সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-কে হত্যা করার ৪৬ বছর পর নির্মিত হচ্ছে তাঁর জীবনভিত্তিক চলচ্চিত্র। আর এই চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য নির্বাচিত হন পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ এবং দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কারজয়ী নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত এ চলচ্চিত্র বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর আগেই নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বৈশ্বিক মহামারির কারণে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে ভারতের অংশের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে এখন বাকি রয়েছে বাংলাদেশ অংশের কাজ। ছবিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরেফিন শুভ।
বিস্তারিত লিখেছেন শেখ সেলিম...
মুজিব জন্মশতবর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশতম বার্ষিকী উপলক্ষে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু বায়োপিক’। বাংলা ভাষা ছাড়াও হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় ডাবিং হবে সিনেমাটি। শুটিং শুরুর কথা ছিল অনেক আগে। কিন্তু বাদ সেধেছিল বৈশ্বিক মহামারি করোনা। পরিস্থিতি একটু ভালো হতেই পুরোদমে কাজ শুরু করে দিয়েছেন ৮৬ বছর বয়েসি শ্যাম বেনেগাল।
ভারতের বিনোদনের রাজধানী মুম্বাইয়ে শহরতলির দাদাসাহেব ফালকে ‘চিত্রনগরী’ সেখানেই শুরু হয় বহুপ্রতীক্ষিত ‘বঙ্গবন্ধু বায়োপিক’র শুটিং। বেশ কয়েকটি লোকেশনে তৈরি করা হয় সেট। কোথাও টুঙ্গিপাড়ার বাইগার নদীর ঘাট বা ফুটবল খেলার মাঠ, কোথাও আবার শেখ মুজিবের স্মৃতিবিজড়িত কলকাতার বেকার হোস্টেল।
বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রনায়ক জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে ভারত ও বাংলাদেশ সরকার মিলে তার জীবন নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করবে, এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগেই। ‘বঙ্গবন্ধু’ নামে এই ছবিটির সম্ভাব্য পরিচালক হিসেবে তিনজনের নামও প্রস্তাব করে ভারত, যার মধ্যে থেকে বলিউডের খ্যাতিমান নির্মাতা শ্যাম বেনেগালকেই বেছে নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু এরপর কোভিড মহামারি ও আরো নানা কারণে সেই ছবির শুটিং বারেবারে বিলম্বিত হয়। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই বছরের ২১ জানুয়ারি মুম্বাইতে মহরতের মাধ্যমে শুরু হয় ছবির প্রথম পর্বের কাজ।
স্বপ্নের আকাশে যার হাত ধরে উড়েছিল একটি স্বাধীন দেশের পতাকা তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের গুণে তিনি অর্জন করেন বিশ্বনেতার স্থান। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রনায়কদের নিয়ে সিনেমা নির্মাণ হলেও স্বাধীনতার এত বছর পরেও বঙ্গবন্ধুর মতো মহান নেতাকে নিয়ে নির্মিত হয়নি কোনো চলচ্চিত্র। অবশেষে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় সিনেমা নির্মিত হতে যাচ্ছে জাতির পিতাকে নিয়ে।
সায়েরা খাতুন চরিত্রে দিলারা জামান
ফজিলাতুন নেছা মুজিব চরিত্রে নুসরাত ইমরোজ তিশা
শেখ হাসিনার চরিত্রে নুসরাত ফারিয়া
ছবিতে জাতির পিতার চরিত্রে অভিনয় করছেন আরেফিন শুভ, সায়েরা খাতুন চরিত্রে দিলারা জামান, ফজিলাতুন নেছা মুজিব চরিত্রে নুসরাত ইমরোজ তিশা, শেখ হাসিনার চরিত্রে দুজন নুসরাত ফারিয়া এবং জান্নাতুল সুমাইয়া। খন্দকার মোশতাকের চরিত্রে ফজলুর রহমান বাবু, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর চরিত্রে তৌকির আহমেদ, আইয়ুব খানের চরিত্রে দেখা যাবে মিশা সওদাগরকে।
ভিনদেশি পরিচালক হলেও যথেষ্ট সময় নিয়ে গবেষণা করে সিনেমা নির্মাণ করলে শ্যাম বেনেগালের হাতেই হতে পারে বঙ্গবন্ধুর ভালো বায়োপিক, বলছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। তবে, পরিচালক বা অভিনয়শিল্পী যে বা যে দেশেরই হোক না কেন, সকলেরই প্রত্যাশা একজন পিতা, রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতার স্থপতি এবং রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর সকল বর্ণনাই ফুটে উঠবে এই চলচ্চিত্রে।
আরেফিন শুভ। একজন মেধাবী অভিনয়শিল্পী। শুরু থেকেই নিজেকে ভেঙে চলেছেন। হয়েছেন প্রশংসিত। সাবলীল অভিনয়ের কারণে সুযোগ পান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক সিনেমায়। বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিকে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে রীতিমতো অভিভূত এই অভিনেতা। তাই তো মাত্র এক টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন তিনি। এপ্রিল থেকে ভারতে শুরু হয় ছবিটির কাজ। এই বছরের এপ্রিলে মুম্বাই থেকে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ প্রযোজনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীনির্ভর সিনেমা ‘বঙ্গবন্ধু’র ভারতীয় অংশের শুটিং শেষ হয়েছে। বাংলাদেশ অংশের শুটিং হওয়ার কথা এই বছরেরই সেপ্টেম্বর মাসে। এই দিকে ‘নূর’ সিনেমার শুটিং করার কথা ছিল আরিফিন শুভর। সিনেমাটির লুক-জটিলতায় সেই শুটিং পিছিয়েছে কয়েক মাস। ছবিটি পরিচালনা করবেন রায়হান রাফি। অ্যাকশনধর্মী ছবিটি প্রযোজনা করছে শাপলা মিডিয়া।
বর্তমানে আরেফিন শুভ চিকিৎসকদের পরামর্শে বিশ্রামে আছেন। ‘মিশন এক্সট্রিম’-এ শুভর সিক্স প্যাক শরীরে হাজির হওয়ার কথা ছিল। তারই প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে হঠাৎ পায়ের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায়। সেই সময় একমাসের বেশি বিশ্রামে ছিলেন তিনি। ঈদের আগে হঠাৎ করেই সেই ব্যথা আবার বেড়ে যায়। ঈদে সব সময়ই বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আড্ডা দেন শুভ। একান্তই নিজের মতো করে সময় কাটানোর চেষ্টা করেন। শুভ বলেন, দেড় বছর ধরে ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমার শুটিং করেছি। সিনেমাটির সব কাজ শেষ। গেল বছর রোজার ঈদে মুক্তির কথা ছিল। শুরু হয় করোনা। পরে এই বছরও রোজার ঈদে মুক্তিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় করোনা। সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে। তারপরও আশাবাদী আরিফিন শুভ। স্বপ্ন দেখেন, সুদিন ফিরবে। তার হাতে রয়েছে একাধিক সিনেমার শিডিউল।
বর্তমানে ঢাকার চলচ্চিত্রে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় নায়কদের একজন আরিফিন শুভ। এরই মধ্যে তাকে নিয়ে দর্শক ও পরিচালক মহলে এক আস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শিল্পী সংকটের এই মুহূর্তে আরেফিন শুভ নামটি বেশ শক্ত অবস্থানে। ঈদে নিজের অভিনীত সিনেমা নিয়ে অনেক এক্সসাইটেড থাকেন শুভ। সেই জায়গা থেকে কিছুটা কষ্টে রয়েছেন তিনি। দুই ঈদ সিনেমাহীন। কবে পরিস্থিতি ভালো হবে, সেটাও জানেন না কেউ।
বঙ্গবন্ধু বায়োপিকে অভিনয় প্রসঙ্গে শুভ বলেন, আমি একজন চলচ্চিত্রের ক্ষুদ্র শিল্পী। এত বড়ো একজন মানুষের বায়োপিকে কাজ করতে পেরে আমি আনন্দিত, এটা আমার অনেক বড়ো একটা অর্জন। শুধু বাঙালির কাছে নয়, বিশ্ববাসীর কাছেও বঙ্গবন্ধু একজন সৎ ও সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে সুপরিচিত বিশ্বপ্রিয় নাম। এই মহান মানুষটিকে কিছু সময়ের জন্য ধারণ করার সুযোগ পেয়েছি। এটা যে কত বড় সম্মানের, বলে বোঝাতে পারব না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে বর্ণাঢ্য জীবন, তা অভিনয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করার সুযোগ পাওয়াটা যেকোনো শিল্পীর জন্য এক বিরল সৌভাগ্যের ব্যাপার। আমি সেই ভাগ্যবানদের একজন, অভিনয়ের খুব অল্প বয়েসে যাকে উপস্থাপন করার সুযোগ পেয়েছি।’
বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয়ের আগে প্রস্তুতি প্রসঙ্গে শুভ বলেন, ‘যখন থেকে ছবিটির প্রস্তাব পেয়েছি, তখন থেকেই আমার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যত ধরনের ভিডিও ও তথ্যচিত্র রয়েছে, সবই দেখেছি। তাঁর দেওয়া ভাষণ যে কতবার দেখেছি কোনো হিসাব নেই।’
ছবিতে আরেফিন শুভ মাত্র এক টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের ১১ বছর ৪ মাস ২২ দিন কারাগারে কাটিয়েছেন। এই মানুষটার চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য স্যাক্রিফাইস। জীবদ্দশায় মানুষ ও দেশের জন্য তিনি শুধু ত্যাগই করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর সাহস ও স্যাক্রিফাইসের কাছে আমার এই স্যাক্রিফাইস কিছুই নয়। মনে হয়েছে, এই সামান্য স্যাক্রিফাইসের মাধ্যমে তাঁর চরিত্রের গভীরতা কিছুটা হলেও উপলব্ধি করতে পারব। সেই ভাবনা থেকেই সম্মানিত নির্মাতাকে বলেছিলাম, প্রাপ্য যা-ই হোক, আমি নেব না। এ-ও বলেছিলাম, যেহেতু আমার রক্ত, ঘাম সবই এই সিনেমায় থাকবে, পরিশ্রম করব ফ্রি কাজ করব না। আমি এক টাকা নেব এবং এক টাকাই নিয়েছি।’
বিশ্রামে শুভ
‘মিশন এক্সট্রিম’ ছবির জন্য বডি ট্রান্সফরমেশন করেছিলেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক আরিফিন শুভ। দীর্ঘ নয় মাস পরিশ্রম করে আকর্ষণীয় ফিগার দিয়ে সবাইকে চমকে দেন এই অভিনেতা। সে সময় ঘটে একটি দুর্ঘটনা পায়ে ব্যথা পান তিনি। সেই ব্যথা এখনও ভোগাচ্ছে। বলতে গেলে দাঁড়াতেই পারছেন না তিনি। শারীরিক পরিশ্রমের কোনো কাজ করতে পারবেন না তিনি। থাকতে হবে পুরো বিশ্রামে। ৩১ জুলাই হাসপাতাল থেকে এমন কথাই জানিয়েছেন চিকিৎসক। শুভ বলেন, ‘এমআরআই করেছি। ফলাফল দেখে চিকিৎসকেরা জানান, আগামী তিন সপ্তাহ নিয়মিত থেরাপি নিতে হবে আমাকে। এর আগে কিছুই বলা যাবে না।’
দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চলার পরও ঈদের আগে সেই ইনজুরি এমন অবস্থায় গিয়েছিল যে, দাঁড়াতে পারছিলেন না। তারপর ২৪ জুলাই রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে এমআরআই করান তিনি। সেই ফলাফল দেখে থেরাপির সিদ্ধান্তের কথা জানান চিকিৎসক। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের জন্য কাজ করা ইনজুরি বিশেষজ্ঞ দেবাশীষ চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে শুভ’র।
খন্দকার মোশতাকের চরিত্রে ফজলুর রহমান বাবু
আইয়ুব খানের চরিত্রে দেখা যাবে মিশা সওদাগ
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর চরিত্রে তৌকির আহমেদ
একনজরে শুভ
আরেফিন শুভ ২০০৫ সালে র্যাম্প মডেল হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। নীলাঞ্জনা পল্লী আনন্দভুবন ঈদ ফ্যাশন শো করেন কয়েক বছর। মূলত সেখান থেকেই ক্যারিয়ারের শুরু তার। ২০০৭ সালে মেরিল ট্যালকম পাউডারের বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হন শুভ। সেই বিজ্ঞাপনচিত্রে শুভর সহশিল্পী ছিলেন প্রভা। একই বছর ক্লোজআপের বিজ্ঞাপনচিত্রেও মডেল হন শুভ। দুটি বিজ্ঞাপনচিত্রই শুভকে পরিচিতি এনে দেয়। সে বছরেই প্রথম নাটকে অভিনয় করেন শুভ। ‘হ্যাঁ না’ শিরোনামের নাটকের মাধ্যমে অভিনয়ে অভিষেক হয় শুভর। এরপর ‘ওয়েটিং রুম’, ‘ইজ ইক্যুয়াল টু’ প্রভৃতি নাটক করে নিজের জাত চেনান শুভ।
২০১২ সালে চুক্তিবদ্ধ হন মুস্তফা কামাল রাজের ‘ছায়া-ছবি’ সিনেমায়। যদিও এর আগেই ২০১০ সালে খিজির হায়াত খানের ‘জাগো’ চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করে অভিষেক হয় চলচ্চিত্রে। ‘ছায়া-ছবি’তে শুভর গেটআপ বেশ প্রশংসিত ছিল, ছবিটি আশানুরূপ সাড়া না পেলেও প্রশংসায় ভাসেন শুভ। সুযোগ আসতে থাকে একের পর এক সিনেমার। ২০১৩ সালে সাফিউদ্দিন সাফি পরিচালিত শাকিব খান, জয়া আহসানের সঙ্গে ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী’তে খল চরিত্রে অভিনয় করেন শুভ। এই ছবিতে শুভর লিপে ‘আমি নিঃস্ব হয়ে যাব’ গানটি দারুণ দর্শকপ্রিয়তা পায়। একইবছর মুক্তিপ্রাপ্ত আরেকটি চলচ্চিত্র দেবাশীষ বিশ্বাসের ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’ ব্যবসায়িকভাবে ফ্লপ হয়। হতাশ হননি শুভ। ২০১৪ সালে শুভ অভিনীত তিনটি সিনেমা মুক্তি পায়। এরমধ্যে ‘অগ্নি’ সিনেমাটি ব্যাপক সাড়া ফেলে। দ্বিতীয় ছবি মুস্তফা কামাল রাজের ‘তারকাটা’। ছবিটি দর্শকমহলে আশানুরূপ সাড়া ফেলতে পারেনি। তবে শুভ’র অভিনয় অনেকেই প্রশংসা করেন। শুধু তাই নয়, সমালোচক বিভাগে মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার পান। বছরের শেষে মুক্তি পায় আশিকুর রহমানের বাণিজ্যিক সফল সিনেমা ‘কিস্তিমাত’।
২০১৫ সালের এপ্রিলে মুক্তি পায় শিহাব শাহিন পরিচালিত ‘ছুঁয়ে দিলে মন’। সিনেমাটি ব্যবসাসফল হয়, গানগুলোও বেশ দর্শকপ্রিয়তা পায়। এই ছবি দিয়ে শুভ অর্জন করে দর্শকজরিপে মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার। এই বছরেই মুক্তি পায় আরেকটি চলচ্চিত্র ‘ওয়ার্নিং।
২০১৬ সালে তিনি আশিকুর রহমান পরিচালিত অ্যাকশনধর্মী ‘মুসাফির’-এ অভিনয় করেন যার জন্য তিনি মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পীর পুরস্কার পান। অনন্য মামুন পরিচালিত ‘অস্তিত্ব’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ভালো সাড়া পান। বছরের শেষ দিকে মুক্তি পায় জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘নিয়তি’। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে মুক্তি পায় জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত পথ-রোমাঞ্চকর রোম্যান্টিক প্রেমী ও প্রেমী এবং শামিম আহমেদ রনি পরিচালিত কমেডিধর্মী ‘ধ্যাততেরিকি’। এই ছবিতে শুভ অভিনয় করেও প্রশংসিত হন শুভ।
একই বছরের অক্টোবরে মুক্তি পায় দীপংকর দীপন পরিচালিত পুলিশি অ্যাকশন থ্রিলার ছবি ‘ঢাকা অ্যাটাক’। এই ছবিটি ছিল এ বছরের সবচেয়ে আলোচিত একটি ছবি। মূলত এই ছবি দিয়ে শুভ জানান দিচ্ছিলেন আগামীদিনের নায়ক তিনি। এছাড়াও মুক্তি পায় আরিফিন শুভর ‘আহা রে’ ছবিটি। এই ছবিটি থেকে দর্শকদের কাছ থেকে বেশি ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায় এবং আরিফিন শুভর অভিনয় প্রশংসিত হয়। এই ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। এছাড়াও বছরের শেষদিকে মুক্তি পায় রাজনৈতিক থ্রিলার ‘সাপলুডু’ যা দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।