এবং চার্লস স্পেনসার চ্যাপলিন -কাজী দিশু

09 Feb 2021, 02:00 PM এক্সক্লুসিভ শেয়ার:
এবং চার্লস স্পেনসার চ্যাপলিন -কাজী দিশু

গৌরচন্দ্রিকা

... একজন শিল্পী, পৃথিবীর সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও অভিনেতা- চার্লস স্পেনসার চ্যাপলিন।

দেবদুর্লভ প্রতিভার অধিকারী চার্লস স্পেনসার চ্যাপলিন : তার পরিচালিত এবং অভিনীত ছায়াছবি দেখে রাস্তার মূর্খ কুলি থেকে শুরু করে প্রকৃত বিদগ্ধজন, মহামনীষী- আট থেকে আশি বছর বয়সের আবালবৃদ্ধবনিতা সকলেই কমবেশি রসাপ্লুত হয়। এবং এই চলচ্চিত্র-ঈশ্বর পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষকে চেনেন। ছেলে-বুড়ো, নর-নারী, সাধু-সন্ন্যাসী, চোর-বাটপার, অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত, বিদ্বান, ধনী-গরিব, বড়োলোক ও তথাকথিত ছোটলোক প্রত্যেকের সঙ্গে কেবলমাত্র তার সাক্ষাৎ পরিচয় নয়- সবার মনের গোপন কথাটির সঙ্গেও চার্লস চ্যাপলিন ছিলেন আন্তরিক-অন্তরঙ্গ।

চ্যাপলিন নামেই যার সমধিক পরিচিতি, আর তার সাহিত্য মেজাজ-মনস্তাত্তি¡ক অবগাহন- তপ্ত কড়াই থেকে বাস্তবের জ্বলন্ত আগুনে লাফ দিয়ে পড়ার এক অবশ্যম্ভাবী নান্দনিক রূপ। চার্লির ভাষারীতি বর্ণনাত্মক ও সরল যেন মোমবাতি থেকে চারপাশে ছড়িয়ে দেওয়া আলো। - তাৎক্ষণিক অনুপ্রেরণা-সঞ্জাত সে কারণেই তার চলচ্চিত্রের মতোই সহজ-সরল-গভীর, যেকোনো অবস্থাতেই সুখপাঠ্য। লোকশিল্পের অনুষঙ্গ টেনে বলা যায়, চ্যাপলিনের লেখায় রয়েছে সার্কাসের মজা আর ম্যাজিকের বিস্ময়।

সাদাকালো ছবিতে তার চোখের রং বাদামি বলে মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে চার্লস চ্যাপলিনের চোখের রং ছিল নীল... বিগত শত বছর যাবৎ রসিক চলচ্চিত্রপ্রেমীরা ফেরাতে পারেনি তাদের নিজ দৃষ্টি, চ্যাপলিনের নীল চোখ থেকে এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে, একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। তার সময়ের জগদ্বিখ্যাত মহৎজনেরা ছিলেন চার্লস চ্যাপলিনের সুহৃদ বন্ধু। - সে তালিকায় বিশ্বখ্যাত খেলোয়াড় থেকে শুরু করে দার্শনিক-গণিতজ্ঞ বার্ট্রান্ড রাসেল কিংবা মহাবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন সবিশেষ উল্লেখ্য। এই অনন্যসাধারণ চলচ্চিত্র নির্মাতা-অভিনেতার নিজ কলমেই লিখিত টুকরা টুকরা ভাষ্য এখানে বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। বলাবাহুল্য বিক্ষিপ্ত এবং অসম্পূর্ণ এই গ্রন্থনা...

আপনার কথা

আমাকে আত্মবিশ্বাস জোগাতো ম্যাক সেনেটের কাজের ধরন। মনে হতো, এটাই সঠিক উপায়। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘আমাদের কোনো চিত্রনাট্য থাকে না। আমরা একটা আইডিয়া থেকে শুরু করি তারপর ঘটনাক্রমে স্বাভাবিক পরম্পরাকে অনুসরণ করে যাই....’ এই উক্তি আমার কল্পনাশক্তিকে উদ্দীপিত করেছিল। এইভাবে সৃষ্টি করলে ছবির কাজ আকর্ষণীয় ও উত্তেজনামূলক হয়ে ওঠে। নিজের সৃজনক্ষমতার কাছে হয়ে ওঠে একটা চ্যালেঞ্জ। এই ধরনটা এত সহজ, স্বচ্ছন্দ, স্বাধীন- কোনো কাহিনি নয়, কোনো চিত্রনাট্য নয়। আমাদের কেবল থাকত একটা ভাবনা, যাকে কেন্দ্র করে আমরা অঙ্গভঙ্গি, অভিব্যক্তি ইত্যাদি সাজাতাম, তারপর যেমন যেমন এগোতাম সেভাবে গল্প বানিয়ে নিতাম। শিল্পীর কাছে সাধারণত সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক হলো অপ্রচলিত কিছু করতে পারার স্বাধীনতা। আর সেই জন্যই বহু পরিচালকের প্রথম ছবিটি হয় সতেজ ও মৌলিক।

প্রথম দিককার ফিচারগুলো করার সময়ে আমাদের কেবল সিনপসিসের মতো একটা কিছু থাকতো। ‘দ্য গ্রেট ডিক্টেটর’-এর সময়ই একটি শট বিভাজনসহ চিত্রনাট্য লেখা হয়েছিল, ওটিই প্রথম চিত্রনাট্য। তার আগে যা ছিল তা অনেকটা মুখে মুখে বলা চিত্রনাট্য আর কি। যখন চিত্রনাট্য লেখা হয়েছে তখনো চিত্রনাট্যকে যতটা পারা যায় সহজ রাখার চেষ্টা হতো।

লাইন-স্পেস-কম্পোজিশন-টেম্পো, এ-সবের মননশীল প্রয়োগ ভালো নিশ্চয়ই, কিন্তু অভিনয়ের সাথে তার সম্পর্ক অল্পই এবং তা নি®প্রাণ ও রীতিসর্বস্ব হয়ে উঠতে পারে। প্রকাশের সহজ ভঙ্গি সবসময়ই শ্রেষ্ঠ।

আমি নিজে কলা-কৌশলের চাতুরী অপছন্দ করি। আমার মতে এসব সস্তা ও স্থূল। জাঁকালো এফেক্ট ছবির গতি কমিয়ে দেয়, একঘেয়ে ও বিরক্তিকর হয়ে ওঠে এবং তাকেই শিল্পের নামে চালানো হয়। ফিল্ম টেকনিকের ওপর বিভিন্ন রচনাকে আমার স্রেফ টেক্সট্ বুক বলে মনে হয়।

আমার ক্যামেরা সাজানো হয় অভিনেতার গতিপ্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে। ক্যামেরা মাটি থেকে যখন অভিনেতার নাকের কাছে উঠে আসে তখন ক্যামেরাই অভিনয় করছে, অভিনেতা নয়। ক্যামেরার এই অকারণ প্রয়োগ অনুচিত।

সময়-সংক্ষেপ আজও ছবির এক প্রধান লক্ষ্য। আইজেনস্টাইন ও গ্রিফিথ তা জানতেন। তাই কুইক কাট ও ডিজলভ চলচ্চিত্রের দুটি প্রধান টেকনিক।

আমি বিস্মিত হই, যখন কিছু সমালোচক বলেন আমার ক্যামেরা টেকনিক সেকেলে, আমি নাকি সময়ের সঙ্গে তাল রেখে এগোই না। সময় ? কোন সময় ? আমার ক্যামেরা টেকনিক নিজস্বভাবনা যুক্তি ও প্রকরণ থেকে এসেছে। শিল্পে সময়ের সাথে চলাই যদি মূল কথা হতো, তবে ভ্যান গঘের তুলনায় রেমব্রান্ড সেকেলে হয়ে পড়তেন।

জাঁকজমকপূর্ণ ছবির ব্যাপারে একথা বলাই যথেষ্ট যে, এর চেয়ে সহজ আর কিছু হয় না, এতে কল্পনা বা ভাবনাপ্রতিভা লাগে নিতান্ত কম, দরকার শুধু পর্যাপ্ত অর্থ, অসংখ্য মানুষের ভিড়, সাজসজ্জা ও সেট-সিনারি, চিন্তা-ভাবনা বাদে আর সবকিছু। .... একজন নতুন অভিনেতাকে ব্যবহার করার সময় যদিও আমি জানি কী করতে হবে তবুও আমি তাকে বলবো, এই দৃশ্যটির ব্যাপারে আমি ক্লান্ত উদ্বিগ্ন ও অসহায় হয়ে পড়েছি ; কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখা যাবে তার কাছ থেকে আমি যা চাইছি তাই পাচ্ছি। কেননা, অভিনেতাকে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে মনস্তত্ত¡ই আসল।


কমেডি

প্রথম দিকে আমি যে সমস্ত ছবিতে অভিনয় করতাম, তার কোনো কোনোটাতে আমি আসার মতো করে কমেডির দুয়েকটা খোঁচা রেখে যেতাম। এটা আমায় করতে হতো কাটিং রুমের কসাইদের কথা খেয়াল রেখে। তারা কীভাবে ছবি কাটে সেটা আমার জানা ছিল বলে, আমি দৃশ্যে প্রবেশের বা দৃশ্য থেকে প্রস্থানের মুহূর্তে বিশেষ বিশেষ অঙ্গভঙ্গি বা অভিব্যক্তি সংশোধন করতাম। সেগুলো কেটে বাদ দেওয়া তখন তাদের পক্ষে মুশকিল হতো।


পরিচালনা

তখন পরিচালনার নিয়মকানুন ছিল জলের মতো সোজা-সরল। দৃশ্যে প্রবেশ ও প্রস্থানের জন্য আমাকে কেবল জানতে হতো, কোনটা আমার বামদিক আর কোনটা আমার ডানদিক। কেউ যদি একটা দৃশ্যে ডান দিক দিয়ে বেরোয়, তবে তার পরের দৃশ্যে তাকে বাম দিক দিয়ে ঢুকতে হবে। কেউ যদি ক্যামেরা অভিমুখে এগিয়ে এসে আউট অব সিন হয়, তবে পরের দৃশ্যে সে ইন করবে ক্যামেরার দিক পিছন ফিরে। এগুলো অবশ্য প্রাথমিক নিয়ম।

পরে অভিজ্ঞতা বাড়তে দেখলাম, ক্যামেরা কোথায় রাখতে হবে সেটা শুধু মনস্তাত্তি¡কভাবে নয়, দৃশ্যের নিয়ন্ত্রক হিসেবেও দরকারি। প্রকৃতপক্ষে, তা হলো চলচ্চিত্রশৈলীর ভিত্তিস্বরূপ। যদি ক্যামেরা একটু বেশি কাছে বা একটু বেশি দূরে থাকে, তাহলেই হয়ত কোনো একটা এফেক্টের কার্যকারিতা বাড়বে বা সেটা একদম মাঠে মারা যাবে। যেহেতু অভিনেতার চলাফেরা পরিমিতিটাও খুব জরুরি, ফলে ক্যামেরাকে এমনভাবে বসানো উচিত যাতে ফলপ্রদ কম্পোজিশন ও দৃশ্যে অভিনেতার সুষম প্রবেশ দুটোই সম্ভব হয়। দৃশ্যে প্রসারতা বা নমনীয়তা ক্যামেরার অবস্থানের মধ্য দিয়েই আসে। এমন কোনো নিয়ম নেই যে ক্লোজআপ লংশটের চেয়ে বেশি ফলপ্রদ হবেই। ক্লোজআপ অনেকটা অনুভূতির ব্যাপার, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে লংশটেই বক্তব্যের ওপর বেশি জোর পড়ে।


জীবনবোধ

ছবির ব্যবসায়ীদের ধারণা, ছবি হবে হয় স্ন্যাপস্টিক নয় ড্রামা। এই দুয়ের কোনো মিশ্রণ সম্ভব নয়, কেননা তাহলে গল্পের একটা না একটা উপাদান মার খাবে। কিন্তু স্ন্যাপস্টিক থেকে সেন্টিমেন্টে সংক্রমণ হলো দৃশ্য পর্যায়গুলোকে সাজানোর ক্ষেত্রে শিল্পীর অনুভূতি ও স্বাধীনতার ব্যাপার অর্থাৎ আঙ্গিকের প্রসঙ্গ। শিল্পী যে জগতের কথা কল্পনা করছেন, সেই জগতের প্রতি যদি বিশ্বস্ত থাকেন এবং তার কল্পনা যদি সুচিন্তিত হয় তাহলে তার সৃষ্টিকর্ম বিশ্বাসযোগ্য হবেই। তা উপাদানের মিশ্রণ যাই হয়ে থাক না কেন। শিল্পীর জীবনবোধ এবং প্রত্যয় যদি দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে থাকে এবং তাকে সাধারণ্যে ব্যক্ত করার মতো ক্ষমতার যদি তিনি অধিকারী হন তবে মানুষ তাকে নেবে না, এ হয় না।


অভিনয়

অভিয়ের সামগ্রিক আবেদন হৃদয়ের দিকে, বুদ্ধিদীপ্তির স্থান সেখানে গৌণ।


অভিনেত্রী

একজন সুন্দরী অভিনেত্রীর চোখ শেক্সপিয়রের কথার চাইতে অনেক বেশি অর্থবহ।

শিল্পী

শিল্পী শব্দটা কখনো আমার মাথায় ঢোকেনি। মানবিক অভিজ্ঞতাকে শুদ্ধতর করে প্রকাশ করাই বিদুষকদের কাজ।


মুখ দেখাক

ভাঁড়ের মতো

একটু পাউডার দাও [মেকআপম্যানের কাছ থেকে একগাদা পাউডার চেয়ে নিয়ে নিজেই মুখের ওপর লাগিয়ে নিয়ে], এবার ঠিক দেখাচ্ছে। সবসময়ই চাই মুখ দেখাক ভাঁড়ের মতো।


ভবঘুরে

উজ্জ্বল জগতের স্বপ্নবিলাস। প্রত্যেকটি মুহূর্ত নতুন রোমান্সের, নতুন অ্যাডভেঞ্চারের উন্মাদনা বয়ে আনে। বিশ্বাস করি আমি বিজ্ঞানী, আমি কবি, আমি সংগীতজ্ঞ, আমি একজন ডিউকের চাইতেই বা কম কি ? চাই কি পোলো খেলাতেও আমি কম দক্ষ নই। বাস্তবে হয়ত সিগারেটের ছুঁড়ে ফেলা টুকরোই কুড়িয়ে নিই, কিংবা কোনো ছেলের হাতের মোওয়া ঠকিয়েও নিতে পারি। আবার তেমন হলে কোনো নিতম্ববতীর পশ্চাদ্দেশে একটি পদাঘাত করতেও দ্বিধা করি না, অবশ্য সেটা করি যদি খুব বেশি চটে যাই। সুতরাং এই ভবঘুরেটি ছাড়া ওই পরিত্যক্ত শিল্পটির ভার আর কে নেবে ?


ভবঘুরের পোশাক

ওই পোশাকেই আমার পরিচয়। ওই পোশাক আমাকে একটি সাধারণ মানুষ সম্পর্কে, প্রায় প্রতিটি মানুষ সম্পর্কে, আমার নিজের প্রতি, আমার ধারণা প্রকাশে সাহায্য করে।


সাফল্য

সাফল্য আমাকে সকলের প্রিয়পাত্র করে তুলেছিল এবং আমি হয়ে উঠলাম স্টুডিওর প্রত্যেকের পরিচিত বন্ধু। এক্সট্রাদের কাছে, সহকারীদের কাছে, মেকআপম্যানদের কাছে, ক্যামেরাম্যানদের কাছে : সকলের কাছেই আমি হয়ে উঠলাম ‘চার্লি’। যদিও আমি নিজে তেমন ভাই-ভাই-ভাব-ওয়ালা নই, তবুও এই ঘটনায় আমি খুশি, কেননা এই পরিচিতির অর্থ ছিল এই যে, আমি সাফল্য অর্জন করেছি।


সৌন্দর্য

সৌন্দর্য হলো মৃত্যু ও রমণীয়তার একটি সর্বব্যাপক অস্তিত্ব। সমস্ত বস্তুতে এবং প্রকৃতিতে কবি যে একটা সুহাসফুল্ল বিষণ্নতা, একটি অতীন্দ্রিয় সংযোগ অনুভব করেন সে-রকম। অনেকটা যেন ডাস্টবিনের ওপর ঋজু সূর্যরশ্মিপাতের মতো, কিংবা নর্দমার একটি গোলাপ ফুলের মতো। এল গ্রেকোর সৌন্দর্যদর্শন যেমন ক্রুশবিদ্ধ যীশুর মধ্যে।


উপলব্ধি

‘লাইম লাইট’ ছবির চূড়ান্ত পর্যায়ে কমিডিয়ান ক্যানভারো’র উপলব্ধি আমার উপলব্ধি : জীবন গতিশলী এবং তা-ই প্রগতি।


দ্য গোল্ড রাশ

‘দ্য গোল্ড রাশ’ ছবির আইডিয়া আমার মাথায় আসে চিলকুট গিরিপথে যাওয়ার সময় যখন অনেক বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হই।

হিটলার

ও আমার গোঁফ চুরি করেছে। ওই গোঁফ আমি আবিষ্কার করেছিলাম। অবশ্য এই গোঁফসহ ওর মুখ আমার মুখের বাজে নকল- পুঁচকে ঠোঁট ও এলোমেলো চুল নিয়ে ওই মুখে ফুটে উঠেছে অশ্লীল ভাঁড়ামো। হিটলারকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা আমি ভাবিওনি। কিন্তু যখন আইনস্টাইন ও টমাস মানকে জার্মানি ছেড়ে চলে আসতে হলো, তখন হিটলারের ওই মুখ আর কমিক না থেকে হয়ে উঠল ভয়ঙ্কর।

যৌনতা

সেক্স আমাকে কোনো নতুন দিক উন্মোচনে সহায়তা করেনি। ছবিতেও কোনো Blow by blow description of a sexbout আমি চাইনি। তবে দেখেছি টেনিস-মাঠে মহিলার ক্ষিপ্র, লাবণ্যময়, সংযত ও সুস্থ, যৌন আবেদনময় সঞ্চারণ।


অপরাধ

ক্রাইম যখন অস্বাভাবিক করে দেখানো হয়, বিকট করে দেখানো হয় তখন তা অবাস্তব হয়ে ওঠে। এটা জীবনের সত্য, যেকোনো কিছুকেই যখন অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয় তখন তা হাস্যকর, অবাস্তব হয়ে ওঠে। মানুষের সুস্থতা এইভাবে রক্ষা পায়।


প্রিয় গানের কলি

‘ফর ওল্ড টাইম সেক, সে, ইউ উইল ফরগেট অ্যান্ড ফরগিভ।’


প্রিয় জন্তু

হাতিকে আমি অপছন্দ করি। এত শক্তিশালী তবু এত পোষমানা। আমার ভালো লাগে নেকড়েকে।


আলবার্ট আইনস্টাইন

একবার আমি এবং তিনি [আইনস্টাইন] দু’জনে জনসমাগমে একইসঙ্গে বেশ কয়েকজন পুরুষ ও মহিলাকে ‘অটোগ্রাফ’ দিয়ে ফেরার পথে আইনস্টাইন আমায় বলেছিলেন : “মিস্টার চ্যাপলিন আপনার কাজ সব মানুষই বুঝতে পারে আর আমি যে কাজ করি তা কেউ-ই বুঝতে পারে না অথচ অপরিচিত লোকেরা আমাদের পছন্দ করে ; ব্যাপারটা খুব মজার না !”


একান্ত অনুভূতি

খুব জোরে বৃষ্টি হলে আমার দারুণ ভালো লাগে। কেননা, প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের মধ্যদিয়ে হেঁটে গেলে আমার কান্নার শব্দ আর চোখের জল কেউ-ই শুনতে বা দেখতে পায় না। 


সংক্ষিপ্ত পরিচয়

জন্ম ও মৃত্যু : ১৮৮৯-১৯৭৮, গ্রেট ব্রিটেন। প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতা। কমেডির সবসেরা স্রষ্টা। তার পরিচালিত অধিকাংশ ছবিই আমেরিকায় নির্মিত। উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র : দ্য কিড [১৯২০], দ্য গোল্ডরাশ [১৯২৫], সিটি লাইটস [১৯৩১], মডার্ন টাইমস [১৯৩৬], দ্য গ্রেট ডিক্টেটর [১৯৪০], মঁসিয়ে ভের্দু [১৯৪৭], লাইমলইট [১৯৫২], এ রিং ইন নিউ ইয়র্ক [১৯৫৭], এ কাউন্টেস ফ্রম হংকং [১৯৬৬]। রচিত গ্রন্থ : মাই অটোবয়োগ্রাফি, মাই লাইফ ইন পিক্চারস্।