ছেদটা আমার জীবনে প্রয়োজন ছিল -জিনাত সানু স্বাগতা

22 Mar 2022, 01:20 PM আকাশলীনা শেয়ার:
ছেদটা আমার জীবনে প্রয়োজন ছিল  -জিনাত সানু স্বাগতা

জিনাত সানু স্বাগতা। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নানা শাখায় বিচরণ রয়েছে তার। কখনো ছোটোপর্দায় কখনো আবার বড়োপর্দায় অভিনয়ের পাশাপাশি কন্ঠশিল্পী হিসেবেও সুনাম রয়েছে তার। মডেল হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তার। বিভিন্ন শাখায় কাজ করলেও অভিনয়ের প্রতি বেশি দুর্বল তিনি। বর্তমানে একাধিক ফরমেটে কাজ করছেন এই অভিনয়শিল্পী। বিস্তারিত লিখেছেন শেখ সেলিম...

স্বাগতার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে মাত্র সাড়ে তিনবছর বয়েসে। ‘লিনজা’ শিরোনামের ছবির মাধ্যমে অভিনেত্রী হিসেবে যাত্রা শুরু হয় তার। এরপর শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন ‘সম্মান’, ‘সতীপুত্র আবদুল্লাহ’ ও ‘টপ মাস্তান’ ছবিতে। স্বাগতা ছেলেবেলা থেকে গান গাইতেন। নতুনকুঁড়ি প্রতিযোগিতায় ছড়াগান বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলেন তিনি।

২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রয়াত অভিনেতা মান্নার বিপরীতে “শত্রু শত্রু খেলা” ছবিতে নায়িকা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। এর আগে, ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে ‘ইউ গট দ্য লুক’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন তিনি।

অভিনয়কে বেশি ভালোবাসেন স্বাগতা সেটা হোক ছোটপর্দা কিংবা বড়োপর্দায় দু’জায়গায়ই কাজ করতে ভালো লাগে তার। বর্তমানে বেশকিছু নাটক ও ওয়েবসিরিজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি।

তবে বর্তমানে স্বাগতা বেশ আনন্দে আছেন, তার বহুল প্রতীক্ষিত একটি ছবি মুক্তি পেয়েছে।

এই প্রসঙ্গে স্বাগতা বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষে আমার একটি চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে। ‘লাল মোরগের ঝুটি’ সিনেমাটি বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছরে মুক্তি পাওয়ায় আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের সংবাদ ছিল। আমার মনে হয় আমার দর্শকদেরও ভালো লেগেছে ছবিটি।

বর্তমান কাজ প্রসঙ্গে বলেন বর্তমানে বেশকিছু কাজ নিয়ে রয়েছি। এরমধ্যে জি-ফাইভের জন্য একটি ১০৪ পর্বের ওয়েব সিরিজে কাজ করছি। কাজ করব কয়েকটি নতুন ধারাবাহিক নাটক ও সিঙ্গেল নাটকে। বৈশাখী টেলিভিশনে প্রচার হচ্ছে আকাশ রঞ্জনের পরিচালনায় ধারাবাহিক নাটক বউ শাশুড়ি।

অভিনয় গান ছাড়াও ভালো উপস্থাপনা করেন স্বাগতা। বর্তমানে উপস্থাপনা করছেন বাংলাদেশ বেতারের দর্পনের বিশেষ আয়োজন “তারার সাথে কিছুক্ষণ” অনলাইনে উপস্থাপনা করছেন মিউজিক গার্ডেনে, চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের একটি অনুষ্ঠান।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে স্বাগতার শতাধিক নাটক ও একাধিক সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। মিডিয়ায় কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে বলেন, এখানে কাজ করাটা আমি খুব এনজয় করি। একটা জায়গায় দীর্ঘদিন বসবাস না করলে সেটাকে নিজস্ব মনে হয় না। আমার মনে হচ্ছে, আমি যত বছর মিডিয়ায় কাজ করছি তত বেশি আমার এই জায়গার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হচ্ছে এবং আমার কাজের প্রতি কমিটমেন্ট তৈরি হচ্ছে। তো এটাকে আমি খুব ইতিবাচকভাবে দেখি।

বর্তমানে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই প্রসঙ্গে কিছু বলুন, এটা সত্য ওটিটি প্ল্যাটফর্মের গুরুত্ব বেড়েছে। কারণ, সবার হাতে হাতে এখন মোবাইল। যে কেউ ইচ্ছে করলেই সেকেন্ডে পুরো পৃথিবী ঘুরে আসতে পারেন। অবসর সময়ে অনেকে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকছেন। তাই দিন দিন ওটিটি প্লাটফর্মের গুরুত্ব বাড়ছে। আমিও এখন থেকে রেগুলার ওয়েব সিরিজে কাজ করতে চাই। ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আমার কাজগুলো দেখে ফিডব্যাক জানাবেন। ফিডব্যাক পেলে আপনাদের কেমন কাজ চাই, সেটা বুঝতে পারব।

নাটক, সিনেমা ও বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানতে চাই। নাটক, সিনেমা বলেন বা ওয়েব সিরিজ বলেন, যেটাতেই বলেন না কেন এক একটা একের রকমের ফর্মে শুটিং হয়। পারফর্মেন্সও করতে হয় ভিন্ন ফর্মে। এই ভিন্ন ভিন্ন ফর্মেটে অভিনয় করতে পারাও এক ধরনের আনন্দ রয়েছে। স্বাগতা বরাবরই সাদামাটা জীবন কাটাতে পছন্দ করেন। ব্যক্তিজীবনে যেমন সবারই চড়াই-উৎরায় থাকে তিনি ও তার বাইরে নন, তারপরও নিজেকে খুব সহজেই মানিয়ে নেওয়ার স্ব-ক্ষমতা রয়েছে তার।

২০০৫ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত বেশ ব্যস্ত সময় পার করেছেন এই অভিনয়শিল্পী। ব্যস্ততার কারণে নিজেকে তেমন একটা সময় দিতে পারেননি তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের পরে আমার কাজে একটা ছেদ পড়ে। তবে কোভিডের সময়ে নিজেকে সময় দিতে পেরেছি। আমার মনে হয় এই ছেদটা আমার জীবনে প্রয়োজন ছিল। একনাগাড়ে কাজ করতে করতে একঘেয়েমি চলে আসে। এই সময়টাতে আমি বুঝতে পেরেছি, আমার কোথায় নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে, পৃথিবী কোথায় পৌঁছে গেছে, এগুলো আমি রিসার্স করতে পেরেছি।