যেতে হবে বহুদূর

14 May 2023, 01:58 PM অভোগ শেয়ার:
যেতে হবে বহুদূর

সাবরিনা জামান রিবা। এই সময়ের জনপ্রিয় মডেল। প্রায় একযুগেরও বেশি সময় ধরে তিনি আছেন ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে। র‌্যাম্পে তিনি বেশ সফল একজন মডেল। সম্প্রতি নাম লিখিয়েছেন পরিচালনায়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও রেখেছেন দক্ষতার ছাপ। জনপ্রিয় এই মডেল থাকছেন চলতি সংখ্যায়...


: বর্তমানে কী কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন ?

- আমি বর্তমানে পুরোপুরি পরিচালনার দিকেই মনোযোগ দিয়েছি। তাই পর্দার পেছনেই কাজ করতে চাচ্ছি। তাই এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই একটু পড়াশোনা করছি। কোভিডের পর আবার পুরোদমে আমরা কাজে ফিরেছি, এটা বেশ ভালো আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্য। আবারও র‌্যাম্প শোগুলোতে কাজ করে খুব ভালো লাগছে। কারণ, র‌্যাম্পে কাজ আমার সবসময়ই দারুণ প্রিয়। আমার বরাবরই প্যাশনের জায়গা কিন্তু র‌্যাম্প শো।

: ক্যারিয়ারের শুরু কীভাবে ?

- ক্যারিয়ারের শুরুটা নিয়ে অবশ্য অনেকবারই বলেছি, তারপরও আমার নতুন ভক্তদের জন্য বলছি, আমার শুরুটা প্রিন্ট মিডিয়া দিয়েই। পত্রিকার ফটোশুট দিয়েই শুরু, তারপর আস্তে আস্তে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মডেল হয়ে কাজ করি। তবে ক্যারিয়ারের শুরুতেই আড়ং-এর সঙ্গে কাজ করার সুবাদেই আমাকে হয়ত আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

: মডেল হিসেবে কাজ করছেন এক যুগের বেশি, সন্তুষ্টি কতটুকু ?

- আমি আমার কাজ নিয়ে, অবস্থান নিয়ে দারুণ সন্তুষ্ট। আমি সবসময়ই মনে করি, আমি এখনো নতুন, এখনো শিখছি। শেখার কোনো বিকল্প নেই। আমি সবসময়ই বিশ্বাস করি, একজন প্রকৃত শিল্পী বেঁচে থাকে তার কাজ দিয়ে। আজ আমি যে অবস্থানে আছি, হয়ত কয়েক বছর পর আর থাকবো না। তখন যদি কেউ আমাকে আমার কাজের জন্য স্মরণ করে তাহলে সেটাই আমার শিল্পী হিসেবে পাওয়া। আমার শক্তিই হলো আমার দর্শক। তারা যতদিন চাইবে, আমি ততদিনই আছি।

: এতদূর আসার পেছনে পরিবারের সহযোগিতা বা ভূমিকা কতটুকু পেয়েছেন ?

- কেউই পরিবারের সাহায্য ছাড়া খুব বেশিদূর হাঁটতে পারে না। আমি ভাগ্যবতী যে, আমার এই জার্নিতে সবসময় আমার পরিবারকে পেয়েছি। আমার নানি আমাকে সবসময় খুব উৎসাহ দিতেন। তাদের দোয়া ও উৎসাহেই আমি এত স্বপ্ন দেখতে সাহস করেছি।

: পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশের অনুভূতি কেমন ?

- মিডিয়ার সব ক্ষেত্রেই কাজ করার একটা সুপ্ত বাসনা সবসমই ছিল আমার। পরিচালনা করবো, এই সিদ্ধান্ত হুট করে হয়নি। আমার আগে থেকেই একটা ইচ্ছে ছিল পরিচালনায় নামবো। আর আগে থেকেই তো ফ্যাশন স্টাইল, কোরিওগ্রাফিতে কাজ করছিলাম। তাই মিউজিক ভিডিওর পরিচালনা দিয়েই শুরু করলাম। সবার কাছ থেকে বেশ প্রশংসা পেয়েছি। প্রথম মিউজিক ভিডিওর কাজ করেছি ওপার বাংলার প্রসেনজিৎ দাশের সঙ্গে। বেশ কয়েকটি গানের ভিডিওচিত্র আমি পরিচালনা করেছি। যখন যেভাবে কাজ করি আমি চেষ্টা করি সেই পরিবেশটাকে নিজের পরিবারের মতো করে নিতে। এতে আমার কাজের দক্ষতা ভালোভাবে প্রকাশ পেতে সাহায্য করে।

: আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেকে দেখতে চেয়েছিলেন এখন সেই পথেই আরো এগিয়ে চলেছেন। অনুভূতি কেমন ?

- এটা সব শিল্পীরই একটা স্বপ্ন থাকে। বড়ো পরিসরে নিজেকে পরিচিত করার। আমি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা ফেলেছি, কিছু কাজও করেছি। কিন্তু বলবো, এখনো অনেক দূর যেতে হবে। সবে শুরু পথচলার।

: আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ?

- দারুণ। কাজের ক্ষেত্রে পড়াশোনা খুব গুরুত্বপূর্ণ আমি মনে করি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ করতে হলে পেশাদারিত্বের মনোভাব থাকা লাগবে।

: দুই বাংলার কাজের মধ্যে কেমন পার্থক্য পেয়েছেন ?

- ওপার বাংলার কাজ সম্পর্কে আমার ধারণা হলো তারা অনেক বেশি হেল্পফুল আর তাদের জানার শেখার আগ্রহ অনেক বেশি। আর আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে কীভাবে কাজ হয় সেই বিষয়টিকে তারা খুব গুরুত্ব দিয়েছেন।

: চলচ্চিত্রে কাজের ইচ্ছে বা আগ্রহ কতটুকু ?

: নাটকে আমি আগেও অফার পেয়েছি। কিন্তু মডেলিং-এ মনোযোগ দিতে চেয়েছিলাম তাই করা হয়ে ওঠেনি। বড়ো পর্দায় কাজ করতে তো সব শিল্পীই চায়। যদি ভালো গল্প ও চরিত্র পাই অবশ্যই করবো।

: ফ্যাশন ফিল্ম ‘মুড সুইং’ বেশ প্রশংসিত হয়েছিল। এর পেছনের গল্পটি কেমন ?

- মুড সুইং মূলত একটি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের জন্য বানানো হয়েছিল। আমার যিনি পরিচালক ছিলেন জাহেদুল ইসলাম খান। তিনি আসলে এই কাজটার পেছনে এতটাই পরিশ্রম করেছিলেন যে, তাতে এর আউটপুট ১০০%ই এসেছে। তিনি ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে তার শর্ট ফিল্মের জন্য পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি যখন তাঁর চিন্তাটা আমার সাথে শেয়ার করেন আমার দারুণ পছন্দ হয়েছিল। আমিও চেষ্টা করেছি আমার শতভাগ দিতে। পুরো টিমের জন্যই এই সফলতা।

: উঠতি মডেলদের জন্য পরামর্শ-

- যারা এই ইন্ডাস্ট্রিতে আসতে চাচ্ছে তারা যেন এমন একটা চিন্তা নিয়ে আসে যে, তারা সিরিয়াসলি কাজ করবে। দীর্ঘদিন থাকার একটা মানসিকতা যেন থাকে। এই সেক্টরে আসার আগে একটু পড়াশোনা যেন করে। এই সেক্টরে যারা পথ প্রদর্শক আছে, সিনিয়র আছে তাদের সম্মান করার মানসিকতা অবশ্যই থাকতে হবে।

: আনন্দভুবনকে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

- আপনাকেও ধন্যবাদ।