আমাদের একঝাঁক অভিজ্ঞ পরিচালক রয়েছেন যাদের আমরা কাজে লাগাতে পারি : আহমেদ তেপান্তর

19 Oct 2025, 02:51 PM খবর শেয়ার:
আমাদের একঝাঁক অভিজ্ঞ পরিচালক রয়েছেন যাদের আমরা কাজে লাগাতে পারি : আহমেদ তেপান্তর


সাংবাদিক আহমেদ তেপান্তর নানা ধরনের সামাজিক কর্মকা- করে আলোচনায় রয়েছেন। বিশেষ করে অবহেলিত চলচ্চিত্র অঙ্গনের সিনিয়র শিল্পীদের নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছেন তিনি। শুধু তাই নয়, এই অঙ্গনের উন্নতির জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে চলছেন তেপান্তর। বর্তমানে সাংবাদিকতার পাশাপাশি  বাংলাদেশ টেলিভিশন প্যাকেজ প্রিভিউ কমিটি, বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। বিটিভির অনুষ্ঠান ও চলচ্চিত্র অঙ্গনের নানা বিষয় নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শেখ সেলিম...


আনন্দভুবন : প্রথমে জানতে চাই, বিটিভির প্রিভিউ কমিটি কতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে ?

আহমেদ তেপান্তর : আশার কথা হচ্ছে সেখানে বর্তমান ডিজি একজন চমৎকার এবং সহনশীল কর্মকর্তা। তিনি কমিটিগুলোর বক্তব্য মন দিয়ে শোনেন। এছাড়াও বর্তমান জিএম-এর কথা না বললেই নয়, উনি স্বাধীনভাবে কাজ করায় উদ্বুদ্ধ করছেন। 

আনন্দভুবন : দিনদিন বিটিভির দর্শক কমেই যাচ্ছে, কীভাবে দর্শক বাড়বে বলে আপনি মনে করেন ? 

তেপান্তর : বিটিভির সক্ষমতা আছে, আশা করি খুব তাড়াতাড়ি ঘুরে দাড়াতে পারবে। তাছাড়া বিজ্ঞাপনের রেট কমানো, টেকনোলজিক্যাল সমস্যা দূর হওয়া প্রয়োজন। এখানে ভালোমানের প্রযোজক বা প্রোগ্রামার নেই। যতদূর জানি, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জিএম সাহেব বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন, শিগ্গিরই সেগুলোর বাস্তবায়ন দেখতে পাবে বিটিভির দর্শক। 

আনন্দভুবন : দীর্ঘদিন পর বিএফডিসির ফ্লোর ভাড়া কমানো হয়েছে, আপনি এটাকে কীভাবে দেখছেন ?

তেপান্তর : অবশ্যই এটা ইতিবাচক। এখন অনেক শুটিং হচ্ছে। এজন্য বর্তমান সরকার এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুমা রহমান তানিকেও ক্রেডিট দিতে হবে। 

আনন্দভুবন : সিনেমার ভবিষ্যৎ কোন পথে ?  

তেপান্তর : সারাপৃথিবীতেই সিনেমার চাহিদা আছে। আমাদের এখানেও আছে। এটা সমাজ-সাহিত্য-রাষ্ট্রের দর্পণের ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আমরা এই মাধ্যমটাকে কেবল বিনোদনের অংশ হিসেবেই ট্রিট করায় পদ্ধতিগত সমস্যায় পড়েছি। মোটা দাগে বলতে গেলে, করোনার পর ইন্ডাস্ট্রি খুব খারাপ অবস্থানে চলে গেছে, সেটা বলা যাবে না, তবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় অভ্যন্তরীণ সঙ্কট দীর্ঘতর হচ্ছে। অথচ আমাদের একঝাঁক অভিজ্ঞ পরিচালক রয়েছেন, যাদের আমরা কাজে লাগাতে পারি। তাদের হাতে ১৫টি বাণিজ্যিক সিনেমার জন্য ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে পারি। সিনেমা হলগুলোকে আধুনিকায়ন করতে হৃতপ্রণোদনা সহজ করে দিতে পারি, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সিনেপ্লেক্স নির্মাণে সরকারিভাবে নির্দেশনা দিতে পারি, শিল্পনীতির আওতায় হলগুলো পরিচালনা করতে পারি, এফডিসির অধীনে নতুন মুখের সন্ধান শুরু করতে পারি, এগুলো করলে এ মুহূর্তে ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়াবে। 

আনন্দভুবন : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম এজেন্ডা ‘সংস্কার’, সিনে ইন্ডাস্ট্রির জন্য কতটুকু হয়েছে বলে মনে করেন ?

তেপান্তর : প্রয়োগিক জায়গায় অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন সেন্সরবোর্ড সংস্কার হয়ে সার্টিফিকেশন বোর্ড হয়েছে কাগজে-কলমে, বাস্তবতা ভিন্ন। আপনি চাইলেই যেকোনো বিষয় নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করতে পারবেন না। সরকারি আমলারা করতে দেবেন না। এই অঙ্গনে আমরা ভেবেছিলাম আমলাতন্ত্রের প্রভাব কমবে, কিন্তু তেমন লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেড়েছে।

আনন্দভুবন : বিনোদন সাংবাদিকদের নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে, এ ব্যাপার কিছু বলুন।

তেপান্তর : বিতর্ক সকল বিটের সাংবাদিকদের নিয়েই রয়েছে, তবে এ অঙ্গনে একটু বেশি। একজন বিনোদন সাংবাদিককে একাধারে সমাজ, রাষ্ট্রকে মাথায় রেখে লিখতে হয়। একজন তারকার কোনো কথা লিখলে সমাজ প্রভাবিত হবে বা গোষ্ঠী বিপদগামী হতে পারেন এগুলো লক্ষ্য করা উচিত। কিন্তু খুব কম বিনোদন বিটের সাংবাদিকেরা এসব বিষয়ে সচেতন। তার কাছে এখন ভিউটাই মুখ্য। এটা দুঃখজনক। তবে আমি বলবো, প্রতিষ্ঠানেরও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা উচিত। 

আনন্দভুবন : কোন ধরনের সিনেমা দর্শক দেখতে চান বলে আপনি মনে করেন ?

তেপান্তর : এখন দক্ষিণী ফরমেশনে সিনেমা চলছে। দর্শক দেখছে। এটা একটা দিক। তবে খুব বেশিদিন এভাবে দর্শক ধরে রাখা যাবে না। দিনশেষে দর্শক মেলোডিনির্ভর মৌলিক গল্পের সিনেমাই দেখে। 

আনন্দভুবন : অনুদানের ছবির প্রক্রিয়াটা কেমন হওয়া উচিত ? 

তেপান্তর : অনুদানের সিনেমার কয়েকটি শর্ত থাকা জরুরি। অনুদান সিনেমায় অবশিষ্ট অর্থলগ্নী করতে পারে এমন প্রযোজকদের সুযোগ দেওয়া ;  অন্তত দশ লাখ টাকা জামানাত রাখা। ছবি রিলিজের পর টাকা ফেরত পাবে এই শর্তে ; কমিটিতে আমলানির্ভরতা কমিয়ে সিনেমা অভিজ্ঞদের সুযোগ দিতে হবে। হ