বিশ্ব জুড়িয়া প্রেমের ভাইরাস, কোনো প্রতিষেধক নাই -ইকবাল খোরশেদ

14 Feb 2021, 02:06 PM সাহিত্যভুবন শেয়ার:
বিশ্ব জুড়িয়া প্রেমের ভাইরাস, কোনো প্রতিষেধক নাই -ইকবাল খোরশেদ

ভূমিকা

অনেক অনেক কাল আগে রাশিয়ানরা একবার ঘুমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করিয়াছিল। তাহারা ঘুমাইবে না, ঘুমের কারণে তাহাদের কাজকর্মের ম্যালা ক্ষতি হইতেছে। ঘুম কোথা হইতে আসে এই লইয়া তাহারা মহাফ্যাসাদে পড়িয়া গেল। কিন্তু কোনো সমাধান করিতে পারিল না। প্রথমে তাহাদের ধারণা হইল ঘুম সদর রাস্তা ধরিয়া গ্রামে প্রবেশ করে এবং সকলকে কিছুটা সময়ের জন্য কাড়িয়া লয়। তাই তাহারা রাত্রিবেলায় ছুরি, লাঠি, বল্লম লইয়া সদর রাস্তায় পাহারা বসাইল, পাহারাদারেরা লাঠি-সোটাসহ ঘুমাইয়া পড়িল কিন্তু মারিবার জন্য ঘুমের দেখা মিলিল না। ইহার পর একে একে তাহারা নদীপথ, আকাশপথ সব পথেই পাহারা বসাইল, ঘুম আসিয়া ঠিকই তাহাদের দখল করিয়া লইল কিন্তু ঘুমকে তাহারা ধরিতে পারিল না।


ঘুমের মতোই জীবনের কোনো-না-কোনো সময়ে সকল মানুষকেই প্রেম আসিয়া গ্রাসিয়া লয়। কোন পথে কাকে কখন প্রেম নামক ব্যাধি আচমকা আক্রমণ করিয়া বসে তাহা কেহ বলিতে পারে না। ঘুমের আক্রমণ তো ভালো, সুস্থ থাকিবার জন্য প্রতিদিন প্রত্যেকের যার যার চাহিদা মোতাবেক ৪-৬-৮ ঘণ্টা ঘুমানো দরকার। ঘুমের মতো প্রেম চোরা পথে অসিলেও মানব জীবনে ইহা ঘুমের মতো স্বাস্থ্যকর তো নয়ই বরং নিদ্রাহরণকারী।


ভালোবাসা নামক মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হন নাই এমন ব্যক্তি পৃথিবীতে আছেন কি না ইহা গবেষণার বিষয়, কিন্তু এই বিষয়ে কেহ গবেষণাকর্মে লিপ্ত হইয়াছেন বলিয়া শোনা যায় নাই। বোধহয় সাহস করিয়া উঠিতে পারিতেছেন না। অধুনা ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ নামক অতি উন্নত প্রজাতির ভাইরাস বিশ্ববাসীকে ভালোবাসায় পতিত হইবার জন্য ব্যাপক উৎসাহ, শক্তি ও সাহস জোগাইতেছে। ইহাতে তাহার ম্যালা লাভ। সে বিশ্বব্যাপী ছড়াইয়া পড়িয়া মানবদেহের অতি জরুরি এক যন্ত্র ‘কলিজা’ খাইয়া নিজে ফুলিয়া ফাঁপিয়া কলাগাছ হইয়া উঠিতেছে আর আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থা তেজপাতা করিয়া ছাড়িতেছে। ভালোবাসা নামক ভাইরাসের আক্রমণ হইতে কাহারো নিস্তার নাই। কে যে কখন কোথায় ধরা খাইতেছেন তাহারও কোনো নিকাশ নাই। কারণ, এই ভাইরাস অত্যন্ত পরাক্রমশালী এবং সারাবিশ্বের আকাশে বাতাসে অন্তরীক্ষে সর্বক্ষণ বিচরণ করিয়া বেড়াইতেছে।


সুখের কথা শিশু এবং বৃদ্ধ যাহাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা সীমিত তাহাদিগকে এই ভাইরাস সাধারণত আক্রমণ করে না। তবে বৃদ্ধরা যদি ভিমরতি নামক অপর ভাইরাসে আগে থেকেই আক্রান্ত হইয়া থাকেন তাহা হইলে ভালোবাসা-ভাইরাস তাহাদের যে কী অবস্থা করিয়া ছাড়ে তাহা ভাষায় বর্ণনা করিবার মতো নহে। নিয়মিত ব্যায়াম, হঁটাহাঁটি করিয়া এবং শরীরে ইনসুলিন প্রয়োগ করিয়া কোনোমতে বহুমূত্রকে নিয়ন্ত্রণে রাখিতে পারিলেও তাহারা ভালোবাসা-ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করিতে পারেন না। করোনা ভাইরাসের চেয়েও মারাত্মক এই ভাইরাস। ছাত্র-ছাত্রী, ধনী-দরিদ্র, চাকুরে-ব্যবসায়ী, গৃহবধূ-গৃহস্বামী, জেলখানার দাগি আসামি, মজুর-মুটে, ক্রেতা-বিক্রেতা মেথর-মুচি কেহ এই ভাইরাসের আক্রমণ হইতে রেহাই পাইয়াছেন, এমনটা শোনা যায় নাই। সাধারণ মানুষের কথা বাদ দিলেও বলা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্লিন্টন সাহেব এই রোগে আক্রান্ত হইয়াছিলেন। প্রেমের অমৃত তুলিবার জন্য পুরুষেরা যে-সকল অস্ত্র ব্যবহার করিয়া থাকেন তিনি তাহার চেয়ে অধিক দুর্মূল্য ‘সিগার’ পর্যন্ত ব্যবহার করিয়াছিলেন তথাপি তাঁহার লেজে-গোবরে হইয়াছিল। ব্রিটেনের এক বাদশাহও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হইয়া সুখের বাদশাহী ছাড়িয়া আজীবন এক বিধবার পদসেবা করিয়াছিলেন।


রোগের লক্ষণ

প্রেম ভাইরাসে আক্রান্ত হইবামাত্র মনের মধ্যে হা-হুতাশ বাড়িয়া যায়। রাতদিন চব্বিশ ঘণ্টা বিশেষ একজনের প্রতি মনোযোগ ও আকর্ষণ নিরন্তর আবেশে নিবিঢ়ভাবে নিবদ্ধ থাকে। তাহার নয়নের সহিত একবার নয়ন মিলাইতে, তাহার সহিত ঘণ্টার পর ঘণ্টা অর্থহীন বাক্যালাপ করিতে, তাহার মনোযোগ আকর্ষণ করিতে হৃদয় মরিয়া হইয়া উঠে। তাহার স্পর্শ লাভ করিবার জন্য, এমন কি তাহার সঙ্গে দেহ-মন অভিন্ন করিবার জন্য পরান আই-টাই করিতে থাকে। মধ্যযুগের এক প্রেমিক কবি এই অবস্থাকে বলিয়াছেন- ‘প্রতি অঙ্গ লাগি কান্দে প্রতি অঙ্গ মোর’। এই অবস্থায় বিশেষজনকে চোখের আড়াল করিতে মন সায় দেয় না। আর যদি আড়ালে চলিয়াই যায় তবে, তাহা বিরহকাল- অতিব কঠিন অবস্থা। ইহার পরিণতি জমে-মানুষে টানাটানি। জমের হাত হইতে কেহ হয়ত রেহাই পাইয়া যান কিন্তু মুমূর্ষুরা...


এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির আচার-আচরণ ও প্রাত্যহিক ব্যবহার এই সময়ে আমূল পাল্টাইয়া যায়। এই মানুষেরা চন্দ্রে পাওয়া মানুষদের মতো এমন এমন আচরণ করিয়া থাকেন যাহা অন্য সময়ে করিবার কথা ভুলেও ভাবিতেন না। কোনো কোনো আচরণকে পাগলামি ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার তাহাদের নিকট ইহাকে স্বাভাবিক আচরণ বলিয়াই মনে হয়।


প্রেমরোগ সম্পর্কে জনপ্রিয় ধারণা হইল, ইহা হৃদয়ঘটিত রোগ। কিন্তু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা এই মতবাদ মানেন না। কেন মানেন না তাহা তাঁহারাই ভালো বলিতে পারিবেন। সাধারণত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হইলে অনেকের বুকে চিন্চিন্ করিয়া ব্যথা অনুভূত হয়। হৃদরোগে আক্রন্ত হইলে যেমন বুকে ব্যথা হয় অনেকটা সেইরকম, কেহ কেহ এমন ব্যথায় বুক চাপিয়া ধরেন। মূর্ছা যাইবার মতো ঘটনাও কিছু কিছু ঘটে। এই রোগে আক্রান্ত হইলে হার্টবিট বাড়িয়া যায়। রক্তচাপ উচ্চমাত্রায় উঠিয়া যায়। শ্বাস-প্রশ্বাস ঘন ঘন হইতে থাকে। নিজের অনিচ্ছায় ও অজ্ঞাতে বেলুন-ফাটা দীর্ঘনিশ্বাস বাহির হইয়া পড়ে। এই সকল লক্ষণ দেখিয়া সাধারণ মানুষের ধারণা হইয়াছে ইহার সহিত হৃদরোগের অন্তরঙ্গ যোগাযোগ রহিয়াছে। হইলে কী হইবে, চিকিৎসকেরা ইহাকে হৃদরোগ বলিয়া স্বীকার করেন না।


অনেকে মনে করেন ইহা মনের রোগ। এই মতবাদে অবশ্য হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের কোনো আপত্তি নাই। থাকিবার কথাও নহে, হৃৎযন্ত্র তাঁহাদের অঞ্চলভুক্ত হইলেও মন তাঁহাদের আওতায় পড়ে না। আসলে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের কোনো দোষ নাই। মন যে মানবদেহের কোথায় অবস্থান করিয়া থাকে তাহা আজ পর্যন্ত কোনো বিজ্ঞান আবিষ্কার করিতে পারে নাই। অবস্থান নির্ণয় করিতে পারিলে চিকিৎসকগণ উহাকে খোঁচাইয়া বায়প্সি করিয়া নির্ণয় করিতে পারিতেন যে ভাইরাসটি কতটা শক্তিশালী, সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিকে রোগী সারিয়া উঠিবে, নাকি কেমোথ্যারাপি ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করিতে হইবে। ভাবিতে অবাক লাগে কুকুর-বিড়াল-ইঁদুরের মতো নিকৃষ্ট প্রাণীদের রোগব্যাধি লইয়া বিশ্বব্যাপী ব্যাপক গবেষণা হইতেছে অথচ প্রেম-ভাইরাসের মতো জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ও হুমকিস্বরূপ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লইয়া কাহারো কোনো মাথা ব্যথা নাই। এই রোগে যেন আক্রান্ত হইতে না হয়, তার জন্য কোনো বিজ্ঞানীকে টিকা আবিষ্কারের নিমিত্ত চেষ্টা করিতেও দেখা যায় না।


অনেকে বলিয়া থাকেন প্রেম রোগ একপ্রকারের জ্বর। শরীরের কোনো স্থানে বিকার ঘটিলে অথবা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হইলে যেমন দেহের উত্তাপ বাড়িয়া যায়, তেমনি প্রেমরোগে আক্রান্ত হইলেও মনের উত্তাপ বাড়িয়া যায়, সকাল-বিকাল-সন্ধ্যা-রাত নাই যখন তখন চিত্ত চঞ্চল হইয়া উঠে। মুশকিল হইল : জ্বর-কাঠি দিয়া দেহের উত্তাপ পরিমাপ করা যায় এবং উত্তাপের মাত্রানুযায়ী ট্যাবলেট খাওয়ানো যায় কিংবা জলপট্টি দিয়া ক্রমান্বয়ে তাপ নামাইয়া আনা যায়, কিন্তু মনের উত্তাপ পরিমাপ করিবার মতো কোনো থার্মোমিটার অদ্যাবধি বাজারে ছাড়া হয় নাই। এই তাপ কমাইবার কোনো ‘প্রেমাসিটামল’ ট্যাবলেটও আবিষ্কার হয় নাই। তবে প্রেমে ব্যর্থ হইলে ‘হাফসোল’, ‘স্যাকামাইসিন’ এই ধরনের কিছু বায়বীয় জিনিস নাকি প্রেমিক/প্রেমিকারা সেবন করিয়া থাকেন। ইহাতে ব্যথা বাড়ে না কমে তাহা কেবল সেবনকারীই বলিতে পারিবেন।


অনেকে বলিয়া থাকেন, প্রেম আসলে মনের রোগ নহে, ইহা মস্তিষ্কের রোগ, কেননা মানুষ মস্তিষ্ক দ্বারাই প্রেমিক/প্রেমিকার ধ্যান করিয়া থাকেন। তাই কেহ কেহ এই ব্যাধিকে মস্তিষ্কের বিকার বলিয়াও সাব্যস্ত করিয়া থাকেন। ইহার অর্থ এই দাঁড়ায় যে, প্রেমরোগে আক্রান্ত ব্যক্তি কমবেশি পাগল। চিকিৎসকগণ ইলেক্ট্রিক শক দিয়া অনেক ক্ষেত্রে পাগলের চিকিৎসা করিয়া ভালো ফল লাভ করিয়াছেন কিন্তু প্রেমরোগ হইয়াছে এইরূপ সনাক্ত হইবার পর কোনো চিকিৎসক কাউকে চিকিৎসা হিসেবে ইলেক্ট্রিক শক দিয়াছেন এই রকম কোনো দৃষ্টান্ত আজ পর্যন্ত স্থাপিত হয় নাই।


রোগের তীব্রতা

সম্যাসাটা খুবই ব্যাপক এবং ভয়াবহ। সমগ্র বিশ্ব ইহার খপ্পরে পড়িয়া আকুলি-বিকুলি করিতেছে। ভ্যালেন্টাইন ডে-এর প্রভাবে সমস্যার তীব্রতা দিনকে দিন বাড়িয়াই চলিয়াছে। প্রেমের গাড্ডায় পড়িয়া কেহ হু-হু করিয়া কাঁদিতেছে কেহ মাথায় হাত দিয়া শূন্য দৃষ্টিতে তাকাইয়া আছেন। হাইওয়েতে দ্রুতগতিতে ধাবমান একটি ট্রাক ছোট্ট একটি কার-জাতীয় গাড়িকে ধাক্কা মারিলে উহার যেমন দুমড়ানো-মোচড়ানো চেহারা হয় কেহ কেহ সেই রকম দুমড়ানো হৃদয় লইয়া হাহাকার করিতেছেন। মলিন বিষণ্ন চেহারা লইয়া রাস্তায় রাস্তায় ফ্যা ফ্যা করিয়া ঘুরিয়া বেড়াইতেছেন। কেহ ফেসবুকে স্টাটাস মারিতেছেন ‘ভালোবাসার উপর ঠাডা পড়িয়াছে।’ কিংবা ‘প্রেম করার চাইতে মুরগি পোষা ভালো।’ তবুও এই রোগে আক্রান্ত হইয়া যাহার পর নাই যাতনা সহ্য করিয়াও মনে মনে এক ধরনের সুখ ভোগ করিয়া থাকেন আর গুনগুন করিয়া গাহেন : ‘আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান’। জনান্তিকে বলিয়া রাখি, এই অধমও এই ভাইরাসের আক্রমণ হইতে রেহাই পায় নাই। ইনি তো কোন ছার! এই ব্যাধির নিদারুণ অভিজ্ঞতা মুনিঋষির এবং মহাপুরুষদেরও এন্তার হইয়া থাকে।


অনেকের ধারণা, পুরুষেরাই এই রোগে বেশি আক্রান্ত হন। কোন বেয়াক্কেলরা যে এই ধরনের নালায়েক ধারণা পোষণ করেন তাহা বুঝিতে পারি না। সত্যযুগ, ত্রেতাযুগ, দ্বারপরযুগ হইতে হালের কলিযুগ পর্যন্ত নারীরাও এই রোগে আক্রান্ত হইয়া বিশেষ কাবু হইয়া পড়েন বলিয়া শোনা যায়। অধিকন্তু নারী-জাতির মধ্যে যাহারা এই রোগে অতিমাত্রায় আক্রান্ত হইয়া পড়েন উহারা হিতাহিত জ্ঞান হারাইয়া হাতের কাছে আর কিছু না পাইলে নিজের বারো হাত লম্বা বস্ত্রখানি গলায় জড়াইয়া প্যাঁচাইয়া ঘরের কড়িকাঠ কিংবা বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলিয়া পড়েন। একটা কথা খুব সহজভাবেই বোঝা উচিত যে, রোগব্যাধি কোনো লিঙ্গভেদ মানে না।


পরিশেষ

এমন কি এই রোগের হেতু কী এবং ইহা কীভাবে বিস্তার লাভ করিয়া থাকে তাহা লইয়াও এযাবৎ সর্বজন স্বীকৃত কোনো মতবাদ প্রচলিত হয় নাই। জিন-ভূত তাড়াইবার, পরীক্ষা পাশের কিংবা অন্যের ক্ষতি করিবার তাবিজ-কবজ-মাদুলি- ধর্মব্যবসায়ীদের উপযুক্ত দক্ষিণা দান করিলে অতি সহজেই পাওয়া যায়। কিন্তু প্রেমরোগ আরগ্যের কোনো তাবিজ-কবজ পাওয়া যায় না। যেগুলি পাওয়া যায় সেগুলি যথাযথ নিয়ম মানিয়া ব্যবহার করিবার পরও কারো আরোগ্য লাভ হইয়াছে এমন প্রত্যক্ষ কোনো সাক্ষ্য কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নাই। হায়! বসন্ত, পলিও, ওলাওঠা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে কর্কট রোগের ওষুধও আবিষ্কার হইয়াছে। হালের অতিমারি করোনা ভাইরাসের টিকা তো এক মহামারি শুরু হওয়ার একবছরের মাথায় মানুষের শরীরে প্রয়োগ করা হইতেছে তথাপি প্রেমরোগের কোনো ওষুধ আবিষ্কারে কোনো সহৃদয় ব্যক্তি আগাইয়া আসিতেছেন না। এই ব্যাপারে তাঁহাদের কোনো আগ্রহ আছে বলিয়াও মনে হইতেছে না। আমরা হলফ্ করিয়া বলিতে পারি, কেহ যদি এই রোগের ওষুধ আবিষ্কার করিয়া বাজারজাত করিতে পারেন তাহা হইলে তিনি রাতারাতি জ্যাক মা কিংবা বিল গেটসের চাইতে ধনী হইয়া যাইবেন। বাংলাদেশের ফার্মাসিস্টরা এই বিষয়টি বিবেচনা করিয়া দেখিতে পারেন। ইউনানীওয়ালারা চেষ্টা করিলে অতি দ্রুত ফল পাইবেন বলিয়া মনে হয়। হোমিওপ্যাথদেরও চেষ্টা চালাইতে কোনো বাধা নাই...


পুনশ্চ

১. ভালোবাসায় সুখ-দুঃখ দুইটাই আছে, ভয় পাইয়া পিছাইয়া পড়িলে চলিবে না। বেশি বেশি ভালোবাসিতে হইবে।

২. কাহাকেও ভালো না বাসিলে আপনার হৃদয় কাঠ-ফাটা চৈত্রে-চেরা মাঠের মতো খটখটে হইয়া পড়িবে। কেহ ভালো কোনো কথা বলিলেও মেজাজ বিগড়াইয়া যাইবে। অতএব, সাধু সাবধান।