শরীরের কর্মশক্তির উৎস। শরীরের কোষগুলো গ্লুকোজ ব্যবহারের মাধ্যমে এনার্জি তৈরি করে আর কোষকে গ্লুকোজ ব্যবহারে সাহায্য করে ইনসুলিন নামক একধরনের ন্যাচারাল হরমোন। এই ন্যাচারাল হরমোন তৈরি হয় প্যানক্রিয়াস নামক একধরনের অর্গান থেকে। প্যানক্রিয়াস যদি ইনসুলিন তৈরিতে ব্যর্থ হয় অথবা প্রয়োজনের তুলনায় কম ইনসুলিন তৈরি করে অথবা প্যানক্রিয়াস নির্দিষ্ট পরিমাণ ইনসুলিন তৈরি করল কিন্তু কোষ ইনসুলিনকে ব্যবহার করতে পারছে না গ্লুকোজ থেকে এনার্জি তৈরিতেতখন আমাদের শরীরে অস্বাভাবিকভাবে গ্লুকোজ জমা হতে থাকে এবং দেখা দেয় ডায়াবেটিস নামক জটিল রোগ। 

 

ডায়াবেটিস  ত্বকের সম্পর্ক 

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে ধীরে ধীরে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোকে আক্রমণ করতে থাকে। ত্বকও এর ব্যতিক্রম নয়। ডায়াবেটিস রোগীদের ত্বকের রোগ খুব বেশি দেখা দেয়। এর পরিমাণ এত বেশি যেপ্রতি তিনজন ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে একজন ত্বকের সমস্যায় ভোগেন। আমি আমার ডেইলি প্র্যাকটিসে ১৫ বছরের পেশেন্টও যেমন পেয়েছি তেমনি মধ্যবয়স্কদের মাঝেও ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। 

 

ড্রাই স্কিন বা শুষ্ক ত্বক 

ডায়াবেটিস রোগীদের শুষ্ক ত্বক খুব বেশি দেখা যায়।  শুষ্ক ত্বককে অবহেলা করা মোটেও ঠিক নয়। কারণশুষ্ক ত্বকেই দেখা দেয় নানা ধরনের জটিলতা। শুষ্ক ত্বক শুরু হয় চুলকানোর উপসর্গ থেকে। চুলকালে সেখানে ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং পরে সেখানে দেখা যায় জীবাণুর সংক্রমণ। এটাকে ‘ওঃপয ঝপৎধঃপয ঈুপষব’ বলা হয়। এই শুষ্ক ত্বকের কারণে আমাদের ত্বকের যে রক্তনালিগুলো থাকে সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়সেখানে রক্তের সঞ্চালন কমে যায়। ত্বকের কোষ  নার্ভ এই রক্তনালির মাধ্যমে তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি অক্সিজেন পায়। তাই রক্ত সঞ্চালন কম হওয়ার কারণে এই কোষ  নার্ভগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়কোলাজেন তৈরিতে বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং ঘর্মগ্রন্থিগুলো ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। এর ফলে ত্বক শুষ্ক  পানিশূন্য হয়ে পড়ে। 

 

প্রতিকার 

শুষ্ক ত্বক পরিহারের জন্য কখনোই খুব বেশি গরম বা ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করা যাবে নাঈষদুষ্ণ পানি ব্যবহার করতে হবে। গোসলের সময় ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করা যাবে নাবেছে নিতে হবে ক্ষারমুক্তগ্লিসারিনঅর্গানিক ওয়েলওটমিল বা ময়েশ্চার রিচ মাইল্ড ক্লিনজার। গোসলের পরে মাইক্রোফাইবার যুক্ত টাওয়েল দিয়ে হালকা করে শরীর মুছতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন বাহুর ভাঁজরানের ভাঁজ এবং মেয়েদের ব্রেস্টের নিচের জায়গাগুলো যেন ভালোমত শুকানো হয় আর গোসলের তিন মিনিটের মধ্যেইটাওয়েল দিয়ে মোছার সঙ্গে সঙ্গেই পুরো শরীরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ময়েশ্চারাইজারটি সাধারণত সেরামাইডডাইমেথিকলঅর্গানিক অয়েল যুক্ত হলে ভালো হয়। আর যেকোনো প্রোডাক্ট কেনার আগে দেখতে হবে যেএগুলো কেমিক্যালপ্রিজারভেটিভঅ্যালার্জেন  টক্সিন মুক্ত কি না। 

 

ত্বকের ইনফেকশন 

ডায়াবেটিস রোগীদের ত্বককে বলা হয় ফাংগাসব্যাকটেরিয়া  অন্যান্য যেকোনো জীবাণুর জন্য বেশ অনুকূল বাসস্থান। সাধারণত ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ফোঁড়াফলিকুলাইটিসকার্বাংকালচোখের পাতায় স্টাই  ধরনের সফট টিস্যু ইনফেকশনগুলো হয় এবং সহজে সারতে চায় না। চিকিৎসকেরা রোগীদের ডায়াবেটিস কন্ট্রোলের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারের জন্য  খাবারের জন্য এন্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন। ইস্ট দ্বারা শরীরের ভাঁজে ভাঁজে ক্যান্ডিডিয়াসিসমেয়েদের ভ্যাজাইনাইটিস এবং ছেলেদের পুরুষাঙ্গে নানা ধরনের ইনফেকশন হয়ে থাকে। ছত্রাকের সংক্রমণে নখ থেকে শুরু করে পুরো শরীরে দেখা দেয় ফাংগাল ইনফেকশন টিনিয়া কর্পোরিসঅ্যাথলেট ফুটজগার্স ইচটিনিয়া ক্রুরিস  ধরনের ত্বকে রোগগুলো বেশি হয়। চিকিৎসার ক্ষেত্রে ইস্ট এবং ছত্রাকের ধরন বুঝে এন্টিফাংগাল ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে এন্টিফাংগাল ক্রিমমুখে খাওয়ার ওষুধ  সাবান এর অন্তর্ভুক্ত। যে কোনো ধরনের ত্বকের ইনফেকশনে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন জিংকভিটামিন সিএন্টি অক্সিডেন্ট সাপ্লিমেন্টগুলো বেশ ভালো কাজ করে। 

 

 

একান্থসিস নিগ্রিকান্স 

ভেলভেট টেক্সচারের মতো কালো দাগ শরীরের ভাঁজে যেমন গলায়বাহুর নিচে এবং রানের ভাঁজে দেখা দেয়। ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন এস্টাব্লিশ করেন যে একান্থসিস নিগ্রিকান্স টাইপ  ডায়াবেটিসের সূচক। এটি উপসর্গবিহীন কিন্তু সৌন্দর্য হানিকর। হঠাৎ ওজন বৃদ্ধিতে দেখা দেয় এই ত্বকের অনাকাক্সিক্ষত কালো দাগ। ওজন বৃদ্ধি  ডায়াবেটিস একটি আরেকটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তাই ওজন কমানোর সঙ্গে সঙ্গে অ্যাডভান্স এস্থেটিক ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে এই কালো দাগ অনেকখানি কমিয়ে আনা সম্ভব। সাধারণত রেটিন আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিডস্কিন লাইটেনিং ক্রিম এবং সঙ্গে কেমিক্যাল পিলকিউ সুইচ লেজার এগুলো আধুনিক চিকিৎসার অন্তর্ভুক্ত। ওজন কমানোর জন্য এক্সারসাইজের সঙ্গে সঙ্গে একটি সঠিক খাদ্য পরিকল্পনা খুবই জরুরি। সাধারণত ফ্রাইডজাংকপ্রসেসডক্যানড এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার পরিহার করতে বলা হয়। আর খাদ্য তালিকায় যেন কোনোভাবেই ম্যাক্রো এবং মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টের ঘাটতি না থাকে। লাল আটার রুটিলাল চালকাউনতোকমাওটসনানা ধরনের মৌসুমি ফল  সবজিকরলাসজনেপালং শাকটমেটোগাজরলেটুসব্রকলিবরবটিলেবুআমলকীপেয়ারাকামরাঙা খাবারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। খাবারে প্রোটিন এবং হেলদি ফ্যাট কখনোই বাদ দেওয়া যাবে না। মিষ্টিকুমড়ার বীজতিলবাদাম এগুলো হেলদি ফ্যাটের অন্তর্ভুক্ত। খাদ্য হতে হবে প্রোটিন সমৃদ্ধ যেমন মাছডিমটকদই  ঘরে বানানো ছানা। 

 

স্কিন ট্যাগ 

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যেটাইপ  ডায়াবেটিস অর্থাৎ ইনসুলিন রেসিসট্যান্স ডায়াবেটিসে স্কিন ট্যাগ নামে ত্বকে এক ধরনের নরম গ্রোথ দেখা দেয়। এগুলো একান্থসিস নিগ্রিকান্সের মতো উপসর্গহীন হলেও ভীষণ দৃষ্টিকটু  সৌন্দর্যহানিকর বটে। ইলেকট্রোফালগারেশনইলেক্ট্রোকটারিলেজার এবং কসমেটিক সার্জারির মাধ্যমে খুব সহজেই এগুলো রিমুভ করা যায়। সাধারণত গলাআর্মপিট  রানের ভাঁজে দেখা দেয় স্কিন ট্যাগ যা অনেক সময় একান্থসিস নিগ্রিকান্সের সাথেও থাকে।  

 

এলার্জিক রিয়াকশন 

অনেক সময় ডায়াবেটিস রোগীদের ওষুধে এলার্জি হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে ইনসুলিন ব্যবহারে ইনসুলিন নেওয়ার স্থানে উচু বা নিচু দেখা দিতে পারে। এগুলোকে ইনসুলিন এলার্জি বলা হয়। 

 

ডায়াবেটিক ডার্মোপ্যাথি 

অনেক সময় রোগীদের পায়ের সামনে হালকা বাদামি রঙের গোলাকার বা ডিম্বাকার দাগ দেখা দেয়। এগুলোকে ডায়াবেটিক ডার্মোপ্যাথি বলা হয়। এগুলো সাধারণত উপসর্গহীন এবং কোনো ক্ষতি করে না। 

 

ডায়াবেটিক ফুট 

দীর্ঘদিন ধরে অথবা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে রোগীদের পায়ে আলসার বা ঘা হয়। একে ডায়াবেটিক ফুট বলা হয়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ  সময়মতো সুচিকিৎসার মাধ্যমে সম্পূর্ণরূপে নিরাময় করা সম্ভব এই ডায়াবেটিক ফুট। কিন্তু অবহেলায় অনেক সময় গ্যাংগ্রিন হয় এবং পা কেটে ফেলতে হয়। ডায়াবেটিক ফুটের ক্ষেত্রে এই পা কাটার হার ৮০ ভাগেরও ওপরে। রোগীর পায়ে ঘা তৈরির নানা রকম কারণ আছে। প্রধান কারণ ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি। যেহেতু নার্ভগুলো ড্যামেজের কারণে রোগী ব্যথাগরমঠান্ডার অনুভূতি হারিয়ে ফেলেফলে পা কেটে গেলেফেটে গেলে বা কোনো জীবাণুর আক্রমণ হলে রোগী বুঝতে পারে না। এরপর আছে কম রক্ত সঞ্চালনপেরিফেরাল ভাসকুলার ডিজিজ। কারণ রক্তের মাধ্যমে টিস্যুমাসলসবোনগুলো পায় তার পর্যাপ্ত পুষ্টি। আর এই রক্ত সঞ্চালনের অভাবেই দেখা দেয় ডায়াবেটিক ফুট। শুষ্ক ত্বকের কারণে ডায়াবেটিক রোগীদের  ক্র্যাক হিল বা পা ফাটার সমস্যা খুব বেশি হয়। অযতেœ, অবহেলায়  সকল ফাটলে খুব সহজেই জীবাণুর সংক্রমণ ঘটে যা সহজেই সারতে চায় না। 

তাই ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিন সকালবিকেলে নিজের পা পরীক্ষা করতে হবে। সেক্ষেত্রে নখআঙুলের ভাঁজদুই আঙুলের মাঝে ফাঁকা জায়গাপায়ের তলা খুব যতœসহকারে দেখতে হবে। বছরে দুবার বিশেষজ্ঞের কাছে ফুট চেকআপ করাতে হবে। খালি পায়ে হাঁটবেন না। কোনো ক্ষত দেখা দিলে অবিলম্বে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা পানি ব্যবহার না করে ঈষদুষ্ণ পানি ব্যবহার করবেন  ব্যাপারে আমি আগেই জানিয়ে দিয়েছি। মেডিকেটেডওয়েল ফিটেড সু পরবেন যেন পায়ের থেকে খুব বড়ো বা ছোটো না হয়।  

এছাড়া আরো কিছু ত্বকের রোগ আছে যেমন নেক্রোবায়োসিস লিপয়েডিকাডায়াবেটিক ব্লিস্টারডিজিটাল সেক্লরোসিসইরাপটিক জেনথোমেটোসিস এবং আরো অনেক কিছু। সঠিক খাবারসঠিক ব্যায়াম  সঠিক জীবনযাত্রার মাধ্যমেই যেমন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমিয়ে আনা যায় ঠিক তেমন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এই ডায়াবেটিসকে। উন্নত বিশ্বে রিজেনারেটিভ মেডিসিনের মাধ্যমে প্রিডায়াবেটিক  ডায়াবেটিক রোগীর চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে এবং আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে। আনন্দের সঙ্গে জানানো যাচ্ছে যেআমাদের দেশে রিজেনারেটিভ মেডিসিনের চিকিৎসার সুব্যবস্থা আছে। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে আমি এবং আমার কয়েকজন বিশেষজ্ঞ সহকর্মী একটি টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে এই যুগান্তকারী চিকিৎসা ব্যবস্থাটি বাংলাদেশে এনেছি এবং সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। 

ডায়াবেটিস রোগীরা কিন্তু প্রচুর চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। এর একটি প্রধান কারণ পুওর ব্লাড সার্কুলেশন। কেননারক্তের মাধ্যমে চুলের গোঁড়ায় পৌঁছে যায় পুষ্টি। এছাড়া ড্রাই স্কাল্পের কারণেও চুলের গোড়া নরম হয়ে যায়। আরেকটি কারণ হচ্ছে যেযেহেতু ডায়াবেটিক রোগীরা সাধারণত একটু স্থূলকায় হয়ে থাকেন। যখন তারা ডাক্তারের কাছে আসেন অনেক সময় তারা ওজন কমানোর জন্য ক্র্যাশ ডায়েট করেন যেখানে পুষ্টি এবং ব্যালান্সড ডায়েটের অভাব থাকে। এর ফলে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়এরপরও রয়েছে স্ট্রেস।  

লেখক : ডার্মাটোলজিস্টশিওর সেল মেডিকেল বাংলাদেশওউনার অ্যান্ড ফাউন্ডার রিজুভা কসমেসিউটিক্যালস লিমিটেড