আকাশে শুভ্র সাদা মেঘের ভেলা। আর নদীর তীরজুড়ে কাশফুলের সমারোহ। আর মাঝে মাঝে রোদ বৃষ্টির আনাগোনা। শরতের এই শুভ্র সময়টাতেই বছর ঘুরে আসছে সনাতন ধর্মাবলম্বী বাঙালিদের সবচেয়ে বড়ো উৎসব দুর্গাপূজা। আমাদের দেশে এই পূজা অসম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পালিত হয়। যেকোনো উৎসব মানেই সাজগোজ। পূজার মৌসুমে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায় সাজ-পোশাক। পোশাকের সঙ্গে মানানসই সাজ না হলে উৎসবের সব আমেজই নষ্ট হয়ে যায়।
দুর্গা পূজার উৎসবের শুরু মূলত ষষ্ঠী থেকে আর শেষ বিজয়া দশমীতে। এই পাঁচ দিনের আচার অনুষ্ঠান যেহেতু পাঁচ রকম, তাই এই পাঁচ দিনের সাজ-পোশাকও ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। পাঁচ দিনে অনেকেই পাঁচ ধরনের পোশাক পরতে পছন্দ করেন।
হালকা সাজ মানায় ষষ্ঠীতে
স্যাঁতসে্যঁতে এই আবহাওয়ায় হালকা সাজ দিয়েই শুরু করা হয় ষষ্ঠী। তাঁত বা প্রিন্টের সুতি শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ যেকোনোটাই পরতে পারেন। সাজের ক্ষেত্রে খুব সাধারণ সাজকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। একটু কমপ্যাক্ট পাউডার, চোখে কাজল, হালকা লিপস্টিকেই সেরে ফেলতে পারেন ষষ্ঠীর সাজ। চুল হালফ্যাশনের সামনের দিকে টুইস্ট করে পেছনে পনিটেইল, খেজুর বেণি করলে গরমে আরাম মিলবে আর ট্রেন্ডি লুকও আসবে।
স্নিগ্ধতায় ভরপুর সপ্তমী
সপ্তমীতে অঞ্জলি দিতে হয়। তাই ফুল ব্যবহার করে সাজে আনতে পারেন ভিন্নতা। যাওয়ার সময় সাজ হালকা ও সজীব রাখুন। এদিন সুতি আরামদায়ক পোশাক মানানসই। এমন পোশাকের সঙ্গে বেইজ মেকআপে ত্বকের সঙ্গে মিলিয়ে ট্যান্সলুসেন্ট পাউডার কিংবা বিবি ক্রিম লাগাতে পারেন। ঠোঁটে দিন করোল, হালকা গোলাপি, কমলা লিপস্টিক, অথবা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে পরতে পারেন। সপ্তমীর রাতের সাজে চোখে ব্লু, অ্যাশ আইশ্যাডো লাগিয়ে সাজকে রাতের উপযোগী করে তুলুন। খোঁপা করে চুলে বেশি করে ফুল লাগিয়ে সাজে স্নিগ্ধতা আনতে পারেন।
অষ্টমীর সাজ
অষ্টমীতে সকলেই একটু ভারি সাজতে পচ্ছন্দ করেন। পোশাকের ক্ষেত্রে বেনারসি, সিল্ক, কাতানের মতো ভারি শাড়ি পরতে পারেন অনায়াসে। অষ্টমীর দিনে সকলেই হালকা আর রাতে ভারি সাজে সাজতে পচ্ছন্দ করেন। রাতে ভারি সাজের ক্ষেত্রে সাজার আগে মুখ টোনিং করে ওয়াটার বেইজ ফাউন্ডেশন দিয়ে নিন। এরপর ফেসপাউডার ও ব্লাশন লাগাতে পারেন। চোখের সাজের ক্ষেত্রে বর্তমানে উজ্জ্বল রং বেশ জনপ্রিয়। পোশাকের বিপরীত রঙের বা রং মিলিয়ে দুই শেডের আইশ্যাডো লাগাতে পারেন। সবশেষে পছন্দমতো লিপস্টিক দিয়ে সাজ শেষ করতে পারেন। চুলে যে যেভাবে আরাম বোধ করেন সেই স্টাইল করতে পারেন। তবে, শাড়ির সঙ্গে পূজার সময় খোপাই বেশ মানায়। আর আলতা, টিপ এবং সিঁদুর ছাড়া তো পূজার সাজ ভাবাই যায় না।
জমকালো সাজে নবমী
নবমীর সাজ সবসময়ই জমকালো। অষ্টমীর দিনের মতো এদিনও জামদানি, কাতান বা সিল্কের শাড়ি কিংবা সালোয়ার-কামিজ পরতে পারেন। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে আইশ্যাডো দিতে পারেন। গাঢ় করে কাজল বা আইলাইনার ব্যবহার করতে পারেন।
দশমীর সাজ
পূজার সবচেয়ে প্রাণবন্ত আর আমেজপূর্ণ দিন হলো বিজয়াদশমী। এই দিনেই সবাই সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠে। দশমীতে লাল শাড়ি, সাদা শাড়ি লাল পাড়ের ঐতিহ্য লক্ষ্য করা যায়। দশমীর আয়োজনের মতো সাজপোশাকও হয় জমকালো। এদিন চোখজোড়া উজ্জ্বল রঙে কিংবা স্মোকি লুকে সাজাতে পারেন। সঙ্গে মোটা করে কাজল, আইলাইনার, মাশকারা পরুন। আবার আইলাইনার এড়িয়ে শুধু আইশ্যাডোতে চোখে গর্জিয়াস স্নিগ্ধ লুক আনা যায়। গালে ব্লাশন আর ঠোঁটে গাঢ় রঙের লিপস্টিক দিন। খোঁপা কিংবা খোলা চুলে জড়িয়ে নিন তাজা ফুল। হ
লেখা : ফাতেমা ইয়াসমিন
মডেল : আয়রা আরা স্বর্ণা, অনন্য সাহা রুবায়েত অদিতি ও দেবলীনা সুর