শিশুর বিকাশে বাবা-মায়ের ভ‚মিকা যেমন হওয়া প্রয়োজন

শিশুর যথাযথ বিকাশে বাবা-মায়ের ভ‚মিকা অনেক। আজকালকার বাবা-মায়েরা অবশ্য বেশ সচেতন। শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশে বাবা-মায়ের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে আর অসীম ধৈর্য নিয়ে অত্যন্ত যত্মের সঙ্গে শিশুকে লালনপালন করতে হবে। শিশুকে যেমন আদর-স্নেহ দিতে হবে তেমনি আবার কিছু নিয়ম–কানুন মেনে চলার অভ্যাস করতে হবে। অনেক সময় শিশুরা দষ্টুমি করে, আমরা না-বুঝে তাদের ভয় দেখাই, শাস্তি দিই। এতে শিশুর আত্মবিশ্বাস কমে যায়। শিশুর প্রতিটি কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। তার কথার গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি শিশুর ভালো কাজের প্রশংসাও করতে হবে। জেনে নিতে পারেন আপনার শিশুর বিকাশে কীভাবে তার যত্ম করবেন...

* বাবা-মায়ের জীবনে সন্তান অমূল্য সম্পদ এবং সন্তান পেয়ে যে তাদের জীবন ধন্য হয়েছে, এটা শিশুকে বোঝাতে হবে

* শিশুকে বোঝাতে হবে যে, সে পরিপূর্ণ একজন মানুষ, এতে তার ভেতর আত্মসম্মান বোধ জাগবে

* শিশুর কাজের প্রশংসা করতে হবে, তার কাজের সমালোচনা না করে কীভাবে করলে কাজটা সুন্দর হবে তা নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করতে হবে

* শিশুর সঙ্গে তার ভালো লাগা, মন্দ লাগা নিয়ে কথা বললে তার ভেতরে চিন্তা করার ক্ষমতা তৈরি হবে

* শিশু যে জিনিসগুলো ব্যবহার করে, সেগুলো তার পছন্দমতো যদি কেনা সম্ভব হয়, তবে তার মতামত দেওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠবে। তার বিছানার চাদর, পড়ার টেবিল, পোশাক-আশাক এ-সব ব্যাপারে তার পছন্দের গুরুত্ব দিতে হবে।

* আমরা অনেকেই শিশুকে মেঝেতে নামতে দিই না। খেলনা দিয়ে খেলতে দিই না। আমাদের ভয় থাকে সে পড়ে যেতে পারে বা আঘাত পেতে পারে। কিন্তু স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য শিশুকে হাঁটতে, খেলতে দিতে হবে, ভয় পেলে চলবে না। তাকে তার মতো থাকতে দিতে হবে।

* অনেক সময় মা-বাবা সন্তানের সব কাজ করে দেন। এটা করা ঠিক নয়। এতে শিশু দায়িত্ব নিতে শেখে না। শিশুদের ছোটো ছোটো দায়িত্ব দিতে হবে। যেমন হতে পরে খাওয়ার পরে শিশু নিজের থালাটা নিজেই পরিষ্কার করবে। পরিষ্কার করে যথাযথ স্থানে রাখবে। স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পরে স্কুল-পোশাক, জুতামোজা নিজেই খুলে রাখবে। ঘুমানো সময় তার নিজের বিছানা নিজেকেই পরিষ্কার করে নিতে হবে। তবে কোনো শিশু যদি এগুলো করতে না চায় তাহলে তাকে বকা দেওয়া যাবে না। তাকে বুঝিয়ে বলতে হবে যে, নিজের কাজ নিজেই করা উচিত। নিজের কাজ করা কোনো খারাপ কিছু নয়।

* অনেক সময় শিশুরা নিজের দামি একটা খেলনা ভেঙে ফেললে আমরা তাকে বকা দিই। শিশু কোনো কিছু ভেঙে বা নষ্ট করে ফেললে তারাই কিন্তু সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায়। খেলনা ভেঙে গেলে শিশুকে বলতে হবে, ‘তোমার খেলনাটা ভেঙে গেছে, তাই তোমার অনেক মন খারাপ হয়েছে। পরে খেলার সময়ে আমরা সতর্ক থাকব যেন খেলনাটা ভেঙে না যায়।

* শিশুদের কোনো প্রতিশ্রুতি দিলে সেটা রক্ষা করা উচিত। একইসঙ্গে শিশুকে ভালো কিছু করার জন্য পুরস্কারও দিতে হবে। তবে শিশুকে কোনো বিষয়ে লোভ দেখানো যাবে না।

* শিশুকে খেলাধুলা, গান, আবৃত্তি, ছবি আঁকা এ-সব যেকোনো এক বা একাধিক বিষয়ে আগ্রহী করে তুলতে হবে। উৎসাহ দিতে হবে।

* পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে।