যাঁরা চলে গেলেন : ২০২৩

24 Jan 2024, 01:53 PM অন্যান্য শেয়ার:
যাঁরা চলে গেলেন : ২০২৩

২০২৪ খ্রিষ্টাব্দকে স্বাগত জানিয়ে বিদায় নিয়েছে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ। বিদায়ী বছরে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক অভিনয়শিল্পী, নির্মাতা, কন্ঠশিল্পীসহ অন্যান্য শাখার গুণীজনরা। বিস্তারিত জানাচ্ছেন শেখ সেলিম...

ফারুক

অভিনেতা

দেশবরেণ্য অভিনেতা, মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ মে মারা যান। তিনি ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ফারুক স্কুল-জীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ৬ দফা আন্দোলনে যোগ দেন এবং এ সময়ে তার নামে প্রায় ৩৭টি মামলা দায়ের করা হয়। এরপর ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় তাঁর। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘আবার তোরা মানুষ হ’, ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘আলোর মিছিল’ দু’টি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন গুণী এই অভিনেতা।

এরপর ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে ‘সুজন সখী’ ও ‘লাঠিয়াল’ ছবি দু’টি বেশ ব্যবসাসফল হয়। ‘লাঠিয়াল’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তি পায় তার অভিনীত তিনটি সিনেমা ‘সূর্যগ্রহণ’, ‘মাটির মায়া’ ও ‘নয়নমণি’। আর এই ছবি তিনটি বিভিন্ন বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। পরের বছর শহীদুল্লাহ কায়সার রচিত কালজয়ী উপন্যাস ‘সারেং বৌ’ অবলম্বনে নির্মিত ‘সারেং বৌ’ ও আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বেশ প্রশংসা কুড়ান এই অভিনেতা।

তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে ‘নাগরদোলা’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘কথা দিলাম’, ‘মাটির পুতুল’, ‘সাহেব’, ‘ছোটো মা’, ‘এতিম’, ‘ঘরজামাই’ ‘সখী তুমি কার’ ‘মিয়া ভাই’ প্রভৃতি। চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৬ থেকে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি।

জিনাত বরকতুল্লাহ

নৃত্যশিল্পী ও অভিনয়শিল্পী

একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী জিনাত বরকতুল্লাহ ২০ সেপ্টেম্বর মারা যান। তিনি চার বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী গাজী আলিমুদ্দিন মান্নানের কাছে নাচ শিখতে শুরু করেন। এ ছাড়াও বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে নাচ শেখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে জিনাত বরকতুল্লাহ যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পারফর্মিং আর্টস একাডেমিতে। পরে তিনি শিল্পকলা একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা বিভাগের অন্তর্ভুক্ত প্রোডাকশন বিভাগের পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। সেখানে তিনি ২৭ বছর কর্মরত ছিলেন।

১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে জিনাত বরকতুল্লাহ বিটিভির নাটক ‘মারিয়া আমার মারিয়া’ দিয়ে অভিনয়জীবন শুরু করেন। এরপর ‘ঘরে বাইরে’, ‘অস্থায়ী নিবাস’, ‘বড় বাড়ি’, ‘কথা বলা ময়না’সহ বেশ কয়েকটি টিভি নাটকে অভিনয় করেন তিনি। জিনাত বরকতুল্লাহ নৃত্যশিল্পে অবদানের জন্য ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদকে ভূষিত হন।

খালেকুজ্জামান

অভিনেতা

অভিনেতা ও মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামান ২১ মার্চ মারা যান। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত হন। তাঁর অভিনীত প্রথম অভিনীত নাটক ‘সর্পভ্রমে রজ্জু’ বিটিভিতে প্রচার হয়। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বিটিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হন। তাঁর উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘বড় ছেলে’ ‘বৃহন্নলা’, ‘ছুঁয়ে দিলে মন’ প্রভৃতি। এছাড়াও গুণী এই অভিনেতা ‘দেবী’ সিনেমায়ও অভিনয় করেন।

বুলবুল মহলানবীশ

সংগীতশিল্পী

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ও সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবীশ ১৪ জুলাই ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়েস ছিল ৭০ বছর। তিনি একাধারে কবি ও লেখক, সংগীত, নাট্য ও আবৃত্তিশিল্পী হিসেবেও খ্যাতি লাভ করেন। পাশাপাশি তিনি টেলিভিশন-বেতার-মঞ্চে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিবিষয়ক বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে সেই সময়কার রেসকোর্স ময়দানে যখন পাক হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেন, ওই সময় কলকাতার বালিগঞ্জের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হয় ‘বিজয় নিশান উড়ছে ঐ’- গানটি। কালজয়ী এই গানের শিল্পীদের একজন বুলবুল মহলানবীশ। গানটি লিখেছেন শহীদুল ইসলাম।

বুলবুল মহলানবীশের জন্ম ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দের ১০ মার্চ বিক্রমপুরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। পেশাগত জীবনে দীর্ঘদিন শিক্ষকতাও করেছেন তিনি।

সোহানুর রহমান সোহান

নির্মাতা

জনপ্রিয় নির্মাতা সোহানুর রহমন সোহান ১৩ সেপ্টেম্বর মারা যান। সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলোÑ ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘আমার দেশ আমার প্রেম’, ‘স্বজন’, ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’, ‘অনন্ত ভালোবাসা’, ‘স্বামী ছিনতাই’, ‘আমার জান আমার প্রাণ’, ‘পরান যায় জ্বলিয়া রে’, ‘কোটি টাকার প্রেম’, ‘সে আমার মন কেড়েছে’, ‘দ্য স্পিড’ ও ‘লোভে পাপ পাপে মৃত্যু’ ইত্যাদি।

চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘বিশ্বাস অবিশ্বাস’। এ নির্মাতার হাত ধরেই চলচ্চিত্রে আসেন সালমান শাহ, মৌসুমী, পপি ও ইরিন জামান। শাকিব খান অভিনীত প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অনন্ত ভালোবাসা’ সিনেমার পরিচালকও তিনি।

সালাহউদ্দিন জাকী

নির্মাতা

নির্মাতা সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী ১৯ সেপ্টেম্বর ৭৭ বছর বয়সে মারা যান। ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ঘুড্ডি’ সিনেমা দিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। এই সিনেমার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদক লাভ করেন তিনি। ‘লাল বেনারসি’, ‘আয়না বিবির পালা’সহ কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন তিনি।

মোহন খান

নাট্যকার ও পরিচালক

পরিচালক ও নাট্যকার মোহন খান ৩০ মে মারা যান। তার পরিচালিত প্রথম নাটক ‘আমার দুধ মা’ বিটিভিতে প্রচারিত হয়। তার লেখা ও পরিচালনায় নাটক ‘সমুদ্রে গাঙচিল’, ‘সেই আমরা’, ‘নীড়ের খোঁজে গাঙচিল’, ‘জেগে উঠো সমুদ্র’, ‘মেঘবালিকা’, ‘দূরের মানুষ’, ‘আঙ্গুর লতা’, ‘হৃদয়পুরের গল্প’ ইত্যাদি।

আশেক মাহমুদ

গীতিকার

‘আমি সবকিছু ছাড়তে পারি তোমাকে ছাড়তে পারব না’ জনপ্রিয় এই গানটির গীতিকার সৈয়দ আশেক মাহমুদ ২১ জানুয়ারি মারা যান। রবি চৌধুরীর গাওয়া ‘পৃথিবীকে চিনি আর তোমাকে চিনি’, শুভ্র দেবের গাওয়া ‘ও বেহুলা বাঁচাও’, কুমার বিশ্বজিতের গাওয়া ‘মুক্তিযুদ্ধ করেছি আমরা দুরন্ত’ গানগুলোর গীতিকার আশেক মাহমুদ। এছাড়া রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমীনসহ দেশের আরো অনেক গুণী ও জনপ্রিয় শিল্পীর জন্য গান লিখেছিলেন তিনি।

নাদিরা বেগম

পল্লীগীতি ও লোকগীতির স্বনামধন্য কণ্ঠশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা নাদিরা বেগম ৬ নভেম্বর মারা যান। ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে রেডিওতে সংগীতশিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন নাদিরা বেগম। এরপর নিয়মিত ভাওয়াইয়া, পল্লীগীতি ও লোকগীতি গেয়েছেন তিনি।

নাদিরা বেগম ছিলেন ‘কল কল ছল ছল নদী করে টলমল...’ ছাড়াও একাধিক বিখ্যাত গানের গীতিকার ও সুরকার এ কে এম আবদুল আজিজের মেয়ে। এছাড়া তিনি দীর্ঘদিন ভাওয়াইয়া একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

শফি বিক্রমপুরী

চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রযোজক

চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রযোজক শফি বিক্রমপুরী ১৮ অক্টোবর মারা যান। তার প্রথম নির্মিত সিনেমা ‘রাজদুলারি’। এরপর ‘আলাদিন আলিবাবা সিন্দাবাদ’, ‘দেনমোহর’সহ কয়েকটি ছবি পরিচালনা করেছেন। তার প্রযোজিত ও পরিবেশিত সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’, ‘ডাকু মনসুর’, ‘বাহাদুর’, ‘বন্দুক’, ‘সবুজ সাথী’ প্রভৃতি।

মিতা চৌধুরী

অভিনেত্রী

অভিনেত্রী মিতা চৌধুরী ২৯ জুন মারা যান। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। গত শতকের সাত ও আটের দশকের জনপ্রিয় এই নাট্যশিল্পী দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে দেশে ফিরে আবার নাটকে অভিনয় শুরু করেন। এটি তার দ্বিতীয় অধ্যায়। এরপর আবার নিয়মিত অভিনয় করেছেন। তার প্রথম ধারাবাহিকের নাম ‘শান্ত কুটির’। শুধু টিভি নাটকই নয়, মঞ্চে ‘সূচনা’ ও ‘গুড নাইট মা’-এর মতো প্রযোজনায় নিজেকে জড়িয়েছেন তিনি।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নাট্যকার মারশা নরম্যানের ‘নাইট মাদার’ অবলম্বনে ‘গুড নাইট মা’ এর পা-ুলিপি তৈরি করেন মিতা চৌধুরী। নাটক ছাড়াও একাধিক সিনেমায় কাজ করেছেন গুণী এই অভিনেত্রী। মিতা চৌধুরী অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হচ্ছেÑ বিষ, আন্ডার কনস্ট্রাকশন ও মেড ইন বাংলাদেশ প্রভৃতি।

হুমায়রা হিমু

অভিনেত্রী

অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু মারা যান ২ নভেম্বর। হিমু ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইস্পাহানি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। মঞ্চনাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে সাংসস্কৃতিক অঙ্গনে তার পথচলা শুরু। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে হুমায়রা হিমুর চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়। চলচ্চিত্রের গল্পটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এবং চলচ্চিত্রে তার অসাধারণ অভিনয় সমালোচকদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করেছিল।

তারেক মাহমুদ

অভিনেতা, নির্মাতা ও কবি

অভিনেতা, নির্মাতা ও কবি তারেক মাহমুদ ২৬ অক্টোবর রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তারেক মাহমুদের ছায়ালোক মিডিয়া স্টেশন নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর ব্যানারে ‘চটপটি’ শিরোনামে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে হাত দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে তা থেমে ছিল বলে জানা যায়। কাজটি অসমাপ্ত রেখেই পরপারে পাড়ি জমান তিনি। এ ছাড়াও তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কালার বাঁশি’ প্রকাশ হয় ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে।

গোলাম মোহাম্মদ ইদু

শিল্পী, সংগঠক

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, শিল্পী গোলাম মোহাম্মদ ইদু ২২ ডিসেম্বর রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে আনুষ্ঠানিকভাবে উদীচী প্রতিষ্ঠিত হওয়ারও প্রায় এক দশক আগে থেকে শিল্পী-সংগ্রামী-কৃষক নেতা সত্যেন সেন একটি গানের দল গঠন করেন। সেই গানের দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন গোলাম মোহাম্মদ ইদু।

পরবর্তীকালে ১৯৬৮ খ্রিষ্টব্দের ২৯ অক্টোবর উদীচী আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হলে প্রথম আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য নির্বাচিত হন গোলাম মোহাম্মদ ইদু।

২০০৮ থেকে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং স্বাধীনতা-পরবর্তীসময়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন গোলাম মোহাম্মদ ইদু। জীবনের একটি দীর্ঘসময় তাকে কারান্তরীণ থাকতে হয়েছে। তারপরও নিজের দায়িত্ব-কর্তব্য থেকে কখনো পিছ পা হননি তিনি।