আমার পরিবারই সবচেয়ে বড়ো শক্তি -ফারনাজ জুঁই

টিভি সংবাদ উপস্থাপনার ক্ষেত্রে স্পষ্ট উচ্চারণ, সুন্দর বাচনভঙ্গি এবং দর্শকপ্রিয়তা বা জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে হাতে গোণা যে-ক’জন সংবাদ উপস্থাপক এগিয়ে আছেন দেশ টিভির সংবাদ উপস্থাপক ফারনাজ জুুঁই তাদের মধ্যে অন্যতম। দর্শকনন্দিত এই সংবাদ উপস্থাপককে নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন শহিদুল ইসলাম এমেল...

ফারনাজ জুঁই ছেলেবেলা থেকেই সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বড়ো হয়েছেন। সংস্কৃতিচর্চা তার পারিবারিক ঐতিহ্য। তিনি যখন খুব ছোটো ছিলেন তখন থেকেই বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন পেয়েছেন বিভিন্ন পুরস্কার ও পদক। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় চিত্রাঙ্কনে শিশু একাডেমি জেলা পুরস্কার, শিক্ষাসপ্তাহ পুরস্কারসহ ৫০টিরও অধিক পুরস্কার পেয়েছেন।

ফারনাজ জুঁই ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে একুশে টিভিতে যোগদান করেন। এখান থেকেই তার ক্যারিয়ার শুরু। এরপর একুশে টিভি থেকে আরটিভিতে চলে যান। আরটিভিতে পাঁচ বছর কাজ করার পর নিউজ ২৪ চ্যানেলে যোগদান করেন। নিউজ ২৪-এ কাজ করেন চার বছর। সেখান থেকে গত বছরের মাঝামাঝিতে দেশ টিভিতে যোগদান করেন।

ফারনাজ জুঁই ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপস্থাপনার পাশাপাশি সংবাদ উপস্থাপন করে আসছেন। তিনি দীর্ঘ পাঁচ বছর আরটিভির ‘তারকালাপ’ অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছেন। এছাড়া নিউজ ২৪-এ সেলিব্রেটি টকশো এবং পলিটিক্যাল টকশো উপস্থাপনা করেছেন।

সংবাদ উপস্থাপনায় কীভাবে এলেন জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি প্রথম বর্ষে পড়াকালীন জবস এ-ওয়ান অর্গানাইজেশনে সংবাদ উপস্থাপনার ওপর কোর্স সম্পন্ন করে একুশে টিভিতে সিভি জমা দিই। জমা দেওয়ার একমাস পর একুশে টিভি থেকে অডিশনের জন্য ডাকা হয়। অডিশনের পর ডাইরান করে অন-এয়ারের সুযোগ পাই।’

সংবাদ উপস্থাপক হবেন এমন কোনো পরিকল্পনা আগে থেকে ছিল না ফারনাজের। তিনি আসলে কোনো পরিকল্পনা করে উপস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত হননি। তবে সংবাদ উপস্থাপক হওয়ার ক্ষেত্রে পরিবার তাকে সহযোগিতা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারই সবচেয়ে বড়ো শক্তি। পরিবারের পরিপূর্ণ সহযোগিতা ছাড়া কখনোই একা চালিয়ে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। আমি পরিবারের কাছে কৃতজ্ঞ।’

ফারনাজের প্রথম সংবাদ পাঠের অভিজ্ঞতা অন্য দশজনের মতোই। প্রথম সংবাদ পাঠের সময় একটু নার্ভাস ছিলেন। ভয় ভয় লাগছিল। ভয় এবং শঙ্কা দুটোই কাজ করছিল তার মধ্যে। তারপরও প্রথম দিন ভালোভাবেই সংবাদ পাঠ করেছিলেন বলে জানালেন তিনি।

ভালো সংবাদ উপস্থাপক হওয়ার জন্য কী কী গুণ থাকা দরকার এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে কঠিন। আমি এখনো প্রতিনিয়ত শিখছি। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, যেকোনো পেশায় স্বকীয়তা জরুরি। আমরা কখনো চাইলেও কারো মতো হতে পারবো না কিন্তু নিজের মাঝে থাকা মেধাকে সর্বোচ্চ কাজে লাগতে পারি।’

সংবাদ সরাসরি সম্প্রচার হয় তাই অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের বিব্রতকর সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় অনেকেরই। এরকম একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির কথা বললেন, ফারনাজ জুঁই। একবার নিউজ পড়ার সময় টকব্যাক কাজ করছিল না। পুরো নিউজটা তাকে টকব্যাক ছাড়াই শেষ করতে হয়েছিল। তবে, সেরকম কোনো বড়ো ধরনের বিব্রতকর অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়নি তাকে।

ফারনাজ জুঁই মাঝখানে কিছুদিন করপোরেট জব করেছেন। এখন পুরোপুরি সংবাদ উপস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত আছেন। তিনি সবসময় বর্তমানকে কেন্দ্র করে বাঁচার চেষ্টা করেন। খুব বেশি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কখনোই করেন না। তার কাজটাই তিনি করে যেতে চান।

অবসরে গান শুনতে আর বই পড়তে ভালো লাগে। সমুদ্র তার খুব পছন্দ। সমুদ্রের বিশাল জলরাশির মাঝে যখন যান তখন তার মনে হয়, আমরা কত নগণ্য, কত ক্ষুদ্র। নীল রং দারুণ পছন্দ। ঝালজাতীয় বাঙালি খাবার খেতে ভালোবাসেন।