বাংলা ভাষায় অনুষ্ঠান সম্প্রচার বন্ধ করছে ভয়েস অব আমেরিকা

বাংলাভাষীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় বেতার মাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা [ভিওএ] বাংলা বিভাগের বেতার সম্প্রচার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আগামী ১৭ জুলাই ২০২১-এর পর বেতারে ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা অনুষ্ঠান আর শোনা যাবে না বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড়ো এই আন্তর্জাতিক সম্প্রচার মাধ্যম।

১৯৫৮ সালে সামরিক শাসনের অধীনে থাকা ‘পূর্ব পাকিস্তানে’র বাংলাভাষী জনগণের জন্যই মূলত বাংলায় সংবাদ ও অনুষ্ঠান প্রচার শুরু করে ভয়েস অব আমেরিকা। বাংলাদেশ ভূখণ্ড ছাড়াও প্রতিবেশী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যের বাংলাভাষীরাও এত বছর ধরে শুনে আসছিলেন ভিওএর সংবাদসহ নানা অনুষ্ঠান।

দীর্ঘ ৬৩ বছর পথচলার পর রেডিও-র শ্রোতা কমে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর টেলিভিশন বাজারে এলেও তখন বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যম বলতে সবাই বেতারই চিনত এবং বেতারে প্রচারিত অনুষ্ঠান বা সংবাদই শুনত। তবে বর্তমানে শ্রোতা কমে যাওয়ায় এ মাধ্যমটি আর চালানো সময়োপযোগী মনে করছে না কর্তৃপক্ষ।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভয়েস অব আমেরিকার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেতারে শ্রোতাগোষ্ঠীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় এবং টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দর্শক-অনুসারীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তারা বাংলা এফএম ও শর্টওয়েভে বেতার সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একইসঙ্গে তারা টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলা দর্শক-শ্রোতাগোষ্ঠীর জন্য নতুন অনুষ্ঠান প্রচার বাড়াবে।

তবে, এই পরিবর্তনের কারণে ‘লাইফলাইন’ নামের বেতার অনুষ্ঠানের সম্প্রচার বন্ধ হচ্ছে না। বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য রোহিঙ্গা ভাষায় প্রচারিত ৩০ মিনিটের এই বেতার অনুষ্ঠান চালু থাকবে, যা শুরু হয়েছে ২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে।

ভয়েস অব আমেরিকা [ভিওএ] প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪২ সালে। যেসব দেশে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নেই বা জনগণ সীমিত সংবাদ পায়, তাদের কাছে ভয়েস অব আমেরিকা ৪০টিরও বেশি ভাষায় খবর প্রচার করে বলে জানা যায়।