চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পপিকে নিয়ে আনন্দভুবন ১ বর্ষ ১ সংখ্যা [১৬ মে ১৯৯৬], ৩ বর্ষ ২ সংখ্যা [১ জুন ১৯৯৮], ৫ বর্ষ ৩ সংখ্যা [১৬ জুন ২০০০], ৯ বর্ষ ১৬ সংখ্যায় [১ জানুয়ারি ২০০৫] প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ১ জানুয়ারি ২০০৫ শিরোনাম ছিল কিন্তু থেমে নেই পপি, আফিমের সমান বয়সী, আহ্ পপি, পপি-ই সেরা’। ১ জানুয়ারি ২০০৫ সংখ্যায় তার সম্পর্কে লেখা হয়েছে :
ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় পপি এলেন তিনটি কাজে। মীর মোশাররফ হোসেন স্মৃতি স্বর্ণপদক ২০০৪-এ শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার নেওয়ার পর গেলেন এফডিসিতে। এস আলম সাকী পরিচালিত নরক ছবির ডাবিং যখন শেষ হলো ঘড়ির কাঁটায় রাত ১.৩০ মিনিট। আনন্দভুবন-এর ফটোসেশন করতে স্টুডিওতে পৌঁছলেন প্রায় ২টায়। মেকআপ শেষে সেশন যখন শুরু, ঘড়ির কাঁটা তখন ৩.০০ পেরিয়ে। সকাল ৭.০০টায় একই রকম সতেজ সাদিকা পারভীন পপি। যাওয়ার সময় বললেন, সময় থাকলে আরো সুন্দর করে ছবিগুলো তোলা যেত। পপির গাড়ি আবার ছুটে চললো ময়মনসিংহে শুটিং স্পটের পানে।
সম্ভবত যারা জ্যোতিষশাস্ত্র বিশ্বাস করেন তাদের জন্য এক আতঙ্কের নাম সাদিকা পারভীন পপি। কারণ, যত ঝড়ঝাপটা তিনি সয়েছেন, সাধারণ তো বটেই, জটিল হিসাব নিকাশেও পপি নামের মেয়েটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার কথা। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে ‘কুলি’ ছবিতে উড়ন্ত সূচনার পর এই সাত বছরে নিদেনপক্ষে সাতবার তো বটেই। অশ্লীলতার বিরুদ্ধে আন্দোলন তো সবাই কমবেশি করেছেন, সশরীরে কিংবা মঞ্চে বসে আন্দোলনে এগিয়ে থাকায় চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি ভার্সাস ফিল্ম ফেডারেশন-এর দ্বন্দ্বে গিনিপিগের নাম পপি। চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি তো রীতিমতো নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দিলো পপির ওপর। কী হাস্যকর।
একজন শিল্পীর সারাজীবনের সাধনা থাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাবার। ‘কারাগার’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে পপির নাম ঘোষণার পরই শুরু হলো নানামুখী আলোচনা। পপি বললেন, যারা সমালোচনা করেছেন, তারা ‘কারাগার’ ছবি ক’জন দেখেছেন সে বিষয় নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। আর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অন্যরা পেলে সেটা অর্জন, আমি পেলে সমালোচিত, এই দ্বিমুখিতা কেন ? এই পুরস্কারটি বাদেও ‘কারাগার’ ছবির জন্য আরো ১২-১৩টি পুরস্কার পেলাম, সেগুলোর জুরিরাও কি ম্যানেজ হয়ে গেছেন ?...
লেখা : সৈকত সালাহউদ্দিন।
চলতি সময়ে
লাস্ট ফটো সুন্দরী হিসেবে মিডিয়ায় যাত্রা শুরু করেন সাদিকা পারভীন পপি। তারপর টুকটাক নাটকে অভিনয়, তারপর এক লাফে চলচ্চিত্র। প্রথম কুলি ছবিতে অভিনয়, তারপর সুপারহিট সাফল্য। একের পর এক হিট সুপারহিট ছবিতে বক্স অফিস সাফল্য, শাকিল খানসহ বিভিন্ন নায়কের সঙ্গে জুটিবদ্ধ হওয়া, সেরা সব পরিচালকের সঙ্গে কাজ, বড়ো ব্যানারের সঙ্গে নিয়মিত কাজ, খুব দ্রুত সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছে যান পপি। তিনি একে একে অভিনয় করেন ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘মা যখন বিচারক’, ‘কে আমার বাবা’-সহ বেশ কিছু বাণিজ্যসফল ছবিতে। অভিনয় করে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে পৌঁছে যান পপি। সিনেমার অবস্থানে কিছুটা নি¤œগতি দেখতে পেলে তিনি কাজ কমিয়ে দেন বড়োপর্দায়। তখন ছোটোপর্দায় অভিনয় চালিয়ে যেতে থাকেন এই নায়িকা। কোভিডের আগে থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না পপিকে। মিডিয়া থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেন। তাকে ঘিরে নানারকম গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়। সবচেয়ে বড়ো গুঞ্জন হচ্ছে বিয়ে করে থিতু হয়েছেন পপি। অপর গুঞ্জনে শোনা যায় সন্তানের মা-ও হয়েছেন পপি। এখন পর্যন্ত পপির কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। দুই বছর আগে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে হঠাৎ করে দৃশ্যপটে হাজির হন পপি। অভিযোগ করেন চিত্রনায়ক জায়েদ খানের বিরুদ্ধে। জায়েদ পিস্তল দেখিয়েছিলেন, ক্ষতি করতে চেয়েছিলেন তার, এমনটাই এক ভিডিও বার্তায় জানান পপি। কিন্তু প্রকাশ্যে আসেননি নয়ের দশকের সাড়াজাগানো এই তারকা। তারপর থেকে পপির আর কোনো খবর বার্তা নেই। তিনি চলে গেছেন পর্দার আড়ালে। হ
লেখা : মাহফুজুর রহমান