লিপস্টিক
লিপস্টিক আমাদের সাজগোজের একটি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। আমরা মেয়েরা কিন্তু একদিনও লিপস্টিক ছাড়া কল্পনা করতে পারি না, কেননা লিপস্টিকের উপরে আমরা দারুণ নির্ভরশীল। শুধু ঠোঁটের সৌন্দর্য নয়, পুরো মুখম-লের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য লিপস্টিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আপনি কি জানেন যে, কোন ধরনের লিপস্টিক আপনি ব্যবহার করছেন ? লিপস্টিক নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আপনি যদি সঠিক লিপস্টিকটি নির্বাচন না করেন তাহলে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেটি শুধু ঠোঁটের জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ নয় বরং এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিও থাকতে পারে।
একটু একটু করে বিষয়গুলো বুঝিয়ে দিচ্ছি। প্রথমেই জানতে হবে ‘শেল্ফ টাইম’ সম্পর্কে। প্রতিটি পণ্যের একটি নির্দিষ্ট শেল্ফ টাইম থাকে। লিপস্টিকের ক্ষেত্রেও তাই। শেল্ফ টাইমকে দু’ভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। প্রথমত, আপনি একটি লিপস্টিক বছরের পর বছর বা দুই বছরেরও অধিক সময় ধরে ব্যবহার করছেন। কারণ অনেক ধরনের লিপস্টিকের মধ্যে এটিকে হয়তো আপনি অবহেলা করে ফেলে রেখেছেন ব্যাগের এক কোণে। কিন্তু অনেক দিন পর কোনো একটি জামার রঙের সাথে মিলিয়ে আপনি তা ব্যবহার করছেন। সেক্ষেত্রে এই লিপস্টিক থেকে আপনার র?্যাশ, কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস, ইরিটেশন, সেন্সিটিভিটি বা লিপ ডিসকালারেশন দেখা দিতে পারে।
শেল্ফ টাইমের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ব্যাপারটি হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ। প্রতিটি পণ্যের গায়ে যেমন মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা থাকে তেমনি লিপস্টিকের গায়েও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা থাকে। এর মাঝেই লিপস্টিকের ব্যবহারটি শেষ করে ফেলবেন। মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ শেষ হয়ে গেলে অবশিষ্টাংশ অবশ্যই ফেলে দেবেন।
এরপর আসছি লিপস্টিকে থাকা হেভি মেটাল, টক্সিন, প্রিজারভেটিভস এবং এডিটিভ কালারগুলো আমাদের কীভাবে ক্ষতি করে। এতে থাকা প্যারাবেন, ফরমালডিহাইড আমাদের এলার্জিক রিয়াকশন করে। শুধু ঠোঁটেও নয়, ঠোঁটের চারপাশের ত্বকে এমনকি চোখেও তা দেখা দিতে পারে। অনেক লিপস্টিকে লেড, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম নামক ভারি ধাতুগুলো থাকে যা কার্সিনোজেনিক। এছাড়া দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে এগুলো আপনার ত্বকে শোষিত হয় এমনকি খাবারের মাধ্যমেও আপনি এগুলোকে গ্রহণ করে ফেলেন। এর ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দেয়। আপনার কিডনি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোরও ক্ষতি হতে পারে। সুতরাং লিপস্টিক কেনার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন এই ক্ষতিকারক উপাদানগুলো যেন আপনার লিপস্টিকে না থাকে।
এছাড়াও অনেক ধরনের লিপস্টিক রয়েছে যেগুলোতে জোজোবা ওয়েল, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড যুক্ত থাকে সেগুলো ব্যবহারে কোনো ক্ষতি বা স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে না। সুতরাং সতর্ক হোন আপনার লিপস্টিক নির্বাচনে।
লেখক : কনসালটেন্ট ডার্মালোজিস্ট
শিওরসেল মেডিকেল [বাংলাদেশ] লিমিটেড, গুলশান, ঢাকা