যেমন হবে শিশুদের শীতের পোশাক

আমাদের দেশে সাধারণত হেমন্ত থেকেই আস্তে আস্তে শুরু হতে থাকে শিশিরভেজা হালকা শীতের সকাল। এবার মনে হয় একটু আগেই শীতের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কুয়াশার আগমন ঘটেছে। তাপমাত্রাও রেকর্ড হারে কমছে প্রতিদিন। সকালের ঘাসের ডগায় লেগে থাকা শিশির ফোঁটা তা স্পষ্টভাবে জানান দিচ্ছে।

শীত এলেই চারিদিকে আনন্দ শুরু হয়ে যায়। শীতে পিঠা-পুলি খাওয়া থেকে শুরু করে শীতের পোশাক কেনারও ধুম পড়ে যায়। বিশেষ করে শিশুদের জন্য শীতে চাই বাড়তি আরামদায়ক গরম কাপড়। আমাদের আদরের সোনামণিদের এই শীতে দরকার বাড়তি যত্ন ও আরামদায়ক পোশাক। প্রায় সব শিশুই রঙিন পোশাক পরতে পছন্দ করে। তাই এবারও শিশুদের জন্য বাহারি রঙের নতুন ডিজাইনের বিভিন্ন রকমের শীতের পোশাকের সমাহার রয়েছে বিভিন্ন বিপণিবিতানগুলোতে। যেকোনো ধরনের অসাবধানতা শিশুদের ঘটে যেতে পারে বড়ো কোনো দুর্ঘটনা।
শিশুরা সংবেদনশীল। আর শীতের সময় তো তাদের ওপর রাখতে হয় বাড়তি নজর। তাই এসময় তাদের জন্য পোশাকটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। শীতের পোশাকের কাপড় সুতি হলে আরামদায়ক হয়। তাই শিশুদের বেশিরভাগ শীতের পোশাক হওয়া উচিত সুতির। মেয়ে শিশুদের জন্য শীতের পোশাকে নকশা করা ডিজাইন ফুল, কার্টুন-স্টিকারের ফুল স্টিভ টি-শার্ট বাজারে এসেছে। তাছাড়া পুঁতি, বোতাম ও বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে আকর্ষণীয় করা হয়েছে হুডি টি-শার্টগুলোও। সোয়েটারে শিশুদের বেশ মানিয়ে যায়, তাই সোয়েটারে বিভিন্ন লেস, বোতামের নকশায় আনা হয়েছে ভিন্নতা। বিভিন্ন বাহারি রঙের ব্যবহার করে আনন্দের ছোঁয়া দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে পোশাকগুলোতে। মেয়ে শিশুদের জিন্সের ফ্রক, স্কার্ট, ওভারকোট ও কার্ডিগানের চাহিদাও বেশ ভালো। আকর্ষণীয় ডিজাইনের রেক্সিন ও লেদারের জ্যাকেটও পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। এই শীতে উলের সোয়েটারগুলোয় উষ্ণতা বেশি অনুভূত হয়। তাই অনেকেই তা কিনতে আগ্রহী হয়ে থাকেন। তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে, যেন তা খসখসে না হয়। ছেলে শিশুদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন কার্টুন-স্টিকারের ডিজাইনের ফুলস্লিভ টিশার্ট, জ্যাকেট, হুডি, লং জ্যাকেট ইত্যাদি। কয়েকটি রঙের ব্যবহার করে একটি জ্যাকেটে আনা হয়েছে ভিন্নতা। ব্যবহার করা হয়েছে চেইন দিয়ে বিভিন্ন ডিজাইনের পকেট। ডাবল স্লিভের ব্যবহার করে টিশার্টগুলোয় নতুনত্ব যোগ করা হয়েছে। নবজাতক শিশুদের পায়ের তালু থেকে মাথা পর্যন্ত উষ্ণ রাখার জন্য রয়েছে বেবিকিপার। সুতি কাপড় সব সময়ই আরামদায়ক, তাই সুতির ওপরও করা হয়েছে শিশুদের পোশাক। খুব শীতে শিশুদের কান, গলা, হাত, পা উষ্ণ কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা অনেক জরুরি। তাই কানটুপি কেনার সময় একটু বড়ো দেখেই কিনুন, যাতে দুই কানসহ মাথার পেছন দিক ও গলা ঢেকে রাখা যায়। গলা, কান ঢাকার জন্য ছোট ছোট উলের মাফলার কিনতে পাওয়া যায়।

ছোট মাফলারগুলোতে নানারকম রঙিন ঝুল বেশ আকর্ষণীয় দেখায় শিশুদের। রাতে ঘুমানোর জন্য আলাদা সুতি মোজা থেকে শুরু করে উলের মোজা সবই কমবেশি পাওয়া যাবে ফ্যাশন হাউজগুলোতে। ছেলে শিশুরা হাতমোজা হিসেবে পছন্দ করবে রেক্সিনেরগুলো। মেয়ে শিশুদের কুয়াশার হাত থেকে মাথার চুল ও ত্বক রক্ষা করতে কিনে নিতে পারেন বিভিন্ন ডিজাইনের স্কার্ফ। এসব শীতের পোশাক কিনতে চলে যেতে পারেন বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজে। তাছাড়া ফ্যাশন হাউজ ছাড়াও একটু বেশি দামে ভালো মানের শীত পোশাক কিনতে যেতে পারেন দেশের বিভিন্ন অভিজাত শপিং মলে।

শিশুদের শীতের পোশাক নিয়ে কথা বলেছেন নন্দন ফ্যাশন হাউজের কর্ণধার শান্তানা জামান। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় এবারের শীত উপলক্ষে শিশুদের জন্য কী ধরনের পোশাক তৈরি করেছেন। তিনি বলেন, এবার শীতে আমরা শিশুদের জন্য ফুলহাতা শাট, ফুলহাতা ফ্রক, সেলোয়ার-কামিজ, টুপিস, থ্রিপিস, স্কাট, টপস, কোট-প্যান্টসহ আরো বেশ কিছু পোশাক তৈরি করেছি। এই পোশাকগুলোয় সুতি, কর্টন, বেলভেট, কর্ট, গেভাডিন, লিলেন, জর্জেট এসব উন্নতমানের মেটেরিয়ালস ব্যবহার করা হয়েছে। আমাদের পোশাকগুলো শিশুদের জন্য খুবই আরামদায়ক হবে এবং শিশুরা পরতে খুব স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে। আমাদের শোরুমগুলো ঢাকায়। তাই ঢাকায় যে শীত পড়ে সেটা মাথায় রেখেই পোশাকগুলো তৈরি করা হয়েছে।

লেখা : শহিদুল ইসলাম এমেল
ছবি: ইয়েলো, সারাহ,লাইফস্টাইল