ফোক এক্সপ্রেস ঐশী

30 May 2024, 01:40 PM সারেগারে শেয়ার:
ফোক এক্সপ্রেস ঐশী

সংগীতশিল্পী ঐশীকে নিয়ে আনন্দভুবনের ২৩ বর্ষ ২১ সংখ্যা [৩১ মার্চ ২০১৯] ও ২৬ বর্ষ ১৭ সংখ্যা [১৬ জানুয়ারি ২০২২] প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। শিরোনাম ছিল যথাক্রমে : ‘শিল্পী যখন চিকিৎসক’। ‘শিল্পী ঐশী ডাক্তার ঐশী’।


তার সম্পর্কে লেখা হয়েছে : সুরেলা কণ্ঠ দিয়ে মানুষের হৃদয়ে অনেক আগেই আসন করে রেখেছেন ফাতিমা তুয যাহরা ঐশী। সবধরনের গানেই রয়েছে তার বিচরণ। এবার মানুষের মন জয় করতে চান সেবা দিয়ে। মানুষকে চিকিৎসা দেওয়ার লক্ষ্যেই ঐশী বেছে নেন মেডিকেলের পড়াশোনা। বিশেষ করে অসহায় মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে মেডিকেলে ভর্তি হন মেধাবী এই কণ্ঠশিল্পী। শুরুর দিকে যদিও অনেকে উপদেশ দিয়েছিলেন দুটো একসঙ্গে হয় না। ঐশী এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন এবং সফলও হয়েছেন। সফলতার সঙ্গে এমএইচ শমরিতা হসপিটাল অ্যান্ড মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন তিনি। পড়াশোনার পরের ধাপগুলো পেরিয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক হতে চান এই শিল্পী। মেডিকেলে পড়াশোনা প্রসঙ্গে ঐশী বলেন, ‘গানের পাশাপাশি মেডিকেলে পড়া সত্যিই খুব কঠিন কাজ। শুরুতে অনেকে নিরুৎসাহিত করেছিলেন, পড়াশোনা আর গান একসঙ্গে হবে না। নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, কাজটা আমি করে দেখাব। যদিও দুটো কাজ একসঙ্গে করা ভীষণ কঠিন ছিল। সামনে যে বিশাল পথ বাকি, সেখানেও গান ও ডাক্তারি দুটোই একসঙ্গে চালিয়ে যেতে চাই’...

লেখা : শেখ সেলিম


চলতি সময়ে

ঐশী নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘ঐশী এক্সপ্রেস’ ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের চ্যানেলের জন্য বেশ কিছু নতুন গান করেছেন। নিজের চ্যানেলে প্রকাশ করেছেন ‘ভালোবাসা এমনই রোগ’। গানটির সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন বাপ্পা মজুমদার, লিখেছেন সাহান কবন্ধ। এছাড়া আহমেদ হুমায়ুনের সুর ও সোমেশ্বর অলির লেখা ঐশীর আরেকটি গান প্রকাশিত হয়েছে, সেটি ‘ঘোমটা পরা গান’।

২০০০ খ্রিষ্টাব্দে রংপুর শিশু একাডেমিতে গান শিখতে শুরু করেন ঐশী। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে নোয়াখালিতে মুহাম্মদ শরীফ ও পরে হাফিজ উদ্দীন বাহারের কাছে উচ্চাঙ্গ ও নজরুলসংগীতে তালিম নেন তিনি। ঢাকায় আসার পর ‘হৃদয় মিক্স থ্রি’ অ্যালবামের জন্য শিল্পী বাছাই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে একটি মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিযোগিতায় নানা ধাপ পেরিয়ে সেরা পাঁচে জায়গা করে নেন ঐশী। এই আয়োজনের সেরা প্রতিযোগীদের নিয়ে তৈরি এক অ্যালবামে ‘দখিন হাওয়া’ শিরোনামে একটি গানে কণ্ঠ দেন তিনি।

এই পর্যন্ত ৩০-৩৫টি ছবিতে গান গেয়েছেন ঐশী। সিনেমার গান গাইতে তার ভালো লাগে। চারিদিকে যখন রক ব্যান্ড ও উন্নত কালচারে ছয়লাপ, তখন দেশের সংগীতাঙ্গনে লোক গান গেয়ে যারা সাড়া জাগিয়েছেন তাদের মধ্যে ঐশী অন্যতম। তার কণ্ঠে কোটি কোটি মানুষের প্রাণের লোকসংগীত যেন যুগোপযোগী হয়ে এসেছে। ঐশী সাবলীলভাবে লোক গানগুলো আধুনিক রক ফিউশনের মাধ্যমে তার সুরেলা কণ্ঠ দিয়ে জয় করতে সক্ষম হয়েছে দেশ-বিদেশের কোটি কোটি শ্রোতাদের হৃদয়। কণ্ঠশিল্পী হিসেবে সব ধরনের গানই তার পছন্দের তালিকায়। তবে লোক গান তিনি বেশি গান। লোক গান গেয়ে তিনি বেশি তৃপ্তি পান।

সংগীতজগতে ঐশী পরিচিতি লাভ করেন ‘হৃদয় মিক্সড’ অ্যালবামের মাধ্যমে। এরপর ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান লেজার ভিশনের মাধ্যমে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে ঐশীর প্রথম একক অ্যালবাম ‘ঐশী এক্সপ্রেস’। এরপর ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে আরেক জনপ্রিয় শিল্পী বেলাল খানের সুরে ও জেকের সংগীত আয়োজনে প্রকাশিত হয় ঐশীর ২য় একক অ্যালবাম ‘মায়া’। একই বছর ঈদুল আজহায় প্রকাশিত হয় প্রদীপ সাহার কথায় নাজির মাহমুদ ও অভি আকাশের সুরে ৩য় অ্যালবাম ‘হাওয়া’। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি চ্যানেল আই-সিম্ফনি মিউজিক অ্যাওয়ার্ড-এর পপুলার চয়েসের সেরা হয়েছিলেন। 

লেখা : শহিদুল ইসলাম এমেল