গানের টানে পরিবার ছেড়ে কুয়েত থেকে বাংলাদেশে কোনাল

15 Sep 2022, 03:37 PM সারেগারে শেয়ার:
গানের টানে পরিবার ছেড়ে কুয়েত থেকে বাংলাদেশে কোনাল

বর্তমান প্রজন্মের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সোমনূর মনির কোনাল। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে তার কণ্ঠের মাধুর্য দিয়ে গান গেয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রেখেছেন। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। মেটালিক গান, নাটকের গান, দেশ ও দেশের বাইরের স্টেজ শো এবং সিনেমার প্লেব্যাক নিয়ে দারুণ ব্যস্ত সময় পার করছেন কোনাল। সংগীতশিল্পী কোনালকে নিয়ে বিস্তারিত থাকছে এবারের আনন্দভুবনের সারেগারে আয়োজন। লিখেছেন শহিদুল ইসলাম এমেল ...


‘চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ২০০৯’ বিজয়ী সোমনূর মনির কোনাল বর্তমানে সিনেমায় প্লেব্যাক নিয়ে দারুণ ব্যস্ত। এছাড়া নাটকের গান, ওপেন কনসার্ট, মৌলিক গান, মিউজিক ভিডিও নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সম্প্রতি এনটিভির ‘শহর বাস’ নামে একটি নাটকের টাইটেল সং-এর কাজ শেষ করলেন, একটি বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলে ভয়েস দিলেন। এছাড়া কিছুদিন আগে গাঙচিলের ব্যানারে বিশাল আয়োজনের একটি গানের কাজও শেষ করেছেন। গানটিতে কোনালের সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন মার্সেল। গানটির কথা লিখেছেন লুৎফর রহমান এবং সংগীত আয়োজন করেছেন মার্সেল। গানটির মিউজিক ভিডিও করা হয়েছে। এছাড়া প্রথমবারের মতো সংগীতশিল্পী মিলনের সঙ্গে একটি দ্বৈত গান গেয়েছেন কোনাল। গানটির সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমরান মাহমুদুল।

একের পর এক নাটক এবং সিনেমায় প্লেব্যাক করে যাচ্ছেন কোনাল। সবশেষ ‘জামদানি’ সিনেমায় প্লেব্যাক করেন তিনি। ‘চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ২০০৯’-এ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সিনেমায় গান করে চলেছেন এই শিল্পী। নতুন মিউজিক ভিডিও সামনে আসবে। মিউজিক ভিডিওর জন্য কয়েকটি গান করা আছে। লেভেলগুলো নিজেদের মতো করে ভিডিওর জন্য প্লান করা হচ্ছে।

গত দুই ঈদে মোট ৮টি নাটকের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কোনাল। তিনি বলেন, নাটকের গান দিন দিন ভিন্নভাবেই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এখন তো প্রায় নাটকেই গান থাকে। দেখতেও ভালো লাগে। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর খুব একটা কাজ করতে পারেননি। এখন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কারণে স্টেজ শো নিয়ে প্রচুর ব্যস্ত সময় পার করছেন কোনাল। এ প্রসঙ্গে কোনাল বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় অনেক স্টেজ শো করছি। অনেক কাজ করছি। আগস্ট মাস শোকের মাস তাই আগস্ট মাসে কাজ বন্ধ ছিল। সেপ্টেম্বর মাস থেকে আবারো ব্যস্ততা বাড়বে। শ্রোতারাও সব সময় অপেক্ষায় আছে কখন একজন পছন্দের শিল্পীর গান শুনবে। তাই স্টেজ শোগুলোতে অন্যরকম আনন্দ পাওয়া যায়।’

‘চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ২০০৯’ বিজয়ী হওয়ার অনুভূতি প্রসঙ্গে বলেন, যেকোনো প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা সবারই ভালো লাগে। ‘চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ২০০৯’ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আমারও খুব ভালো লেগেছিল। সংগীত নিয়ে একটি বিশেষ স্মৃতি জানতে চাইলে বলেন, ‘সংগীত ব্যাপারটাই আমার কাছে বিশেষ স্মৃতি। আমি যে গান গাই, মানুষের ভালোবাসা পাই এর থেকে বিশেষ স্মৃতি আর কিছু হতে পারে না।’

সংগীত নিয়ে নিজের ভাবনা ও পরিকল্পনা প্রসঙ্গে কোনাল বলেন, ‘গান করে যাব যতদিন শ্রোতারা চাইবে। আমি শুধু গানকে ভালোবেসে কুয়েত থেকে চলে এসেছি। গানের জন্য আমার মধ্যে সবসময় এক ধরনের প্যাশন কাজ করে। আমি আজীবন গান করে যেতে চাই।’

সোমনূর মনির কোনাল গান গাওয়ার পাশাপাশি গবেষণাও শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের জীবনে গানের প্রভাব রয়েছে অনেক। তাই গান নিয়ে গবেষণা করছি। আমরা কিন্তু আমাদের মন খারাপ অথবা ভালো থাকলেও গান শুনি। আসলে গান মানুষের জীবনের সঙ্গে কতটুকু জড়িয়ে আছে সেটা জানতে চাই।’

মানিক গঞ্জের মেয়ে কোনাল। পিতার পেশার কারণে কুয়েতে বড়ো হয়েছেন। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে মায়ের অনুপ্রেরণায় শুধু সংগীতকে পেশা হিসেবে নিতে সুদূর কুয়েত থেকে পরিবার ছেড়ে একাই চলে আসেন কোনাল। কোনালের পরিবার সবাই কুয়েত প্রবাসী। জন্মের মাত্র ৪ বছর পর বাবা-মায়ের সঙ্গে কুয়েতে চলে যান। বড়োও হয়েছেন সেখানেই। কোনালের মাও একজন সংগীতশিল্পী। মায়ের কাছেই সংগীতের শুরু এবং হাতেখড়ি।