নজরুলের জীবনভিত্তিক কাব্যনাট্য ‘আয় দুখু আয়’ মঞ্চায়িত

01 Oct 2023, 01:34 PM আবৃত্তি শেয়ার:
নজরুলের জীবনভিত্তিক কাব্যনাট্য  ‘আয় দুখু আয়’ মঞ্চায়িত

১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল হলে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের শৈশব-কৈশোর-জীবন উপজীব্য করে কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা রচিত কাব্যনাট্য ‘আয় দুখু আয়’ মঞ্চায়িত হয়। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন আবৃত্তিশিল্পী ও নির্দেশক ইকবাল খোরশেদ। দেশের বিভিন্ন সংগঠনের গুণী কয়েকজন আবৃত্তিশিল্পী কাব্যনাট্যের বিভিন্ন ভূমিকায় অংশগ্রহণ করেন।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের শৈশব-কৈশোর-জীবন অবলম্বনে রচিত ‘আয় দুখু আয়’ কাব্যনাট্যে কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী সত্তার ভিত্তিভূমি সন্ধানের প্রয়াস পেয়েছেন।

১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে কাজী ফকির আহমদ এবং জাহেদা খাতুনের ঘরে নজরুলের জন্মের মধ্য দিয়ে ‘আয় দুখু আয়’ আখ্যানের শুরু।

নজরুলের যখন জন্ম হয় তখন থেকেই কাজী ফকির আহমদ শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। সম্ভবত সেই কারণেই তার নাম রাখা হয় দুখু মিয়া। কাজী ফকির আহমদ মসজিদের ইমাম ছিলেন এবং কবিতার প্রতি তার আগ্রহ ছিল। তিনি অবলোকন করেছিলেন যে, ছেলেবেলায় মক্তবে পড়াকালীনই নজরুল শব্দের সঙ্গে শব্দের মিল দিতে ভালোবাসতেন। কাব্যনাট্যে আরো দেখানো হয় যে, শৈশবকাল থেকেই নজরুলের লোকনাট্যের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়েছিল এবং তার চাচা বজলে করিম এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

কাজী ফকির আহমদের মৃত্যুর পর পরিবারটি আর্থিকভাবে সংকটে পড়ে। নজরুল বাড়ি ছেড়ে উপার্জনের জন্য একটি ভ্রাম্যমান লেটোদলে যোগ দেন।

আবৃত্তি সংগঠন মুক্তবাকের আয়োজনে এতে শৈশবের দুখুর ভূমিকায় তীর্থ হাসান, কিশোর দুখুর ভূমিকায় ঋদ্ধ হাসান, কাজী ফকির আহমদের ভূমিকায় মনোয়ার মাহমুদ জুয়েল, জাহেদা খাতুনের ভূমিকায় নুৎফা বিনতা রাব্বানী, বজলে করিমের ভূমিকায় শামীম শেখ, কবিয়াল ফৈজালের ভূমিকায় সৈয়দ ফয়সল আহমদ এবং কবিয়াল চকর গোদার ভূমিকায় তিতাস রোজারিও রূপদান করেন। কাব্যনাট্যের সূত্রধরের ভূমিকায় ছিলেন নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলী, শিরিন ইসলাম, কাজী বুশরা আহমেদ তিথি, সৈয়দ ফয়সল আহমদ, তিতাস রোজারিও এবং সিফাত সালাম। এছাড়াও শিশুশিল্পী তুহি রোজারিও, কাজী প্রিয়তা শাহরিয়ার, হাফসা মৃত্তিকা আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করেন। নাচে অংশগ্রহণ করেন দৃষ্টি, মাহিয়া, জাসিয়া, শ্রীধা, নাওয়াল, অনিন্দিতা, মৃত্তিকা, আরিশা ও কৃত্তিকা।

‘আয় দুখু আয়’ প্রযোজনার নির্দেশক ইকবাল খোরশেদ এই প্রতিবেদককে জানান, “নজরুল আমাদের কাছে বিদ্রোহী কবি হিসেবে সমাদৃত। ছেলেবেলায়ই তিনি বিদ্রোহ করেছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর নজরুল তার মায়ের আপত্তি সত্ত্বেও জীবিকা নির্বাহের জন্য বাড়ি ছেড়েছিলেন।” তিনি আরো বলেন, “নজরুলের সাহিত্যকর্ম ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মোহাম্মদ নুরুল হুদা ‘আয় দুখু আয়’তে নজরুলের বিদ্রোহী চেতনার পেছনের কারণ অনুসন্ধানে প্রয়াসী হয়েছেন বলে মনে করি।” 

প্রতিবেদন : এষা এমেলি