১৪ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হওয়া ২১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র-উৎসবের পর্দা নামলো ২২ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে। ঢাকার জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে সন্ধ্যায় এই উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এবারের উৎসবে মোট ৭১টি দেশের ২৫২টি সিনেমা প্রদর্শিত হয়। বিস্তারিত লিখেছেন শেখ সেলিম...
২২ জানুয়ারি, রবিবার শেষ হলো ২১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আসর। ঢাকার জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তনে সন্ধ্যায় এই উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সমাপনী দিনে, অতিথি, জুরি, নির্মাতা ও প্রযোজকদের উপস্থিতিতে ঘোষণা করা হয় এবারের উৎসবে বিজয়ী চলচ্চিত্র, তথ্যচিত্র, নির্মাতা, অভিনেতা, অভিনেত্রী ও চিত্রগ্রাহকের নাম।
এই উৎসবের মূল আয়োজক রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ। এবারের উৎসবে দেখানো হয়েছে ৭১টি দেশের ২৫২টি সিনেমা। এবারের উৎসবেও এশিয়ান ফিল্ম প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন ফিল্মস, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্ম মেকার বিভাগে চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। এশিয়ান চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতা বিভাগে রাশিয়ার সিনেমা ‘পোডেলনিকি’-এর জন্য সেরা সিনেমাটোগ্রাফি পুরস্কার বিজয়ী হন আর্টিওম আনিসিমভ। ভারতের ‘অপরাজিত’ সিনেমার জন্য সেরা স্ক্রিপ্ট রাইটার অনিক দত্ত এবং ভারতের ‘প্রপেদা’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান কেতকী নারায়ণ।
এছাড়া, জাপানের সিনেমা ‘নাকোডো-ম্যাচমেকারস’-এর জন্য সেরা অভিনেতা হয়েছেন ইক্কেই ওয়াতানাবে। ইরানি সিনেমা ‘জেন্দেগি ভা জেন্দেগি’-এর জন্য পুরস্কার জিতে নেন পরিচালক আলী ঘাভিতান। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পুরস্কার পায় ইরানি সিনেমা ‘দ্য মাদার’। বিশেষ অডিয়েন্স পুরস্কার জয়ী চলচ্চিত্র বাংলাদেশ থেকে ‘জে কে ১৯৭১’ এবং অডিয়েন্স পুরস্কার জয়ী সিনেমা হলো বাংলাদেশ থেকে ‘হাওয়া’।
স্পিরিচুয়াল ফিল্ম সেকশনে সেরা তথ্যচিত্র ‘মহাত্মা হাফকাইন’ [রাশিয়া], সেরা ফিচার ফিল্ম ‘ঘোর ফেরা’। বাংলাদেশ প্যানোরামা সেকশনে সেরা চলচ্চিত্র অ্যাওয়ার্ড পায় বাংলাদেশের সিনেমা ‘সাঁতাও’।
২১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশ প্যানোরামায় ‘দামাল’ ছাড়াও স্থান করে নিয়েছে ‘হাওয়া’, ‘বিউটি সার্কাস’, ‘পাপপুণ্য’, ‘সাঁতাও’, ‘দেশান্তর’সহ মোট ৯টি ফিচার ফিল্ম। ওয়াইড অ্যাঙ্গেল বিভাগে ১১টি সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘ওরা ৭ জন’ ও প্রামাণ্যচিত্র ‘দুর্বার গতি পদ্মা’। ভেনিস, বার্লিন, টোকিও, মস্কো, সাংহাই, বুসানসহ একাধিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেওয়া বিদেশি ভাষার সিনেমাগুলো এই আয়োজনের মূল আকর্ষণ।
উৎসবের প্রধান শাখাগুলোর মধ্যে একটি এশিয়ান কমপিটিশন শাখা ; এতে দেখানো হয় ২৩টি সিনেমা। এছাড়া ওয়াইল্ড অ্যাঙ্গেল শাখায় ১১টি, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড শাখায় ৪৫, বাংলাদেশ প্যানোরামা শাখায় ২৯, উইমেন ফিল্মমেকার শাখায় ২৩, স্পিরিচুয়াল ফিল্ম শাখায় ১৪ ও চিলড্রেন ফিল্ম শাখায় ১৮টি সিনেমা দেখানো হয়। শর্ট ও ইন্ডিপেনডেন্ট শাখায় ৮৪টি পূর্ণ ও স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি দেখানো হয়। রেট্রোস্পেকটিভ শাখায় ফ্রান্সের বিখ্যাত পরিচালক ফ্রঁসোয়া ত্রæফোর ‘দ্য ফোর হান্ড্রেড বেøাজ’সহ চারটি সিনেমা দেখানো হয়। ৭১টি দেশের ২৫২টি চলচ্চিত্র প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে ১৪ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় ডিআইএফএফ-এর আয়োজন করে আসছে।