সুন্দর, সুগন্ধী ও ঔষুধি উদ্ভিদ নাগলিঙ্গম। দেখতে সাপের ফণার মতো নাগলিঙ্গমকে বলা হয় ফুলের রানি। নাগলিঙ্গমের বৈজ্ঞানিক নাম Couropita Guianensis. নাগলিঙ্গমের ফুল শাখায় নয়, ফোটে গাছের গুড়িতে। গুড়ি ফুড়ে বের হয় ছড়া। আর এই ছড়া থেকেই ফোটে অনিন্দ্যসুন্দর নাগলিঙ্গম ফুল। পাপড়ি, রেণু, ফুলের গঠন নাগলিঙ্গমকে দিয়েছে অভ‚তপূর্ব স্বকীয়তা। অনেকে ফুল ফোটানোর জন্য ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুঁড়িতে আঘাত করে। তাতে নাকি সহজে ফুল ফোটে।
নাগলিঙ্গম দীর্ঘ বৃক্ষ, প্রধান গুড়িটি ৪০ থেকে ৫০ ফুট দীর্ঘ হয়। ছাতিমের মতো সবুজ বড়ো পাতা বছরে দুই থেকে তিনবার ঝরে পড়ে। গাছ রোপণের ১২ থেকে ১৪ বছর পর ফুল ফোটে। বীজ থেকে এর চারা হয়। ফুল শেষে বেল বা কামানের গোলার মতো ফল হয় বলে ইংরেজরা এর নাম দিয়েছে Cannonball Tree. Cannonball অর্থ কামানের গোলা।
চেহার জন্য যেমন তেমনি সৌরভের জন্যও নাগলিঙ্গম বিখ্যাত। কী দিন, কী রাত নাগলিঙ্গম গাছের পাশ দিয়ে গেলে এর তীব্র সুগন্ধ আপনাকে কাছে টানবেই। এই ফুলের সৌরভে রয়েছে গোলাপ আর পদ্মের সংমিশ্রণ। নাগলিঙ্গমের পাপড়ির গড়ন সাপের ফণার মতো। সম্ভবত এ-কারণেই এর নাম হয়েছে নাগলিঙ্গম। ফুলের আকার বেশ বড়ো। পাপড়ি মোটা। লাল, গোলাপি ও হলুদের মিশ্রণ ফুলকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। মার্চ মাসে ফুল ফুটতে শুরু হয়। জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত গাছ ফুলেল থাকে।
এই গাছের মূল বা শিকড়-বাকল, পাতা, ফুল ও ফল থেকে ওষুধ তৈরি হয়।
বিরল প্রজাতির নাগলিঙ্গমের আদি নিবাস মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার গভীর বনাঞ্চল। থাইল্যান্ড ও ভারতের বিভিন্ন মন্দিরে এর দেখা মেলে। ঢকার রমনা পার্কে, বরিশাল, ময়মনসিংহ, যশোরসহ দেশে হাতে গোণা কয়েকটি নাগলিঙ্গম গাছ রায়েছে।
লেখা : শ্যামল কায়া