ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিদায়

12 Apr 2023, 01:12 PM শ্রদ্ধাঞ্জলি শেয়ার:
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিদায়

বীর মুক্তিযোদ্ধা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মঙ্গলবার [১১ এপ্রিল] রাত সোয়া ১১টায় তার প্রতিষ্ঠিত গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। [ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন...]।

সোমবার [১০ এপ্রিল] ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। মঙ্গলবার দুপুর ২টা ১৫ মিনিট থেকে তার কিডনির ডায়ালাইসিস শুরু হয়। একই সঙ্গে চলে অন্যান্য চিকিৎসাও। তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন।

এর আগে, গত ৭ এপ্রিল, ২০২৩ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে। দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতার পাশাপাশি গত কয়েকদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানান জটিলতায়ও ভুগছিলেন তিনি। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ ডিসেম্বর, চট্টগ্রামের রাউজানে জন্মগ্ৰহণ করেন। সে হিসেবে ৮১ বছরের বেশি বয়সে মৃত্যুবরণ করলেন দেশের খ্যাতনামা এই জনস্বাস্থ্যবিদ।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী ঢাকার বকশিবাজারের নবকুমার উচ্চবিদ্যালয় থেকে মেট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে বিলেতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থেকে এফআরসিএস প্রাইমারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এফআরসিএস পড়াকালীন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করে লন্ডন থেকে ভারতে ফিরে এসে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য আগরতলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন এবং ডা. এম এ মবিনের সঙ্গে মিলে সেখানেই ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেন। তিনি সেই অল্প সময়ের মধ্যে অনেক নারীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য জ্ঞান দান করেন যা দিয়ে তারা রোগীদের সেবা করতেন। তার এই অভূতপূর্ব সেবাপদ্ধতি পরে বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল পেপার ল্যানসেট-এ প্রকাশিত হয়। 

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে জাতীয় ওষুধ নীতি প্রণয়নে  গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।


জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হন। 

মৃত্যুকালে জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্ত্রী শিরিন হক, কন্যা বৃষ্টি আন্না চৌধুরী, ছেলে বারিশ হাসান চৌধুরী এবং আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য অনুরাগী ও ভক্ত রেখে গেছেন।