বিশ্বসেরা মসজিদ

05 May 2021, 07:27 PM এক্সক্লুসিভ শেয়ার:
বিশ্বসেরা মসজিদ

মসজিদকে আমরা ইবাদতের স্থান হিসেবেই জানি কিন্তু ইসলামি শাসনামলে মসজিদ থেকে পরিচালিত হতো রাষ্ট্রের যাবতীয় কর্মকাণ্ড। ইসলামের বিস্তৃতির সঙ্গে পৃথিবীতে যুগে যুগে নির্মিত হয়েছে নানা মসজিদ। মসজিদগুলোর ইতিহাস ও নির্মাণশৈলী নিয়ে মানুষের মনে কৌতূহলের শেষ নেই। দেশ-কাল-স্থান-সংস্কৃতিভেদে মসজিদের নির্মাণশৈলীতে এসেছে ভিন্নতা। বিশ্বের সেরা কয়েকটি মসজিদ নিয়ে আমাদের এই আয়োজন...


মসজিদ আল হারাম, কাবাশরিফ

ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র স্থান হলো এই কাবাশরিফ। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো মসজিদ। সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে এর অবস্থান। ৮৮.২ একর জায়গা জুড়ে মসজিদে হারাম অবস্থিত। সারাপৃথিবীর প্রায় ৯ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারে এই মসজিদে। হজের সময় এই সংখ্যা ৩০ লাখও ছাড়িয়ে যায়। ১৯৫৫ সালের পর সৌদি বাদশাহ আবদুল আজিজ মসজিদটির সংস্কারে হাত দেন। এর কিছু কিছু সংস্কার কাজ এখনো চলছে।


মসজিদে নববি

৬২২ খ্রিস্টাব্দে হজরত মোহাম্মদ [সা.] নিজ হাতে নির্মাণ করেন মসজিদে নববি বা আল-মাসজিদুল-নাবি। যার অর্থ নবির মসজিদ। এই মসজিদেই ছিল নবিজীর বাসস্থান। সৌদি আরবের মদিনা শহরে এই মসজিদের অবস্থান। ৬ লাখ লোক একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন এখানে। এর সংলগ্নই মোহাম্মদ [স.]-এর রওজা মোবারক। একসঙ্গে ১০ লাখ মুসল্লির একত্রে নামাজ পড়ার রেকর্ডও রয়েছে মসজিদে নববির। মসজিদের ১০টি মিনারের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু মিনারটির উচ্চতা ১০৫ মিটার। এই মসজিদের এক অংশেই রয়েছে রাসুল [স.]-এর রওজা মোবারক। রয়েছে ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর [রা.] ও দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর [রা.]-এর রওজা মোবারক।


হারামে ইমাম রেজা

শিয়া স¤প্রদায়ের ৮ম ইমাম ইমাম রেজা এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। তাই তাঁর নাম অনুসারেই মসজিদটির নামকরণ করা হয় হারামে ইমাম রেজা। ইরানের খোরসান প্রদেশের রাজধানী মসনদে এই মসজিদটি অবস্থিত। প্রায় তিন লাখ ৩১ হাজার ৫৭৮ বর্গমিটার জমির ওপরে অবস্থিত এই মসজিদ। এখানে প্রায় ৫ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। ৮১৮ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত এই মসজিদটির আটটি মিনার রয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ মিনারের উচ্চতা ৪১ মিটার।


ইসতিকলাল মসজিদ

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় অবস্থিত এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড়ো মসজিদ। মসজিদটির নাম ইসতিকলালÑ এটি ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় মসজিদ। ১৯৭৮ সালের ২২ ফেব্রæয়ারি মসজিদটি সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ১৯৪৯ সালে নেদারল্যন্ডের পরাধীনতা থেকে মুক্ত হয়ে তৎকালীন সরকার একটি জাতীয় মসজিদ নির্মাণে হাত দেন। ১৭ বছরের দীর্ঘ ব্যবধানে মসজিদটি নির্মিত হয়। এটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয় ১২ মিলিয়ন ডলার। এর ধারণ ক্ষমতা দুই লাখ।


ফয়সাল মসজিদ

পাকিস্তানের সবচেয়ে বড়ো মসজিদ ফয়সাল মসজিদ। এটি পাকিস্তানের ইসলামাবাদে অবস্থিত। মসজিদটি দেখতে অনেকটা বেদুইনদের তাঁবুর মতো। এটি পাকিস্তানের জাতীয় মসজিদ। ১৯৮৬ সালে মসজিদটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। এর ব্যয়ভার বহন করেন সৌদি বাদশা ফয়সাল। এর নির্মাণে ব্যয় হয় ১২০ মিলিয়ন ইউএস ডলার। এই মসজিদটির ধারণ ক্ষমতা দুই লাখ।


মসজিদুল হাসান আল শানি

মরক্কোর সবচেয়ে বড়ো শহর ক্যাসাবালাঙ্কায় আটলান্টিক মহাসাগরের তীরে এই মসজিদ অবস্থিত। স্থানীয়দের কাছে এটি ক্যাসাবালাঙ্কা হাজ বা হাসান মসজিদ নামে পরিচিত। অনেকটা মোঘল স্থাপত্যের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত এই মসজিদটির অবস্থান প্রায় ২১ হাজার বর্গমিটার জমির ওপর। ৪০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন এখানে।


তাজুল মসজিদ

মোঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ্ জাফরের শাসনামলে নবাব শাহ জাহান বেগম কর্তৃক নির্মিত হয় তাজুল মসজিদ। তবে তিনি পুরোপুরি এটি শেষ করে যেতে পারেননি। পরবর্তীসময়ে তার মেয়ে সুলতানা জাহান বেগম তার জীবদ্দশায় এর কাজ এগিয়ে নিয়ে যান। এর পরবর্তী নির্মাণ কাজ আবারো শুরু হয় ১৯৭১ সালে, শেষ হয় ১৯৮৫ সালে। এই মসজিদের ভেতর ও বাহিরে এক লাখ ৭৫ হাজার লোক একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন।


বাদশাহি মসজিদ

১৬৭১-১৬৭৩ সালের মধ্যে পাকিস্তানের লাহোরে এই মসজিদটি নির্মাণ করেন মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব। মসজিদটির আয়তন দুই লাখ ৭৬ হাজার স্কয়ার ফুট। এর উচ্চতা ১৯৬ ফুট। এই মসজিদটির ধারণ ক্ষমতা এক লাখ।


শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদ

বিশ্বের সেরা মসজিদগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম একটি মসজিদ। আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে এটি অবস্থিত। এর নির্মাণ কাল ১৯৯৬ থেকে ২০০৭। ৩০ একর জমির ওপর এটি নির্মিত। এর বিভিন্ন আকারের ৭টি গম্বুজ রয়েছে। এর উচ্চতা ২৭৯ ফুট। এর ধারণ ক্ষমতা ৪১ হাজার।