ভবিষ্যতে সিনেমা নির্মাণ করার ইচ্ছে আছে -জিনাত শানু স্বাগতা

19 Jun 2023, 01:43 PM সারেগারে শেয়ার:
ভবিষ্যতে সিনেমা নির্মাণ করার ইচ্ছে আছে  -জিনাত শানু স্বাগতা

জিনাত শানু স্বাগতা একাধারে অভিনয়শিল্পী, মডেল, কণ্ঠশিল্পী, উপস্থাপক ও নির্দেশক। মাত্র সাড়ে তিন বছর বয়সে ‘নিনজা’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন তিনি। প্রয়াত চিত্রনায়ক মান্নার বিপরীতে ‘শত্রু শত্রু খেলা’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তার। যদিও সংগীতশিল্পী হিসেবেই ছেলেবেলায় তার যাত্রা শুরু। মাঝখানে নানা মাধ্যমে কাজ নিয়ে ব্যস্ততার কারণে সংগীতাঙ্গন থেকে দূরে ছিলেন। যার কারণে গানে খুব একটা পাওয়া যায়নি তাকে। নানা কাজে ব্যস্ততার মাঝেও এবার নতুন গান নিয়ে এলেন তিনি। ‘সে সামথিং’ শিরোনামে এ দ্বৈত গানে তার সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন হাসান আজাদ। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নানা শাখায় বিচরণ করা বহুমুখী প্রতিভার এই শিল্পীকে নিয়ে থাকছে এবারের সারেগারে আয়োজন। লিখেছেন শহিদুল ইসলাম এমেল...



সম্প্রতি জিনাত শানু স্বাগতার ‘সে সামথিং‘ শিরোনামের নতুন একটি দ্বৈত গান প্রকাশিত হয়েছে। গানটিতে স্বাগতার সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন হাসান আজাদ। গানের কথা লেখার পাশাপাশি সুর করেছেন এই সংগীতজুটি। সংগীত আয়োজন করেছেন সন্ধি। ভিডিও নির্দেশনায় অনিন্দ্য কবির অভিক। ২ জুন ২০২৩ শুক্রবার গুলশানের একটি বাড়িতে এ গানটি প্রকাশ হয়।

গানটি সম্পর্কে স্বাগতা বলেন, ‘গত ভালোবাসাদিবসে হাসান আজাদের সঙ্গে আমার দ্বৈত গান ‘বিমস অব লাইট’ প্রকাশ হয়। বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষার এ গানটিতে শ্রোতাদের বেশ সাড়া পেয়েছিলাম। কথা, সুর ও সংগীত মিলিয়ে এবারের গানটিও শ্রোতাদের ভালো লাগবে বলে আশা করছি।’ গানটি স্বাগতার অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুকে প্রকাশ করা হয়েছে।

বর্তমানে বেশকিছু কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্বাগতা। এর মধ্যে তিনটি সিনেমা করেছেন। একটা দুই বছর আগে। আর এই বছর দুটো সিনেমার কাজ শেষ করলেন ডাবিংসহ। একটার নাম ‘দেয়ালের দেশ’ আরেকটার নাম ‘অসম্ভব’। পাশাপাশি গান গাইছেন। প্রতিমাসেই গান বের করবেন। এরমধ্যে দুটো গান বের হয়েছে তার।


এছাড়া নাটক করছেন, ওটিটিতে কাজ করছেন। বৈশাখী টিভিতে আকাশ রঞ্জনের পরিচালনায় ‘বউ শাশুড়ি’ নামে একটি দীর্ঘ ধারাবাহিক নাটক প্রচার হচ্ছে তার। মাঝে মাঝে উপস্থাপনা করছেন। সামনে নতুন টিভি উপস্থাপনা নিয়েও কথা হচ্ছে।

ওয়েব সিরিজ এবং টিভি নাটকের শুটিংয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘সবচেয়ে বড়ো পার্থক্য হলো বাজেট। ওয়েবে বাজেট একটু বেশি থাকে যার কারণে অ্যারেঞ্জমেন্টও বেশি থাকে। টিভি নাটকের এখন যেহেতু বাজেট কম তাই অ্যারেঞ্জমেন্টও কম। আমরা শুরুর দিকে প্রথম যখন টিভিতে কাজ করতাম তখন কিন্তু টিভির কাজের বাজেটও বেশি ছিল। সেই জন্য তখন অ্যারেঞ্জমেন্টও ভালো ছিল। তবে ওয়েবে যেহেতু বর্তমান সময়ের অনেক নতুন নতুন ডিরেক্টরেরা কাজ করছেন তাই কাজের ভাষা একটু ডিফারেন্ট, একটু মডার্ন এখনকার সময়ের মতো। ধরুন, আপনার যদি বাজেট বেশি থাকে তাহলে আপনি বেশিদিন ধরে শুটিং করতে পারবেন। ধরে ধরে কাজ করতে পারবেন। আপনি একটা ভালো ক্যামেরা ভাড়া করতে পারবেন। আপনার যদি ১৫ জন আর্টিস্ট লাগে তাহলে আপনি চাইলে ১৫ জনই ভালো আর্টিস্ট নিতে পারবেন বাজেট বেশি থাকার কারণে। টিভিনাটকে যেহেতু এখন বাজেট কমে গেছে তাই আপনাকে এই সীমিত বাজেটের মধ্যেই আর্টিস্ট নির্বাচন করতে হবে। দুইজন থেকে তিনজন ভালো আর্টিস্ট নিতে গেলেই বাজেটের কারণে হিমশিম খেয়ে যায় সবাই। টিভিনাটকে বাজেট যেহেতু কম থাকে তাই ইচ্ছা থাকলেও কাজটা রিচ করা যায় না। এটাই হচ্ছে পার্থক্য।’

মঞ্চের নির্দেশনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘সামনে একটা জাতীয় শিশু-কিশোর নাট্যোৎসব আছে। আমার স্কুল যেহেতু ফিজিক্যালি নাই। আমি অন্য একটা স্কুলের সঙ্গে কোলাবরেশন করে আশা করি, জাতীয় শিশু-কিশোর নাট্যোৎসবে একটি নাটকের নির্দেশনা দেব। এছাড়াও আমি ফিল্ম মেকিং নিয়ে পড়াশোনা করেছি। ভবিষ্যতে সিনেমা নির্মাণ করারও ইচ্ছে আছে।’ স্বাগতার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে মাত্র সাড়ে তিনবছর বয়েসে। ‘নিনজা’ শিরোনামের ছবির মাধ্যমে অভিনয়শিল্পী হিসেবে যাত্রা শুরু হয় তার। এরপর শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন ‘সম্মান’, ‘সতীপুত্র আবদুল্লাহ’ ও ‘টপ মাস্তান’ ছবিতে। স্বাগতা ছেলেবেলা থেকে গান গাইতেন। নতুনকুঁড়ি প্রতিযোগিতায় ছড়াগান বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন তিনি। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রয়াত অভিনেতা মান্নার বিপরীতে ‘শত্রু শত্রু খেলা’ ছবিতে নায়িকা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন তিনি। এর আগে, ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে ‘ইউ গট দ্য লুক’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।

অভিনয় বেশি ভালোবাসেন স্বাগতা সেটা হোক ছোটোপর্দা কিংবা বড়োপর্দায় দু’জায়গায়ই কাজ করতে ভালো লাগে তার।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে স্বাগতার শতাধিক নাটক ও একাধিক সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। মিডিয়ায় কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখানে কাজ করতে আমি খুব এনজয় করি। একটা জায়গায় দীর্ঘদিন বসবাস না করলে সেটাকে নিজস্ব মনে হয় না। আমার মনে হচ্ছে, আমি যত বছর মিডিয়ায় কাজ করছি তত বেশি আমার এই জায়গার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হচ্ছে এবং আমার কাজের প্রতি কমিটমেন্ট তৈরি হচ্ছে। তো এটাকে আমি খুব ইতিবাচকভাবে দেখি।’