গায়কদের জীবন নিয়ে বানানো সিনেমার গল্প

01 Jun 2022, 01:30 PM হলিউড শেয়ার:
গায়কদের জীবন নিয়ে বানানো সিনেমার গল্প

জন প্রিয় গায়কেরা আসলে বাস্তব জীবনে কেমন, গান দিয়ে স্টেজ কাঁপানো মানুষগুলো স্টেজের বাইরে কেমন। কী ঘটে চলে তাদের আসল জীবনে ? এমনও হাজারো প্রশ্ন চলে সাধারণ
মানুষের মনে। প্রিয় শিল্পীর জীবন নিয়ে আগ্রহের যেন কমতি নেই। এই আগ্রহের কিছুটা
লাঘব করে তাদের নিয়ে তৈরি সিনেমা। এমনই কিছু বিখ্যাত গায়কদের নিয়ে
তৈরি সিনেমা নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন...
রকেটম্যান [১৯৯২]পরিচালক স্কেটার ফ্রেটচার ১৯৯২ সালে তৈরি করে রকেটম্যান সিনেমাটি। বিখ্যাত গায়ক স্যার এলটন জনের জীবনীনির্ভর এই সিনেমাটি একটি ফ্যান্টাসি মিউজিক্যাল সিনেমা। নির্মাতা বেশ খোলামেলাভাবেই সত্য কাহিনি ও কিছু কল্পকাহিনিকে এক করে এক ধোয়াশা ধরনের জীবনকাহিনি তুলে ধরেছেন পর্দায়। কারণ, নির্মাতা কোনো অতিরঞ্জিত গল্পের মাধ্যমে দর্শক টানতে চাননি। ছবিতে দেখানো হয়েছে গায়কের শৈশব জীবনের নিঃসঙ্গতা। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো, নিজের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিয়ে নিজের মতো বাঁচা- গায়কের জীবনের এসব বিষয়কেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। রকেটম্যান হলো সকল গায়ক ও গীতিকারদের জন্য এক ধরনের শ্রদ্ধাঞ্জলি। ১২১ মিনিটের এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন ট্যারন ইগারটন, জেসি বেল ও রিচাড ম্যাডেন।

আট মাইল [২০০২]আমেরিকান বিখ্যাত র‌্যাপার এমিনেমের সত্যিকারের জীবন কাহিনি নিয়ে তৈরি হয়েছে আট মাইল সিনেমাটি। নাম-ভূমিকায় এমিনেম নিজেই অভিনয় করেছেন। ডেট্রয়েটের এক সাদাসিধে তরুণের বিখ্যাত র‌্যাপার হয়ে ওঠার গল্প নিয়েই তৈরি হয়েছে এইট মাইল সিনেমাটি। এই নামে এমিনেম একটি সাউন্ডট্রাকও তৈরি করে, যা ছবিটি নির্মাণের সময়ই তৈরি করা হয়। এটি দারুণ ব্যবসাসফল হয়। আর এই সাউন্ডট্র্যাকের গান ইওরসেল্ফের জন্য একাডেমি পুরস্কার জেতেন। আর ছবিটি মুক্তির পর ছবির সাউন্ডট্র্যাকটি বিলবোর্ড ২০০-এ প্রথম হয়। যা ওই বছরের পঞ্চম সর্বাধিক বিক্রিত অ্যালবাম হিসেবে নাম লেখায়। ১১০ মিনিটের এই সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন কার্টিস হ্যানসন। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন এমিনেম, ব্রিটনি মারফি, কিম বেসিংগার।

ওয়াক দ্য লাইন [২০০৫]ওয়াক দ্য লাইন মূলত বিখ্যাত গায়ক জনি ক্যাশের জীবনী নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। জনি ক্যাশের চরিত্রে অভিনয় করেছেন জ্যাকুইন ফোনিক্স। আর তার প্রেমিকা স্ত্রী জুনের ভূমাকায় আছেন রেসি উইদারস্পুন। যিনি এই চরিত্রের জন্য সে বছর সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন। ছবিতে জনি ক্যাশের জীবনের উত্থান-পতন বিভিন্ন গান গাওয়া, লেখার পেছনের গল্প বেশ চমকপ্রদভাবে তুলে ধরেছেন নির্মাতা। ১৩৬ মিনিটের এই সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন জন ল্যান্ডেস। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জ্যাকুয়িন ফোনিক্স, জেনিফার গুডইউন, রবার্ট প্যাটরিক প্রমুখ।
লাভ অ্যান্ড মার্সি [২০১৫]

আমেরিকান বিখ্যাত গায়ক, গীতিকার ও সুরকার ব্রায়ান উইলসনের জীবনী নিয়ে তৈরি লাভ অ্যান্ড মার্সি সিনেমাটি তার ভক্তদের জন্য বিশাল এক পাওয়া। সংগীত অনুরাগীদের জন্য এই সিনেমাটি বেশ উপভোগ্য। ১০৬০ খ্রিষ্টাব্দ এবং ১৯৮০-র দশকে উইলসনের কর্মকাণ্ড, তার যুবক ও মধ্যবয়সী সময়কালকে বেশ সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সিনেমাটিতে। যুবক বয়সী চরিত্রে অভিনেতা পল ড্যানোর অভিনয় অনবদ্য। মধ্যবয়সী চরিত্রে অভিনয় করেছেন জন কুসাক। ব্রায়ান উইলসনের মানসিক টানাপোড়েন ও তার থেকে ঘুরে দাঁড়ানো। অনবদ্য কিছু গানের সৃষ্টি সবই উঠে এসেছে এই সিনেমার গল্পে। ১২১ মিনিটের সিনেমাটির পরিচালক বিল পোহলাদ। অভিনয়ে ছিলেন জন কুমাক, পল ড্যানো, এলিজাবেথ ব্যাংকস প্রমুখ।

দিস ইজ স্পাইনাল ট্যাপ [১৯৪৪]
ব্রিটিশ হেভি মেটাল ব্যান্ডের ভেতরের জগতটা ঠিক কেমন তাই তুলে ধরা হয়েছে ‘দিস ইজ ফাইনাল ট্যাপ’ সিনেমায়। পুরো একটি মিউজিক অ্যালবাম তৈরি করা হয় সিনেমাটির জন্য। এবং সিনেমাতেই পারফর্ম করা হয়। টুনাইট আই অ্যাম গনা রক ইউ টু নাইট এবং গিভ মি সাম মানি এই জনপ্রিয় গান দুটি এই সিনেমার অ্যালবামের। আশির দশকে মেটাল ব্যান্ডগুলোর দারুণ দাপট ছিল। অদ্ভুত সাজসজ্জা, উদ্ধতপূর্ণ গানের কথা, সমাজের প্রচলিত নিয়মকানুনকে কটাক্ষ করা সব কিছু মিলিয়ে মেটাল ব্যান্ড তরুণদের প্রথম পছন্দ ছিল। যারা মেটাল ব্যান্ডপ্রিয় তারা এই সিনেমাটি দেখতে পারেন। ৮২ মিনিটের এই সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন রব রেইনার, মাইকেল মেককিয়ান, ক্রিস্টোফর গেস্ট ও হ্যারি সিয়েরার প্রমুখ। অভিনেতা রব রেইনারই এই সিনেমার পরিচালক।
এ স্টার ইজ বর্ন [১৯১৮]পরিচালক ও অভিনেতা ব্রাডলি কুপারের পরিচালনায় ‘এ স্টার ইজ বর্ন’ সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে। এই সিনেমাটি একটি রোমান্টিক ড্রামা। ব্রাডলি কুপারের সিনেমা আবারো মনে করিয়ে দিল গল্প কোনো বিষয় নয়, বিষয় হলো এটিকে কীভাবে বলা হচ্ছে সেটি। এক তরুণ গায়ক-গীতিকার যিনি এক মাতাল কান্ট্রি মিউজিশিয়ানের প্রেমে পড়ে। এমনই কাহিনি নিয়ে সিনেমাটি তৈরি করেছেন ব্রাডলি কুপার। ছবিটির প্রধান এক চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিখ্যাত গায়িকা লেডি গাগা। ব্রাডলি কুপার ও স্যাম এলিয়টের সঙ্গে তাল রেখে দারুণ অভিনয় করেছেন এই গায়িকা। সিনেমার শ্যালো গানটি পুরো বিশ্বেই বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। একাডেমি পুরস্কারও জেতে এই গানটি। ১৩৬ মিনিটের এই সিনেমাটি দারুণ জনপ্রিয় হয় সংগীতপ্রেমীদের কাছে।


লেখা : ফাতেমা ইয়াসমিন