কলমিশাক কেন খাবেন

22 Oct 2023, 03:24 PM অন্যান্য শেয়ার:
কলমিশাক কেন খাবেন

কলমি বর্ষাকালীন শাক হলেও এখন সারাবছরই বাজারে পাওয়া যায়। তবে বর্ষা মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। কলমিশাক আমাদের দেশে পুকুর, নদী-নালা, ডোবা, হাওর ও খাল-বিলে অযতœ অবহেলায় এমনিতেই জন্মে।

পূর্ব-দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কলমি শাকের চাষ করা হয়। এছাড়া প্রাকৃতিকভাবে পানিতে বা পানির ধারের ভেজা স্যাঁতসে্যঁতে মাটিতে এমনিতেই এই গাছ জন্মে থাকে। আর বেশি যতœআত্তিরও দরকার হয় না। মালয়ি ও চীনা খাবারে পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ কলমিশাকের প্রচুর ব্যবহার রয়েছে। বাংলাদেশেও এটি শাক হিসেবে বেশ জনপ্রিয় এবং অনেকেরই পছন্দের সবজি। আমাদের দেশের মানুষ কলমিশাক সাধারণত ভাজি হিসেবে রান্না করে খেতে পছন্দ করেন। এছাড়া মাছ দিয়ে ঝোল রান্না করে খাওয়ার প্রচলন রয়েছে।

কলমিশাকের ডাঁটাগুলো সাধারণত ২-৩ মিটার বা আরো বেশি লম্বা হয়। কলমিশাকের পাতা অনেকটা লম্বাটে ত্রিকোণ আকৃতির বা বল্লমাকার হয়ে থাকে। পাতা ৫-১৫ সে.মি দীর্ঘ এবং ২-৮ সে.মি চওড়া হয়। কলমিশাকের ফুল অনেকটা ট্রাম্পেট আকৃতির এবং ৩-৫ সে.মি চওড়া হয়ে থাকে। ফুলের রং সাধারণত সাদা এবং গোড়ার দিক বেগুনি রঙের হয়ে থাকে। ফুলে বীজ হয় এবং বীজ থেকেও গাছ লাগানো যায়।

পুষ্টিমান বিবেচনায় এনে কলমিশাকের বহুল চাহিদার কথা মাথায় রেখে এর বাণিজ্যিক হারে চাষাবাদ হচ্ছে ।

কলমিশাকে প্রচুর পরিমাণে শর্করা, ভিটামিন এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম, লৌহ ও অন্যান্য ভরপুর পুষ্টি উপাদান রয়েছে। খাদ্য উপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম দেশীয় কলমিশাকে ১.৮ গ্রাম প্রোটিন, ৯.৪ গ্রাম শর্করা, ০.১ গ্রাম স্নেহ বা চর্বি, ০.১৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১ [থায়ামিন], ০.৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ [রাইবোফেভিন], ৪২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ১০৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৩.৯ মিলিগ্রাম লৌহ, ১০,৭৪০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন ও ৪৬ কিলো ক্যালোরি খাদ্যশক্তি থাকে।

চলুন জেনে নিই কলমি শাকের কিছু পুষ্টিগুণের কথা

ষ আমাদের শরীরে অনেক সময় অনাকাক্সিক্ষত কিছু ফোড়া উঠতে দেখা যায়। এরকম ফোড়া হলে কলমি পাতা এবং আদা বেটে লাগালে ফোড়া ফেটে যাবে এবং পুঁজ বেরিয়ে শুকিয়ে যাবে।

ষ পিঁপড়া, মৌমাছি কিংবা পোকামাকড় কামড়ালে কলমিশাকের পাতা ডগাসহ রস করে আক্রান্ত ¯’ানে লাগালে যন্ত্রণা কমে যায়।

ষ ইদানীং আমাদের অনেকেরই কোষ্ঠকাঠিন্য বেশি দেখা যা”েছ। কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কলমিশাকের সঙ্গে আখের গুড় মিশিয়ে শরবত বানিয়ে সকাল-বিকাল একসপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া যায়। আমাশয়েও এ সরবত ভালো কাজ করে।

ষ গর্ভাব¯’ায় অনেক মায়েদের শরীরে পানি আসে। কলমিশাকের সঙ্গে রসুন দিয়ে ভেজে তিন সপ্তাহ খেলে পানি কমে যায়।

ষ প্রসূতি মায়েদের সন্তান যদি মায়ের দুধ কম পায় তাহলে কলমিশাক ছোটো ছোটো মাছ দিয়ে রান্না করে খেলে মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি পায়।

ষ কলমি শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। কমলিশাক নিয়মিত খেলে শরীরের হাড় মজবুত হয়। তাই ছেলেবেলা থেকেই শিশুদের কলমিশাক খাওয়ানো উচিত।

ষ কলমিশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি থাকার ফলে এই শাক নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

ষ কলমিশাক বসন্ত রোগের প্রতিষেধক হিসেবে দারুণ কাজ করে।

ষ কমলিশাকে প্রচুর পরিমাণে লৌহ থাকায় এই শাক রক্তশূন্যতার রোগীদের জন্য বেশ উপকারি। হ

আনন্দভুবন ডেস্ক