শীতের শাল

14 Dec 2021, 01:51 PM অভোগ শেয়ার:
শীতের শাল

একটু একটু করে শীতের বুড়ি জেঁকে বসছে প্রকৃতির বুকে। সকালবেলা  হালকা একটু  চাদর গায়ে না জড়ালেই নয়। শীতকাল যেহেতু চলেই এলো শীতের অনুষঙ্গগুলোর দিকে নজর দিতে হবে। শীতের বুড়িকে টেক্কা দিতে শীতের কাপড়চোপড়ের আয়োজন করতে হবে এখন থেকেই। আর এই আয়োজনের সবচেয়ে বড়ো অনুষঙ্গ হলো শীতের শাল। শীতের ফ্যাশনের কথা চিন্তা করলে তা কখনোই শাল ছাড়া সম্পূর্ণ নয়। শাল সব বয়সী মানুষের কাছেই দারুণ

প্রিয়। শাল নিয়ে থাকছে এবারের অঁভোগ আয়োজন... 

শাল এখন রীতিমতো ফ্যাশনের একটা অংশ। ছেলেমেয়ে সবার কাছেই শালের জনপ্রিয়তা অনেক।  সোলোয়ার-কামিজ, শাড়ি, কুর্তি, টপস, ফতুয়া-জিনস, টি-শার্ট ও শার্ট সবকিছুর সঙ্গেই সহজে মানিয়ে যায় শাল। পরা যায় নতুন নতুন নানা স্টাইলে। তাই এর সঙ্গে  যেকোনো সাধারণ পোশাকেও হয়ে ওঠা যায় স্টাইলিশ। ছেলেমেয়ে সবাই সালোয়ার-কামিজ, শাড়ি, টপস, কুর্তি ও লং ড্রেস-সহ বিভিন্ন ফ্যাশনেবল পোশাকের সঙ্গে শাল পরতে পছন্দ করছেন। কখনো কখনো ওড়নার পরিবর্তে নানা স্টাইলে ওড়নার মতো করে জড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে শাল। পেঁচিয়ে নেওয়া হচ্ছে স্কার্ফ ও মাফলারের মতো করেও। একইভাবে ছেলেরাও স্টাইলিশ নানা স্টাইলে জড়াচ্ছে শাল। 

শালের ক্ষেত্রে খাদি শালের চাহিদা সবসময় অনেক। খাদি কাপড়ে এমনিতেই আলাদা একটা স্ট্রাকচার আছে। যে-কারণে খুব বেশি নকশা করার দরকার পড়ে না। তারপরও খাদি শালের নকশায় এখন অনেক নতুনত্ব এসেছে। একরঙের পাশাপাশি চেকের খাদি শালও আকর্ষণীয়। ফ্যাশন সচেতনদের কাছে খেশ, জামদানি, সিল্ক ও তাঁতের শালের চাহিদা তুঙ্গে। পশমিনা শালেরও জনপ্রিয়তাও আমাদের দেশে অনেক। দিন দিন দেশীয় শালের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। দেশীয় শালে প্রতিবছর যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন নকশা। তাতে কখনো উঠে আসছে প্রিন্ট, হাতের কাজ, সিকোয়েন্সের কাজ, জরি, চুমকি, পুঁতির কাজ তো কখনো দু’রঙের ব্যবহার ও কয়েক টুকরা কাপড় একসঙ্গে জোড়ানকশা প্রভৃৃতি দেখা যাচ্ছে। একরঙা পাতলা ওড়না শালগুলো হালকা শীতের জন্য বেশ আরামদায়ক ও আকর্ষণীয়। টুকরা টুকরা কাপড় জুড়েও এখন শালে ডিজাইন করা হচ্ছে। যাকে বলা হয় প্যাচওয়ার্ক। এই শালগুলোও এখন বেশ জনপ্রিয়। ফ্যাশন উপযোগী এসব শাল বেশ আরামদায়কও। এ শালগুলো চাইলে আটপৌরে ব্যবহার করতে পারেন, আবার অনায়াসে যেকোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় গায়ে জড়িয়ে যেতে পারেন। সিল্কের কাপড়ের ওপর নকশিকাঁথার ফোঁড় এপার-ওপার ঘুরে বেড়িয়েও নকশা তোলা হচ্ছে শালে। 

বিদেশি শালের মধ্যে কাশ্মীরি শাল সবসময়ই জনপ্রিয়। এ শালের জমকালো নকশা এবং উষ্ণতার কারণে অনেকেই পছন্দ করেন। আমাদের দেশে ভেলভেটের শালের জনপ্রিয়তাও  বেড়েছে। ভেলভেটের শালে যেমন উষ্ণতা পাওয়া যায়, তেমনি তা গর্জিয়াস লুক আনে। কারচুপি, স্যামো সিল্কের পাইপিং, অ্যাম্ব্রয়ডারি, হ্যান্ড পেইন্টসহ নানা ধরনের কাজ উঠে আসছে ভেলভেটের শালে। শালের চারপাশে অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে ফ্রিল, টার্সেল। এছাড়া রয়েছে লুধিয়ানা, জয়পুরি, চায়নিজ, বার্মিজ-সহ আরও নানারকম শাল।


শালের সমারোহ

ঢাকার প্রায় সব মার্কেটেই কমবেশি বিভিন্ন রকমের শাল পাওয়া যায়। পছন্দসই শাল কিনতে  যেতে পারেন নিউমার্কেট, চাঁদনী চক, গাউছিয়া, রাপা প্লাজা, বসুন্ধরা সিটি ছাড়াও আপনার কাছের যেকোনো মার্কেটে। এ ছাড়া আজিজ সুপার মার্কেটেও বেশ ভালো কালেকশন রয়েছে শালের। একটু ভিন্ন ধরনের শাল পেতে ফ্যাশন হাউজহুলোতে ঢু মারতে পারেন। 

দরদাম

বিভিন্ন মার্কেটে কাপড় ও প্রিন্টের ধরন এবং হাতের কাজের প্রকৃতিভেদে সুতির শাল পাবেন ২৫০-৬৫০ টাকায়। কাশ্মীরি কিংবা পশমি ধাঁচের শালগুলো পেতে হলে আপনাকে গুনতে হতে পারে ৬০০ থেকে মানভেদে ৪০০০ টাকা পর্যন্ত। খদ্দরের চাদর ৪৫০-১২০০ এবং সিল্ক শাল ৬০০-১৮০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। ফ্যাশন হাউজগুলোতেও ৪৫০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে আপনার পছন্দের শালটি পেয়ে যাবেন। এ ছাড়া নিজে পছন্দ করে শাল বানিয়ে নিতে কিংবা এমব্রয়ডারি করে নিতে পারেন নিউমার্কেটের বেশ কিছু দোকান থেকে, যেখানে ডিজাইন ও কাজের তারতম্যভেদে দাম পড়বে ৬০০ থেকে ৩০০০ টাকা। 

লেখা : ফাতেমা ইয়াসমীন, 

মডেলঃ রুবাইয়াৎ অদিতি

ছবিঃ সীমান্ত ঘোষ 

শালঃ সাতকাহন